তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানো এবং এ খাত থেকে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য কর কাঠামোয় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব এসেছে এক সেমিনারে।
শনিবার আহছানিয়া মিশন ঢাকা ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ওই সেমিনারের একাধিক বক্তার ভাষ্য, বর্তমানে সিগারেটসহ অন্যান্য তামাকজাত পণ্যে শতকরা হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। এ পদ্ধতির পরিবর্তন করে সিগারেটে শলাকাপ্রতি সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করতে হবে। এতে রাজস্ব সংগ্রহ যেমন বাড়বে, তেমনি সিগারেটের ব্যবহারকারী কমবে।
রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শারমীন রিনভী।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী।
তিনি বলেন, ‘সিগারেটের বর্তমান শুল্ক কাঠামো বেশ জটিল। এতে শুল্কহার বেশি হলেও সিগারেটের মূল্যে তার বিশেষ প্রভাব পড়ে না।’
নাদভী সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন। তিনি প্রতি ১০ শলাকার নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা, মধ্যস্তরের সিগারেটের প্রতি প্যাকেট ৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা, উচ্চস্তরের সিগারেটের প্রতি প্যাকেটের দাম ১০২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরের প্রতি প্যাকেটের দাম ১৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।
আবদুল্লাহ নাদভী বলেন, ‘এ প্রস্তাব কার্যকর করা হলে সরকারের ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় হবে। পাশাপাশি ধূমপায়ী কমবে ১৩ লাখ এবং ৯ লাখ তরুণ ধূমপান করতে নিরুৎসাহিত হবে।’
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের উপপরিচালক মোখলেছুর রহমান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার ঘোষণা করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্যে কর বাড়ানোর বিকল্প নেই।’
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া বলেন, ‘উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তামাক নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এতে দারিদ্র্য বিমোচন যেমন হবে, তেমনি তামাকজনিত রোগের পেছনে সরকারের ব্যয় কমে আসবে।’
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক নিয়ে সরকার উভয় সংকট আছে। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, আবার রাজস্বের জন্য তামাক খাতে নির্ভরশীলতা রয়েছে, তবে ধূমপান কমাতে হলে সিগারেটের দাম বাড়াতে হবে।’