বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ট্যাক্স রিটার্ন দেয় মাত্র ১৫ শতাংশ কোম্পানি

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১২:৩৯

যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর বা রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টকে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা এখন প্রায় ২ লাখ। সব প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আছে।

দেশে যেসব কোম্পানি ব্যবসা করছে, তাদের মধ্যে খুব কমই কর পরিশোধ করে এবং কর রিটার্ন জমা দেয়। অথচ আইন অনুযায়ী বছর শেষে রিটার্ন জমা দেয়া সব কোম্পানির জন্য বাধ্যতামূলক।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর বা রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টকে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা এখন প্রায় ২ লাখ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক জরিপে দেখা যায়, বছরে আয়কর রিটার্ন জমা দেয় এমন কোম্পানির সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। অর্থাৎ নিবন্ধনের মাত্র ১৫ শতাংশ কোম্পানি রিটার্ন দেয়।

এ খাত থেকে কর আহরণ বাড়াতে সব প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

আয়কর আইন অনুযায়ী, করদাতা শনাক্তকরণ নম্বার বা টিআইএন থাকলেই রিটার্ন দিতে হবে। কিন্ত অনেক প্রতিষ্ঠানের টিআইএন থাকার পরও রিটার্ন দিচ্ছে না।

জয়েন্ট স্টক থেকে নিবন্ধন নেয়ার পর কোন কোন কোম্পানির টিআইএন আছে, আর কোন কোন কোম্পানির নেই, তা নিয়ে জরিপ করেছে এনবিআর। ২০২০ সালে গঠিত সাত সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি টাস্কফোর্স এ জরিপ করে।

জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৯০ হাজার কোম্পানির টিআইএন নেই। এসব কোম্পানি জয়েন্ট স্টক থেকে নিবন্ধন নিলেও রাজস্ব বোর্ড থেকে টিআইএন নেয়নি।

টিআইএনবিহীন ওই সব প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠিয়ে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এত দিন কোম্পানিগুলোর বার্ষিক রিটার্ন ও কর দেয়ার কথা থাকলেও তারা তা দেয়নি।

জানা যায়, এসব কোম্পানির অর্ধেকের বেশি রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে জয়েন্ট স্টক থেকে নিবন্ধন নিয়েছে।

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালে প্রায় ৭৭ হাজার কোম্পানির টিআইএন ছিল। যাদের ছিল না, তাদের বাধ্য করা হয়। ফলে এখন টিআইএনধারী কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেখা গেছে অনেক প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট স্টক থেকে নিবন্ধন নিয়েছে অথচ রাজস্ব বোর্ড থেকে টিআইএন নেয়নি। ওই সব প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে বের করে ক্রমান্বয়ে করের আওতায় আনা হচ্ছে।’

ওই কর্মকর্তা জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে ১ লাখ কোম্পানিকে টিআইএনের আওতায় নিয়ে আসা তাদের লক্ষ্য।

ব্যক্তিশ্রেণির পাশাপাশি কোম্পানিরও রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। কোম্পানি প্রতি বছর ১৫ জানুয়ারির মধ্যে বার্ষিক রিটার্ন জমা দিয়ে থাকে।

এনবিআরের টাস্কফোর্সের জরিপে বলা হয়, বহু কোম্পানি বছরের পর বছর রিটার্ন দেয় না, এমনকি তাদের টিআইএন পর্যন্ত নেই। এ ছাড়া একই ঠিকানা ব্যবহার করে জয়েন্ট স্টক থেকে একাধিক কোম্পানি নিবন্ধন নিয়েছে। বাস্তবে ওই ঠিকানায় কোম্পানিগুলো নেই।

এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, যেসব কোম্পানি টিআইএন নিয়েও রিটার্ন দিচ্ছে না, তাদের তদারকিতে আনতে হবে। কয়েকটি কোম্পানিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে বাকিরা এমনিতেই রিটার্ন দেবে।

আইনে করদাতা দুই ধরনের। ব্যক্তিশ্রেণি করদাতা এবং কোম্পানি করদাতা। করপোরেট করকেই বলা হয় কোম্পানি কর।

সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে ব্যক্তিশ্রেণির চেয়ে কোম্পানি করদাতা কম হলেও করপোরেট কর থেকে আদায় হয় বেশি।

মোট করদাতার মাত্র ২ শতাংশ কোম্পানি করদাতা। এদের থেকে মোট আয়কর আদায়ের ৬৫ শতাংশ আহরণ হয়।

ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়সীমা থাকলেও কোম্পানির ক্ষেত্রে করমুক্ত সীমা নেই। কোম্পানি বার্ষিক মুনাফার ওপর নির্ধারিত হারে এ কর আদায় করা হয়।

আইনে লোকসানি কোম্পানিগুলোকেও কর দিতে হয়। লাভ-লোকসান নির্বিশেষে বার্ষিক লেনদেনের ওপর প্রযোজ্য হারে এই কর আদায় করা হয়।

পাঁচটি স্তরে লোকসানি কোম্পানিগুলোর ওপর কর আদায় করা হয়। উৎপাদনমুখী বা ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে ০.৬০ শতাংশ। অর্থাৎ উৎপাদনমুখী কোনো লোকসানি প্রতিষ্ঠানের বছরে ১০০ টাকা লেনদেন বা টার্নওভার হলে সরকারি কোষাগারে কর জমা দিতে হবে ৬০ পয়সা।

এ বিভাগের আরো খবর