পণ্য আমদানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টার অভিযোগে রাজশাহীর যমুনা এডিবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে দুই কোটি দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ (এআইআর) শাখার সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম সোমবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর ভারত থেকে দুই চালানে ৪৩ হাজার ৬২৫ কেজি পণ্য আমদানির ঘোষণা দেয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা এডিবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ঘোষণা অনুযায়ী সল স্ট্রেট নামের একটি জাহাজে দুই চালানের বিপরীতে তিন কনটেইনার পণ্য আসে চট্টগ্রাম বন্দরে।
প্রতিষ্ঠানটির মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের রূপসা সিঅ্যান্ডএফ লিমিটেড আমদানিকারক যমুনা অয়েলের পক্ষে কাস্টম হাউসে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে।
প্রতিষ্ঠানটি ‘১৫৯১৫১৯ সি’ নম্বরের বিল অফ এন্ট্রির বিপরীতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২৪ হাজার ৭৮ কেজি পণ্য খালাসের জন্য ৭৮ হাজার ৫৪ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে। একই সঙ্গে ‘১৫৯১৫৫৫ সি’ নম্বরের বিপরীতে ১৯ হাজার ৫৪৭ কেজি পণ্য খালাসের জন্য ৪৩ হাজার ৯৬৯ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টম পণ্য খালাসের সময় চালানটি আটক করে। পরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার কর্মকর্তারা ওই চালান খালাসের দায়িত্বে থাকা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি মোমিদুল আরেফিনের উপস্থিতিতে চালানের শতভাগ পরীক্ষা করেন।
এআইআর শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়, কায়িক পরীক্ষায় আগের ঘোষণা করা সমপরিমাণ পণ্য পাওয়া যায়নি। প্রথম চালানের সব পণ্য ঘোষণা-বহির্ভূতভাবে আমদানি করা হয়েছে।
একই অবস্থা দ্বিতীয় চালানেও। ওই চালানে এক থেকে ১৮ নম্বর পর্যন্ত চালান ঘোষণা-বহির্ভূতভাবে আমদানি করা হয়। এ ঘটনায় কাস্টমস আইনের আওতায় অপরাধ হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্যের চালান খালাসের জন্য উচ্চ আদালতে চট্টগ্রাম কাস্টমসের বিরুদ্ধে রিট করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় কাস্টমসের পক্ষে আসে। ফলে আমদানিকারক জরিমানাসহ সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণার আশ্রয় নিয়ে দুই চালানে ঘোষণা-বহির্ভূত ৬৩টি পণ্য নিয়ে আসে। এসব পণ্য ক্রিটিক্যাল লোডিং ও বৃহদাকার কাঠের বাক্সে আবদ্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আকারের পণ্যও রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমদানিকারক এই চালানে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে চেয়েছে। তবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার কর্মকর্তাদের তৎপরতায় চালানটি আটক করা হয়েছে। পরে যমুনা অয়েলকে দুই কোটি দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে পণ্যগুলো ছাড়াতে হবে।’