বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশে ভেড়ানো যাবে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ

  •    
  • ৮ আগস্ট, ২০২১ ১৪:৪২

কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের আগে প্রস্তুত হয়েছে আড়াই শ মিটার প্রস্থ, ১৮ মিটার গভীরতা ও ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। মূলত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মাণসামগ্রী আনতে এই চ্যানেল প্রস্তুত করা হয়।

বাংলাদেশে এতদিন সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশ) গভীরতার জাহাজ ভেড়ানোর সুবিধা ছিল। তাও সেটিও জোয়ারের সময়। এখন সেই সুবিধা ১০ মিটারে উন্নীত হয়েছে।

এখন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন মাতারবাড়ী জেটিতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে জোয়ারের সময় সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যায়। মোংলা ও পায়রা বন্দরে ভেড়ানো যায় সাত থেকে সাড়ে সাত মিটার ড্রাফটের জাহাজ।

কক্সবাজারের মাতারবাড়ীর জেটিতে এখন যেকোনো সময় ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যাবে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজ শেষ হলে সেটি সাড়ে ১৮ মিটারে উন্নীত হবে।

তবে এখনই ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানোর সুফল পাবেন না দেশের আমদানি–রপ্তানিকারকেরা। কারণ, মাতারবাড়ীতে এখন শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য জেটিগুলো ব্যবহার হচ্ছে।

বন্দর ব্যবহারকারী ফোরামের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘মাতারবাড়ীর সুবিধা না পেলেও এটা নিঃসন্দেহে বড় সুখবর। কারণ ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানোর সক্ষমতা একটা মাইলফলক। ভবিষ্যতে এই স্থান যে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের আঞ্চলিক কেন্দ্রবিন্দু হবে, তাতে সন্দেহ নেই।’

মাতারবাড়ী চ্যানেল

২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক জাহাজ প্রবেশের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে মাতারবাড়ী চ্যানেল।

কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের আগে প্রস্তুত হয়েছে আড়াই শ মিটার প্রস্থ, ১৮ মিটার গভীরতা ও ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। মূলত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মাণসামগ্রী আনতে এই চ্যানেল প্রস্তুত করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এ চ্যানেল বা প্রবেশপথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে প্রবেশ করছে। গভীর সাগর থেকে জাহাজগুলো চ্যানেল দিয়ে জেটিতে প্রবেশের জন্য বসানো হয়েছে পথনির্দেশক বয়া।

নির্মাণে আয়-ব্যয়

মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা আর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এর সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে।

আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে জাহাজ ভেড়ানোর আশা করছেন বন্দর কর্মকর্তারা।

এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্রবন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বড় জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা সহজ হবে।

প্রাথমিকভাবে মাতারবাড়ীতে একটি কনটেইনার টার্মিনাল ও একটি বহুমুখী পণ্য ওঠা-নামার টার্মিনাল হবে। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন বাড়ানোর সঙ্গে এই বন্দরের কার্যক্রমও ধারাবাহিকভাবে বাড়বে।

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এ সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘নিপ্পন কোয়ের’ সঙ্গে চুক্তি সই হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে মাতারবাড়ীর এই প্রকল্প এলাকা। মাতারবাড়ী চ্যানেল দিয়ে আট থেকে ১০ হাজার কনটেইনার পরিবহনের উপযোগী জাহাজ ভেড়ানো যাবে বন্দরে। ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজও সেখানে ভিড়বে।

এ বিভাগের আরো খবর