সরকারঘোষিত দ্বিতীয় দফা শাটডাউনের প্রথম লেনদেন হচ্ছে পুঁজিবাজারে। এর আগে প্রথমবার শাটডাউনে পুঁজিবাজারের লেনদেন ব্যাংকের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে করা হয়েছিল বেলা ১টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফায় ব্যাংকের কার্যক্রম আগের তুলনায় এক ঘণ্টা বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের লেনদনেও এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
এর ফলে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফা শাটডাউনে পুঁজিবাজারে লেনদেন হচ্ছে এক ঘণ্টা বেশি।
এদিন লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টায় গত দুই কার্যদিবস ঝিমিয়ে থাকা বিমা খাতকে আবারও চাঙা হতে দেখা গেছে। তবে ঢালাওভাবে শেয়ারদর কমেছে ব্যাংকের শেয়ারের।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফায় শাটডাউনের সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর ফলে ৮ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সবকিছু চলবে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী।
গত মঙ্গলবার শাটডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের লেনদেন সময়সীমাও পরিবর্তন করে এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সরকারঘোষিত শাটডাউনের প্রথম দফায় বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেন সময় নির্ধারণ করে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম আগেই বলেছিলেন, ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারের লেনদেন চলবে। ফলে সে সময় ব্যাংকের লেনদেনের সঙ্গে সমন্বয় করে পুঁজিবাজারের লেনদনে সময় নির্ধারণ করা হয় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। বুধবার পর্যন্ত এই নিয়মেই লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে।
পরবর্তী সময়ে সরকার শাটডাউনের মেয়াদ বাড়ানোয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে লেনদেনের সময়সীমা পরিবর্তন করে ১০টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত করা হয়। ফলে সে অনুযায়ী পুঁজিবাজারের লেনদেন সময়সীমাও পরিবর্তন করে ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত করা হয়। এ কারণে বৃহস্পতিবার আগের দিনের তুলনায় এক ঘণ্টা বেশি, অর্থাৎ ২টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে।
লেনদেনের শুরুতেই সূচকের উত্থান
দিনের লেনদেনের শুরুতে সূচক আগের দিনের ৬ হাজার ১৭৭ পয়েন্ট থেকে বেড়ে তিন মিনিটে পৌঁছায় ৬ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। সেখান থেকে হঠাৎ শেয়ার বিক্রির চাপে মাত্র ৫ মিনিটে সূচক নেমে আসে ৬ হাজার ১৭০ পয়েন্টে।
তবে লেনদেনের এক ঘণ্টারও কম সময়ে আবার ঘুরে দাঁড়ায় সূচক। লেনদেনের এক ঘণ্টায় সূচকের অবস্থান দেখা গেছে ৬ হাজার ২০১ পয়েন্টে।
এ সময়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯২টির, কমেছে ১৩৩টির। দর পাল্টায়নি ৪৪টির। লেনদেন হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা।
এ সময়ে লেনদেনে টাকার অঙ্কে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, যার মোট ১৭ লাখের বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৫ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, যার ২২ লাখ ৫৬ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৪ কোটি টাকায়। এ ছাড়া এক্টিবফাইন, ফুয়াং ফুড, সোনালী পেপার ছিল এই তালিকায়।
লেনদেনে এ সময়ে বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারের উত্থান দেখা গেছে। তবে ব্যাংক, প্রকৌশল, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বাড়ার চেয়ে কমেছে বেশি।
ব্যাংক খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র দুটির শেয়ারের দর বাড়ছে। দর পাল্টায়নি ১১টির। বাকি ১৮টি ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে।
প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৩টির। দর পাল্টায়নি পাঁচটির। বাকি ২৪টির দর বেড়েছে।
নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে পাঁচটির; দর পাল্টায়নি ছয়টির। বাকি ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
বিমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে এ সময়ে সাতটির শেয়ারদর কমেছে; দর পাল্টায়নি দুটির। বাকি ৪২টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
বস্ত্র খাতের লেনদেন হওয়া ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির। দর পাল্টায়নি ১১টির। বাকি ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।