বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নগদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় বিকাশের সংশ্লিষ্টতা

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২১ ২২:৫৬

১৮ ফেব্রুয়ারি নগদের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করে অভিযোগ করা হয়, সারা দেশে নগদের গুজব ছড়িয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। পিবিআই আদালতে জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, এর পেছনে বিকাশের ১৬ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।

মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) কোম্পানি নগদের বিরুদ্ধে প্রচারণার পেছনে এটির প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বিকাশের যোগসাজশ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশের এই সংস্থাটি।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নগদের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স) তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বিকাশের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়, নগদের সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি অপরাধী চক্র সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক ক্ষতি ও জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে লিফলেট মুদ্রণ ও বিতরণ করছে।

সারা দেশে নগদ লিমিটেডের প্রায় ৩ লাখ আউটলেটসহ বিভিন্ন বাজার ও জনবহুল স্থানে বিভিন্ন সময়ে ‘একটু ভেবে দেখবেন কী’ শিরোনামে একটি লিফলেট ছড়ানো হয়। এর মাধ্যমে নগদের আর্থিক ও সামাজিক সুনামের ক্ষতিসাধন করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নগদের ৫১ শতাংশ শেয়ার ডাক বিভাগের। বাকি ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের।

এজাহারে আরও বলা হয়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে অপপ্রচার, প্রতারণা ও মানহানিকর গুজব রটিয়ে কোম্পানির সুনাম ও আর্থিক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে।

মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেয় আদালত। ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলা তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্ত শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় সংস্থাটি।

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মেছবা উদ্দিন বলেন, ‘নগদের অভিযোগ সত্য কি না যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় আমাদের। আমরা রিপোর্ট করে দিয়েছি যে, ঘটনার সত্যতা আছে। নগদের অভিযোগ সঠিক।’

পিবাআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বিকাশের ১৬ কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারা হলেন এ কে এম নাজমুল করিম (ক্লাস্টার বিজনেস হেড, সেন্ট্রাল নর্থ ক্লাস্টার, বিকাশ লিমিটেড), মশিউর রহমান (নারায়ণগঞ্জ রিজিওনাল ম্যানেজার, বিকাশ লিমিটেড), আব্দুহ সুফী (রিজিওনাল ম্যানেজার, বিকাশ লিমিটেড), আলামিন হোসেন (রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর, বিকাশ লিমিটেড), আবু হেনা গোলাম কিবরিয়া (এরিয়া ম্যানেজার, বিকাশ লিমিটেড), গোলাম সারোয়ার (ডি এমপি ঢাকা, টেরিটরি অফিসার, বিকাশ লিমিটেড), রফিকুল ইসলাম (ম্যানেজার, ট্রিলজি ডিস্ট্রিবিউশন লি., বিকাশ লিমিটেড), নাহিদ হাসান (সুপারভাইজার, ট্রিলজি ডিষ্ট্রিবিউশন লি., বিকাশ লিমিটেড), নুমানুল হক (টেরিটরি ম্যানেজার, বিকাশ লিমিটেড), মির্জা শিহাব উদ্দিন (জেনারেল ম্যানেজার, জারাফ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং লি, বিকাশ লিমিটেড), রামানন্দ চন্দ্র সরকার (ডিস্ট্রিবিউটর অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং মানেজার, জারাফ সেলস এন্ড মার্কেটিং), মাজহারুল ইসলাম শাওন (ডিএসও, জারাফ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, বিকাশ লিমিটেড), আরিফ (ডিএসও, ট্রিলজি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড, বিকাশ লিমিটেড), তরিকুল ইসলাম (ডিএসও, ট্রিলজি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড, বিকাশ লিমিটেড), শেখ ফরিদ (ডিএসও, এ আই ডি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড, বিকাশ লিমিটেড) ও নাঈম (ডিএসও, মাজিম অ্যাগ্রো লিমিটেড।)

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তদন্তকালে সাক্ষ্যপ্রমাণে জানা যায়, বিকাশ লিমিটেডের ক্লাস্টার বিজনেস হেড নাজমুল করিম এবং রিজিওনাল ম্যানেজার আব্দুহু সুফী তাদের মোবাইল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘সেন্ট্রাল নর্থ ক্লাস্টার’ থেকে লিফলেট সরবরাহ করার জন্য অন্যদের কাছে পাঠিয়েছিলেন।

লিফলেট শেয়ার, প্রিন্ট ও সরবরাহ শেষে লিফলেটটি তারা সকলে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে মুছে ফেলেন। তাদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, চাকুরির স্বার্থে, বিকাশ কোম্পানিকে আর্থিকভাবে লাভবান করতে ও নগদকে হেয় প্রতিপন্ন ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তারা এ কাজ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্যে রাজি হয়নি বিকাশ কর্মকর্তারা।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই বিষয়টা এখন তদন্তাধীন। পিবিআই তাদের প্রতিবেদন কোর্টে জমা দিয়েছে। একটা হেয়ারিং হবে। এই প্রতিবেদন তারা গ্রহণ করবে কি করবেন না, এটা কি পরবর্তীতে মামলা চলবে কি চলবে না, এটার অনেকগুলো প্রক্রিয়া রয়েছে।

‘এই তদন্তাধীন অবস্থায় মন্তব্য করা সমীচীন না। তদন্তে তারা যা পেয়েছে, সেটা তো কোর্টে প্রমাণ করতে হবে, সে যে পক্ষই হোক। এটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া। তাই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

এ বিভাগের আরো খবর