করোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নতুন অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে জুলাইয়ের শেষদিকে। এ লক্ষ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। প্রতিবছরই মুদ্রানীতির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মত নেয়ার জন্য বৈঠকের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে পরামর্শ দিতে অংশীজনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানিটরি পলিসি বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানিক মত জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
এবার করোনাকালে মুদ্রানীতিতে বাজারে টাকার প্রবাহ বৃদ্ধির পথ অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। সবচেয়ে বেশি অর্থের জোগান বাড়ানো হবে উৎপাদন ও ব্যবসা খাতে।
এর মধ্যে বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতকেও গুরুত্ব দেয়া হবে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং তাদের ঋণের জোগান দেয়াতেও গুরুত্ব থাকবে।
চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি বাজারে টাকার প্রবাহ, সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তার বেশির ভাগই অর্জিত হয়নি। তবে বৈদেশিক সম্পদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাজারে টাকার প্রবাহ (ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ) বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু গত এপ্রিল পর্যন্ত বেড়েছে ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। অর্থবছর শেষে এটি বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়াতে পারে। ওই সময়ে ব্যাংকিং খাতে আমানত প্রবাহ বাড়লেও ঋণের চাহিদা খুব একটা বাড়েনি। এছাড়া নতুন বিনিয়োগ হয়নি। যে কারণে টাকার প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের যে সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে, সেগুলো অব্যাহত থাকবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া অর্থের ব্যবহার বাড়াতে পারে, এ ব্যাপারেও নীতি সহায়তা দেয়া হবে।
চলতি অর্থবছরের যেসব অর্থ অব্যবহৃত আছে সেগুলো ছাড় করতে প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর মেয়াদ প্রয়োজন হলে জুনের পর আরও বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে প্যাকেজে নতুন অর্থের জোগানও দেয়া হবে।