কালো টাকা সাদা করার বর্তমান সুযোগ বহাল রাখা হবে কি হবে না, তা জানার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহ ম মুস্তফা কামাল।
আগামী ২৯ জুন অর্থবিল পাশ হবে । ওই দিন পর্যন্ত ধৈর্য ধরার কথা বলেন তিনি।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যতদিন অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ থাকবে ততদিন কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হবে।
মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ধারণা করা হয়েছিল, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিদ্যমান সুযোগটি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু গত ৩ জুন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। এমন কি অর্থবিলেও দেখা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচানার পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এর ব্যাখাও দেন অর্থমন্ত্রী। চলমান সুযোগটি বহাল রাখার আভাস দিলেও পরিস্কার করে কিছু বলেননি তিনি।
বুধবার একই বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের বলেন, এর জন্য ২৯ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ ওই দিন অর্থবিল পাশের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে জানা যাবে বিদ্যমান সুযোগটি থাকবে, কি থাকবে না।
যে অর্থবছরটি শেষ হতে হচ্ছে তাতে নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, জমি সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতে ঢালাও ভাবে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কোনো প্রশ্নে ছাড়াই কালো টাকার সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়। যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩০ জুন।
এখন সুযোগটি আরও এক বছরের জন্যবহল রাখা হবে কি হবে না, তা নিয়ে সরকারি শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন অর্থমন্ত্রী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্বান্ত। এ জন্য সরকারের শীর্ষ মহলের সবুজ সংকেত লাগবে।
এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত সরকারের দেয়া এ সুযোগটি গহণ করে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এর বিপরীতে সরকার কর পেয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা আছে
নতুন বাজেট বাস্তবায়নে অর্থনীতিতে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি-না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমি শঙ্কিত নই। কারণ, চ্যালেঞ্জগুলোকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করা যাবে।’ এ জন্য অনেক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাজেট ঘাটতি নিয়ে উদ্ধিগ্ন নন অর্থমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, ঘাটতি বেশি হলেও তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ করোনাকালে আমরা বিদেশ থেকে অনেক অর্থ পাবো বলে আশা করছি।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সম্প্রতি করোনা মহামারির ক্ষতি কাঠিয়ে উঠতে সরকারের কাছ থেকে নেয়া ২০ হাজার কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ পরিশোধের সময় আরও বাড়ানোর আবেদন করেছে। সরকারের কাছ থেকে আপনি এ চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখনও পাই নি। পেলে বিষয়টি দেখব।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখভাল করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্বান্ত নেয়া হবে। এদিকে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি মামলাধীন। ফলে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।