বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্ধ হচ্ছে দুই কেন্দ্র, কেপিসিএলের চেষ্টা জারি

  •    
  • ২১ মে, ২০২১ ১৮:৩৯

সরকারের ভাষ্য ইতোমধ্যে পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি ছুটির পর পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হলে তা আবারও ওয়েবসাইটে জানানো হবে। এর বেশি আর কিছু নেই। মেয়াদ শেষ হতে আরও কয়েক দিন সময় আছে। আমরা চেষ্টা-তদবির করছি: কোম্পানি সচিব

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার বা কেপিসিএলের ‍দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে এখনও সায় মেলেনি। ফলে কেন্দ্র দুটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।

তবে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানানো হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।

বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পক্ষ থেকে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘১১৫ মেগাওয়াটের কেপিসিএল-১ এবং ৪০ মেগাওয়াটের নওয়াপাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ যথাক্রমে ৩১ ও ২৮ মে শেষ হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ কেন্দ্র দুটি যথাক্রমে ১ জুন ও ২৯ মে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়াতে আমাদের চেষ্টা-তদবির অব্যাহত রয়েছে।’

কোম্পানিটির বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল মোট তিনটি। এর মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ায় একটি বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৮ সালেই। বাকি দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পুঁজিবাজারে শেয়ারধারীরা পড়বেন বিপাকে। কারণ, তখন কোম্পানির সহযোগী কোম্পানি ইউনাইটেড পায়রার ৩৫ শতাংশের মালিকানার ওপর নির্ভর করতে হবে। তখন কোম্পানির আয় কমে যাবে। আর সে ক্ষেত্রে শেয়ারমূল্য কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তবে কোম্পানিটি মেয়াদ বাড়াতে কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও কেন্দ্র দুটির মেয়াদ বাড়াতে সুপারিশ করেছে।

কেপিসিএলের কোম্পানি সচিব সোহরাব আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের ভাষ্য ইতোমধ্যে পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি ছুটির পর পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হলে তা আবারও ওয়েবসাইটে জানানো হবে। এর বেশি আর কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘মেয়াদ শেষ হতে আরও কয়েক দিন সময় আছে। আমরা চেষ্টা-তদবির করছি।’

কেপিসিএলের দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র

এর আগের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ-সচিব হাবিবুর রহমানকে চিঠি দেয়। দুটি কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়াতে কেপিসিএল যে আবেদন করেছে, সেটি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, কেপিসিএলের আবেদন তাদের ইতিবাচক বিবেচনায় আছে।

তিনি বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ‘নো ইলেকট্রিসিটি নো পে’ ভিত্তিতে রাখার অনুমোদন দেয়া হতে পারে। রামপাল বা রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু না হওয়া পর্যন্ত খুলনা এলাকায় কিছু বিদ্যুৎ সংকট আছে। এই অবস্থায় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রয়োজন হলে সরকার বিদ্যুৎ কিনবে।”

বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে সরকার বিদ্যুৎ না কিনলেও বসিয়ে বসিয়ে চার্জ দেয়। একে বলে ক্যাপাসিটি চার্জ।

ওই কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী কেপিসিএলের বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নতুন করে অনুমোদন দেয়া হলে এই ক্যাপাসিটি চার্জ আর দেয়া হবে না।

সবেধন নীলমণি

দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে কেপিসিএলের বিদ্যুৎকেন্দ্র বলতে ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ার প্লান্টের যে অংশীদারত্ব থাকবে, সেটি উৎপাদন শুরু করেছে গত ১৮ জানুয়ারি।

দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কেপিসিএলের বিজ্ঞপ্তি

পটুয়াখালী জেলার খলিসাখালী এলাকায় ১৫০ মেগাওয়াটের এই কেন্দ্র থেকে সরকার বিদ্যুৎ কিনবে আগামী ১৫ বছর।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমেছে আয়

জুন অর্থবছরের কোম্পানিটি ইতোমধ্যে তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। এই ঘোষণা অনুযায়ী অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৮৫ পয়সা। ফলে এই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১৯ পয়সা বা ২৮ শতাংশ।

আর অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৭ পয়সা।

প্রাতিষ্ঠানিক অংশে বেড়েছে শেয়ার

২০১০ সালে চাঙা পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি হয় গড়ে ১৯৪ টাকা করে। ছয় বছর বোনাস শেয়ার দিয়ে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ার।

কেপিসিএলের শেয়ারের মালিকানার হিস্যার হিসাব

গত এক মাসে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন বেশি, আর কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। ৩০ এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী এখন কোম্পানির ৯.২ শতাংশ মালিকানা আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২০.৫১ শতাংশ।

এক মাসে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করেছেন ০.৮৪ শতাংশ, যার পুরোটাই কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

ফলে বর্তমানে ৮ কোটি ১৫ লাখ ৯ হাজার ৪৪৩টি শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর নবায়ন না হয়, তাহলে এরা সবাই অনিশ্চয়তায় পড়বেন।

লেনদেনে গতি

গত ৭ এপ্রিল বিএসইসি কেপিসিএলের ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারদরের প্রান্তসীমা বাতিল করে।

এর আগে কোম্পানি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এর লেনদেন হতো না বললেই চলে। তবে ফ্লোর প্রাইস বাতিল হওয়ার পর টানা ১৪ কার্যদিবস দাম কমলেও লেনদেন গতি পায়।

তবে ১৫তম দিনে ২৯ এপ্রিল পাল্টে যায় চিত্র। সেদিন কেবল ১০ শতাংশ দাম বাড়েনি, হাতবদলও হয় ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ২৭৫টি শেয়ার।

গত এক মাসে কেপিসিএলের শেয়ার লেনদেনের চিত্র

পরের দিনও দাম বাড়ে প্রায় ১০ শতাংশ। দাম হয় ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা। সেদিনও হাতবদল হয় ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৪টি শেয়ার।

এরপর আবার টানা পাঁচ কার্যদিবস দাম কমে ৩৫ টাকায় নেমে আসে। আর সেদিন লেনদেন হয় ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ২০২টি শেয়ার।

এরপর আরও তিন কার্যদিবস বেড়ে দাম দাঁড়ায় ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা।

এরপর দুই দিন কমলেও এক দিনে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে টাকা ৩০ পয়সা।

লেনদেন হয়েছে ৩৬ লাখ ১০ হাজার ৩০৩টি।

দীর্ঘ মেয়াদে লোকসান গুনল বিনিয়োগকারীরা

তালিকাভুক্তির বছরে ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের জুন মাস পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে।

এরপর ২০১০ সালের জন্য ২০ শতাংশ, ২০১১ সালের জন্য ২৫ শতাংশ, ২০১২ সালের জন্য ১২.৫ শতাংশ, ২০১৩ সালের জন্য ৫ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের জন্য আবার ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে।

গত এক মাসে কেপিসিএলের শেয়ারের দামের চিত্র

১৯৪ টাকা ভিত্তি ধরে ১০ বছরের বোনাস শেয়ার হিসাব করলে দাম দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৫৫ পয়সা।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার কোম্পানির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা।

পাঁচ বছর ধরে নগদ লভ্যাংশের দিকে জোর দেন কোম্পানির উদ্যোক্তারা। ২০১৬ সালে ৭৫ শতাংশ (শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৭ টাকা), ২০১৭ সালে ৫৫ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৪০ শতাংশ এবং ২০২০ সাল ৩৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।

এ বিভাগের আরো খবর