বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১১ দিনে প্রায় দ্বিগুণ দামে এনআরবিসি

  •    
  • ১৬ মে, ২০২১ ১৭:১৭

২৮ এপ্রিল থেকে মূলত বদলে যেতে থাকে শেয়ারের দর। সেদিন বাড়ে ৩০ পয়সা। পরের দিন একই দামে আর ২৯ এপ্রিল দাম হয় ১২ টাকা। পরের দুই দিন বাড়ে ২০ পয়সা করে। এরপর টানা ছয় দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দামি বৃদ্ধির প্রান্তসীমা ছুঁয়েছে শেয়ার দর। ১১ কর্মদিবসে দাম বেড়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা বা ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

গত মার্চে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করা এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে এখন সবচেয়ে আগ্রহ তৈরি করেছে।

লেনদেনের শুরুর পর দেড় মাসেরও বেশি ঝিমিয়ে থাকা এই ব্যাংকের শেয়ারের দর চলতি মাসের শুরু থেকেই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

ঈদের আগে টানা পাঁচ দিন এবং ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসেও দিনের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে ব্যাংকটি।

ঈদের ছুটির আগের দিস ১৯ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হওয়া ব্যাংকটি রোববার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৫০ পয়সা।

মাত্র ছয় কার্যদিবসে শেয়ার মূল্য বাড়ল ৯ টাকা ১০ পয়সা বা ৭৩ শতাংশ।

এই ছয় দিনের আগে আরও পাঁচ দিন বেড়েছে এনআরবিসির দাম। বৃদ্ধি শুরুর দিন ২৭ এপ্রিল দাম ছিল ১১ টাকা ৬০ পয়সা। তবে প্রথম পাঁচ দিনে বাড়ে কেবল ৮০ পয়সা। আর এর পর এক দিনই এর চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে দাম।

অর্থাৎ ১১ কর্মদিবসে দাম বেড়েছে ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

২০১০ সালে মহাধসের পর ব্যাংক খাতে কোনো কোম্পানিতে এই ধরনের চিত্র দেখা যায়নি বললেই চলে।

তালিকাভুক্তির দেড় মাসেরও বেশি সময় পর এই ব্যাংকটির দামে এমন উত্থান নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। অবশ্য এই সময়ে ব্যাংকিং খাতের প্রায় সব কোম্পানিরই দাম বাড়ছে। তবে এনআরবিসির মতো নয়।

গত এক বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শেয়ারের প্রায় সবগুলোর ক্ষেত্রেই এই চিত্র দেখা গেছে। যেগুলো প্রিমিয়ামসহ বা বুকবিল্ডিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত অভিহিত মূল্যে তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও প্রথম দিন ৫০ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। একটির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কার্যদিবসে ৫০ শতাংশের কম বাড়লেও অন্য একটির ক্ষেত্রে টানা আট থেকে ৯ দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দর বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে।

তবে ব্যতিক্রম ছিল কেবল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। ১০ টাকায় তালিকাভুক্তির পর প্রথম দিন ২২ মার্চ ৫০ শতাংশ বেড়ে দাম ১৫ টাকা উঠেছিল বটে, তবে ধরে রাখতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। দ্বিতীয় দিন থেকেই দরপতন শুরু। একপর্যায়ে দাম নেমে আসে ১১ টাকায়।

তবে এখন নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ক্ষেত্রে পরিবর্তণ করা হয়েছে নিয়ম। লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই শেয়ার দরের ভিত্তিতে সার্কিট ব্রেকার থাকবে। ফলে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দর দ্বিগুণ হতে দিনের সর্বোচ্চ দর বেড়ে সময় লাগবে প্রায় আট থেকে নয়দিন।

দর বেড়েছে যেভাবে

গত ২৭ এপ্রিল ব্যাংকটির শেয়ার দর ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা। পরদিন ৩০ পয়সা বেড়ে দাম হয় ১১ টাকা ৯০ পয়সা। ২৯ এপ্রিল এই দরেই হাতবদল হয়। আর দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ২ মে দাম দাঁড়ায় ১২ টাকা।

পরের দুই দিন দাম বাড়ে ২০ পয়সা করে। আর ৪ মে থেকেই দেয় লাফ দেয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। মাত্র ৬ কার্যদিবসে এই ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ১ টাকা বা ৭৩.৩৮ শতাংশ।

সেদিন থেকে শেয়ারের সর্বোচ্চ দরে দিন পরিবর্তনের শুরু এনআরবিসির শেয়ারধারীদের। তখন শেয়ারদর ছিল ১২ টাকা ৪০ পয়সা।

৪ মে থেকে ব্যাংকটির শেয়ারদর টানা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে এক দিনে সর্বোচ্চ দাম বৃদ্ধির প্রান্তসীমা ছুঁয়ে যায়। আর বেশির ভাগ দিনেই এই সর্বোচ্চ দামেও বিক্রেতা দেখা যায়নি।

৫ মে ১৩ টাকা ৬০ পয়সা, ৬ মে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ৯ মে ১৬ টাকা ৩০ পয়সা, ১১ মে আবার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়ায় ১৭ টাকা ৯০ পয়সা আর ১২ মে দাম হয় ১৯ টাকা ৬০ পয়সা।

এরপর ঈদের ছুটিতে যায় পুঁজিবাজার। ছুটির পর প্রথম কার্যদিবস রোববার আবারও দিনের সর্বোচ্চ দর বেড়ে হয়ে ২১ টাকা ৫০ পয়সা।

এই সর্বোচ্চ দামেও এক পর্যায়ে বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়। প্রায় প্রতি দিনই সর্বোচ্চ দামে বিক্রেতা উধাও হয়ে যয়।

প্রায় ৮৫ শতাংশ দাম বাড়ার পরেও আয়ের তুলনায় ব্যাংকটির আয় মূল্য অনুপাত আকর্ষণীয় পর্যায়েই আছে। সব শেষ দাম অনুযায়ী এর আয় মূল্য অনুপাত বা পি রেশিও ৯ দশমিক ০৭। অর্থাৎ বর্তমান হারে আয় করলে বিনিয়োগের টাকা উঠে আসবে এই কয় বছরেই।

পুঁজিবাজারে ১০ পি রেশিওকে আকর্ষণীয় হিসেবে ধরা যায়। তবে বেশ কিছু ব্যাংকের পি রেশিও চারের ঘরে আছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে এই পি রেশিও আরও কম আছে কোনো কোনোটির।

আর বাজারে শেয়ারমূল্য একমাত্র পি রেশিওর ওপরই নির্ভর করে না। এমন কোম্পানিও আছে যার পি রেশিও ১ হাজারের বেশি। তবু উচ্চমূল্যে লেনদেন হচ্ছে শেয়ার।

প্রকাশ করবে প্রথম প্রান্তিক

ব্যাংকটি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যণ্ত সময়ে শেয়ারধারীদের সাড়ে ৭ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারন করা হয়েছে ৩১ মে।

এরই মধ্যে গত ১২ মে ব্যাংকটি তাদের বোর্ড সভার তারিখ জানিয়েছে। বলা হয়েছে, আগামী ২০ মে ব্যাংকটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করতে বোর্ড সভার আহ্বান করা হয়েছে। যেখানে জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে ব্যাংকটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ও নিট সম্পদ মূল্য (এনএবি) প্রকাশ করা হবে।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৩৭ পয়সা। মহামারির বছরে আগের বছরের তুলনায় মুনাফা বেড়েছে ৩৯ পয়সা বা ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৯৮ পয়সা।

তবে শেয়ারসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় আনলে শতকরা হিসেবে গত বছরের চেয়ে মহামারির বছরে আয় আরও বেশি বেড়েছে।

ব্যাংকটি মোট ১২ কোটি শেয়ার বিক্রি করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব-আইপিওর মাধ্যমে ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।

ব্যাংকের পুঁজির গুণগত মানের আন্তর্জাতিক চর্চা ব্যাসেল-৩-এর শর্ত পরিপালনে, উত্তোলিত টাকার ১১০ কোটিই বিনিয়োগ করা হবে সরকারি সিকিউরিটিজে। আর সাড়ে ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে শেয়ারবাজারে।

বর্তমানে এনআরবিসির পরিশোধিত মূলধন ৫৮২ কোটি টাকা। নতুন করে উত্তোলিত টাকা যোগ হয়ে তা হয় ৭০২ কোটি টাকা।

সম্প্রতি বিএসইসি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংককে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে শেয়ার ছেড়ে ১০০ কোটি টাকা তোলার অনুমোদন দিয়েছে। ইউনিয়ন ব্যাংকও পুঁজিবাজারে আসার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর