বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনায় অতিথিশূন্য তারকা হোটেল

  •    
  • ৭ মে, ২০২১ ০৮:২৩

ঢাকার চার ও পাঁচতারকা মানের বেশ কয়েকটি হোটেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের ব্যবসা এখন ৮০ শতাংশ কমে গেছে।

করোনার কারণে দেশের পাঁচতারকা অভিজাত হোটেলগুলো অতিথিশূন্য হয়ে পড়েছে। শহরের ছোট-বড় আবাসিক হোটেলগুলোর সবগুলোতে খরা।গত বছর মার্চ মাসের লকডাউনের পর থেকে একের পর এক বাতিল হয়েছে হোটেলের রুম ও অনুষ্ঠানের আগাম বুকিং। বিদেশি অতিথিদের বুকিং বাতিলের পাশাপাশি দেশীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে।গত বছরের শেষের দিক থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও লকডাউনে আবার হোটেল ব্যবসায় ধস নেমেছে। ফ্লাইট বন্ধের কারণে বিদেশি অতিথি নেই। আগের বুকিং আদেশগুলোও বাতিল হয়ে গেছে একে একে। এ অবস্থায় এসব হোটেলের পরিচালন ব্যয় মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষের। কর্মী ছাঁটাইও হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানে।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা) তথ্য মতে, দেশে এখন ১৭টি পাঁচতারকা হোটেলসহ তিন ও চারতারকাবিশিষ্ট মোট ৫০টি হোটেল আছে।

ঢাকার চার ও পাঁচতারকা মানের বেশ কয়েকটি হোটেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের ব্যবসা এখন ৮০ শতাংশ কমে গেছে। তারা বলছেন, বাংলাদেশে পর্যটক এমনিতেই কম আসে। অতিথিদের বেশির ভাগই এনজিও কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী। কিন্তু করোনার কারণে সশরীরে না এসে ভার্চুয়ালি কাজ সেরে নিচ্ছেন তারা। তাই হোটেলগুলো এখন ফাঁকাই পড়ে থাকছে।

প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও ঢাকা

দেশি-বিদেশি অতিথি ছাড়াও এসব হোটেলের আয়ের একটি বড় উৎস ভেন্যু হিসেবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন। করোনা আতঙ্কে এসব প্রদর্শনীও বাতিল হয়েছে একের পর এক। আগামীতে কখন এগুলো শুরু হবে, তার ঠিক নেই। এরকম অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন হোটেল মালিকেরা।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন (বিহা)-এর সাধারণ সম্পাদক মহাসিন হক হিমেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের মার্চে বিদেশি ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার পর থেকে আমাদের দুর্দিন। শহরের ভেতর যেসব বিজনেস হোটেল আছে, সেগুলো গত এক বছরে ১০-২০ শতাংশ ব্যবসা করেছে। আর এখন ব্যবসা করছে ৫-১০ শতাংশ। স্বাভাবিক সময়ে এই মৌসুমে হোটেলগুলোতে ৮০ শতাংশ অতিথি থাকত।’

মহাসিন হক হিমেল নিজে চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের প্রধান।তিনি আরও বলেন, ‘টুরিস্ট স্পটগুলো বন্ধ থাকায় এবং পাবলিক পরিবহন না চলায় কক্সবাজার, সিলেটসহ টুরিস্ট এলাকার হোটেলও বন্ধ হয়ে গেছে। করপোরেট অফিসগুলোর মিটিং, কনফারেন্স, একজিবিশন এখন হয় না। সব অফিস বিদেশিদের সঙ্গে জুম মিটিং করে।‘হোটেলের আয় বলে আর কিছুই হয় না। অথচ এই পরিস্থিতিতেও কর্মচারীদের বেতনভাতা, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিলসহ নানা ধরনের খরচ বহন করে যেতে হচ্ছে। এভাবে কত দিন চলতে পারব, আমরা জানি না।’গত এক বছরে হোটেল ব্যবসায় ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকার উপরে হবে বলে অনুমান করেন মহাসিন হক হিমেল। তিনি জানান, সরকারের কাছে বারবার প্রণোদনা চেয়েও তারা কিছু পাননি।

পাঁচতারা হোটেল ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা’-এর মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক শাহিদ উজ সাদিক বলেন, ‘গত বছর এই সময় আমাদের জন্য খারাপ ছিল। অক্টোবর থেকে এই বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত আমাদের সময় ভালো গেছে। এখন আবার খারাপ যাচ্ছে। বাইরে থেকে গেস্ট আসা আপাতত বন্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করছি লোকাল মার্কেট নিয়ে টিকে থাকতে। এখন কিছু লোকাল গেস্ট আছেন। হোটেলের ফুড কোর্ট, জিম, সুইমিংপুলসহ আমাদের সবই খোলা আছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজধানীর এক পাঁচতারকা হোটেল কর্মকর্তা বলেন, ‘এই করোনা মহামারিতে শুধু আমাদের হোটেলেই নয়, বেশ কিছু বড় হোটেলে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।’

তবে বিহার সাধারণ সম্পাদক মহাসিন হক হিমেল বলেন, চাকরি ছাঁটাইয়ের কথা তার জানা নেই। যেসব মালিক আর পেরে উঠছেন না, তারা কর্মীদের ছুটিতে পাঠাচ্ছেন বলে তারা জেনেছেন।

হোটেল আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাঁচতারকা হোটেলগুলো সামান্য কিছু ব্যবসা পেলেও অন্যান্য শহরের তারকা হোটেলগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। বগুড়ায় অবস্থিত পাঁচতারকা মানের হোটেল ‘মম ইন’-এর ভারপ্রাপ্ত হেড অব সেলস খন্দকার আল মোছাব্বির অনেকটা হতাশার সুরে বলেন, ‘এই লকডাউনে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত বাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমাদের হোটেল এক প্রকার ফাঁকা পড়ে আছে। ৫ শতাংশ অতিথি আসে এখন। বাকি ফাঁকাই পড়ে থাকে।’

এ বিভাগের আরো খবর