করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ঘরের বাইরে যেতে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত আসার পর পুঁজিবাজারও চালু রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, বুধবার পয়লা বৈশাখের সরকারি ছুটি শেষে যথারীতি চলবে পুঁজিবাজারের লেনদেন।
লেনদেনের জন্য ব্রোকারেজ হাউজ খোলা থাকলেও সেখানে যাওয়া যাবে না। আগের মতোই ডিজিটাল পদ্ধতিতে অ্যাপের মাধ্যমে বা মোবাইল ফোনে অর্ডার দিতে হবে।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্দর এলাকা ছাড়া বাকি ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানোর পর বিএসইসি পুঁজিবাজারও বন্ধ রাখার কথা জানায়।
পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয়, ব্যাংক খোলা না থাকলে সেটা চালু রাখা সম্ভব নয়। এ কারণে বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
গত বছর করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হলে পুঁজিবাজারও ৬৬ দিন বন্ধ থাকে। তবে এবার বিধিনিষেধের মধ্যেও ৫ এপ্রিল থেকে বাজার চালু থাকে। যদিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজবে ৪ এপ্রিল আর কঠোর বিধিনিষেধের গুজবে ১১ এপ্রিল ব্যাপক দরপতন হয় পুঁজিবাজারে।
সোমবার সরকার বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে যে ১৩ দফা নির্দেশনা দেয়, তাতে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক তার সিদ্ধান্ত জানানোর পর সমালোচনা শুরু হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি এই সিদ্ধান্তের নানা নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে নিউজবাংলাকে বলেন, এর ফলে এটিএম বুথে চাপ বাড়বে। ফলে সেখান থেকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। টাকা জমা ও তোলার সুবিধা না থাকায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাতেও ব্যাঘাত ঘটবে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ব্যাংকিং সেবা চালু রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে ব্যাংকে।
গত ৫ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধের মধ্যেও এত বেশি সময় চালু থাকেনি ব্যাংক। এই এক সপ্তাহে লেনদেন চলেছে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
আড়াই ঘণ্টা ব্যাংক চালু রাখার সিদ্ধান্তের পর পুঁজিবাজারে এক সপ্তাহ লেনদেন চলে দুই ঘণ্টা করে, ১০টা থেকে ১২টা।
তবে যেহেতু ব্যাংক আওয়ার এখন বেড়েছে, তারা পুঁজিবাজারে লেনদেনের সময়ও আধা ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংক চালু থাকার পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের লেনদেন চালু থাকবে। একই সঙ্গে আগের নিয়মেই আগামী বৃহস্পতিবার থেকে লেনদেন চলবে। লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত।’
ব্যাংক খোলা রাখতে সরকার যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করে, তখনই নিউজবাংলা যোগাযোগ করে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। তিনি সে সময় বলেন, ‘আমরা তো পুঁজিবাজার চালু রাখতে চাই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনটা দেখি, তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।’