বছরব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনীর জন্য নির্দিষ্ট প্রদর্শনীকেন্দ্রের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। একই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের কর রেয়াতের ব্যবস্থা করতে অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাসহ যে কোনো বিষয়ে তাদের পাশে থাকবেন বলেও জানা তিনি।
স্বাধীনতার ৫০ বছর ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে উইমেন এন্টারপ্রেনার্স নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়েন্ড) উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশ্বাস দেন।
ওয়েন্ডের সভাপতি ড. নাদিয়া বিনতে আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার।
অনুষ্ঠানে গত বছর মহামারি করোনার প্রকোপের শুরুতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক, পুলিশ, তৈরি পোশাক কর্মী, নারী উদ্যোক্তা ও বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার ৫০ করোনাযোদ্ধা নারীকে সম্মাননা দেয় ওয়েন্ড। বাণিজ্যমন্ত্রী তাদের হাতে সম্মাননাপত্র তুলে দেন।
এ সময় নারী উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যাংক ঋণ পেতে ভোগান্তি কমানো ও তাদের পণ্য প্রদর্শনীর জন্য নির্দিষ্ট প্রদর্শনীকেন্দ্রের কথা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শন একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে পূর্বাচলে বিশাল আয়তনের স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণ করেছে সরকার। সেটি প্রায় প্রস্তুত। সেখানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংশ বরাদ্দ রাখার ব্যাপারে তিনি চেষ্টা করবেন, যাতে নারী উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করতে পারেন। এতে তাদের উৎপাদিত পণ্য দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও যেতে পারবে।
কর বিষয়ে তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের শুরুতে সাহায্য করলে তারা ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারবে। এক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে শুধু নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কর রেয়াতের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবেন তিনি। অনেক নারী ঠিকভাবে অর্থ সহায়তাও পায় না। তাদের অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও নেই। এক্ষেত্রে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় মিলে ঋণপ্রাপ্তি আরও সহজ করার পথ খুঁজে বের করবে। নারী উদ্যোক্তাদের সব ধরনের প্রতিবন্ধতা দূর করতে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব বলেন, উদ্যোক্তা হিসাবে একজন নারীর আর্থিক সহায়তা ও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ প্রয়োজন। এ দুটি পেলে নারীরা এগিয়ে যায়, পুরুষের চেয়েও সফল হয়। সরকার সেসব সুবিধা তৈরি করে দিয়েছে। এখন নারীরা কর্মক্ষেত্র ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ধারায় আগের চেয়েও বেশি সম্পৃক্ত। বছরে দুই লাখ নারী কৃষি, সেবা ও শিল্প খাতে যুক্ত হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। ভবিষ্যতে নারীরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও এগিয়ে যাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের সব ধরনের সহায়তা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে ওয়েন্ড ৫০ জন করোনা যোদ্ধা নারীকে সম্মানান দিয়েছে। একই সঙ্গে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আগামী এক বছরে ওয়েন্ড ১০১ জন নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন বিষয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন ও সামনে এগিয়ে যেতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সবার সহায়তা চান তিনি।