দেশের বাইরে থেকে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সহজণ করা হচ্ছে। চালু করা হয়েছে ডিজিটাল বুথ। নিটা একাউন্টের মাধ্যমে আইপিও আবেদনে খরচ কমানোসহ প্রবাসীদের জন্য কোটাও সরক্ষণ করা হয়েছে।
প্রবাসীদের দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে সোমবার আয়োজন করা হয় গণশুনানির।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ –ডিএসই যৌথভাবে ডিজিটাল প্লাটফর্মে এই শুনানির আয়োজ করে।
বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশের জন্য দেশের অর্থনীতির জন্য যে অবদান রাখেন তা সম্মানের। আমরা চাই তাদের পরিশ্রমের অর্জিত অর্থ যেন অলস না থাকে। এসব অর্থ দেশের উন্নয়নের কাজ লাগাতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা যে রেমিট্যান্স পাঠায় সেটি সহজে কীভাবে পুঁজিবাজারে যুক্ত করা যায় তা নিয়ে কমিশন কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারাও এটি নিয়ে কাজ করছে।
‘ইতোমধ্যে নিটা হিসাব বা প্রবাসীরা যে হিসাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকেন সেটির ব্যয় কমানো হয়েছে। আগে যেখানে নিটা হিসাবে খরচ লাগত ২ হাজার ৩০০ টাকা এখন তা কমিয়ে ৫৭৫ টাকা করা হয়েছে।’
প্রবাসীরা যাতে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী হন সেজন্য ইতোমধ্যে ডিজিটাল বুথ স্থাপন করা হয়েছে। দুবাইতে প্রথম এই বুধ উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ বুথ স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। যেখান থেকে সরাসরি প্রবাসীরা বিও হিসাব খোলা, লেনদন করার মতো কার্যক্রমও বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে জানান কমিশনার শামসুদ্দিন।
গণশুনানির মাধ্যমে কমিশন পুঁজিবাজারে কী ধরনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সেসব বিষয়সহ আলোচনা করা হয়। আনুপাতিক হারে শেয়ার বণ্টনের যে উদ্যোগ সেটিও গণশুনানির মাধ্যমে প্রস্তাব হিসেবে এসেছিল। পরবর্তীতে তা নিয়ে কমিশন কাজ করে এর রূপরেখা তৈরি করে। এবং আগামী এপ্রিল থেকে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
এপ্রিল থেকে প্রাথমিক গণ-প্রস্তাবে -আইপিও আসা কোম্পানিতে আবেদন করলেই শেয়ার পাবেন আবেদনকারীরা।
বিএসইসির আরেক কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, ‘এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে শুনানিতে আমরা যে পরামর্শ পেয়েছিলাম সেগুলোর বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল। এবারও তা ব্যতিক্রম হবে না।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক গণপ্রস্তাব- আইপিও প্রক্রিয়া নিয়ে আগের শুনানিতে আলোচনা হয়েছিল। এখন যে প্রক্রিয়া সহজ করা হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে আমরা বিনিয়োগকারীদের ভালো একটি পরিবেশ দিতে চাই। সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।’
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রবাসীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আগ্রহী করতে তাদের জন্য কোটা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ডিজিটাল বুথ স্থাপন করে সরাসরি লেনদেনের প্রক্রিয়া তৈরি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সহজ করার লক্ষ্যে গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। এখান থেকে যেসব পরামর্শ পাওয়া যাবে কমিশন পরবর্তীতে সেসব বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
শুনানিতে বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মতিন পাটোয়ারি, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।