বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারে মূল্য সংশোধন কোন পথে

  •    
  • ৯ মার্চ, ২০২১ ২১:৩০

নভেম্বরের থেকে জানুয়ারির পর্যন্ত ছিল পুঁজিবাজারে রমরমা অবস্থা। এ সময়ে হাজার কোটি টাকা থেকে লেনদেন উঠে আসে আড়াই হাজার কোটি টাকায়। তারপর লেনদেন কমে আসার পর খুব কম সময়ের জন্য হাজার কোটি টাকা লেনদেন দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।

সাত কার্যদিবসের বেশির ভাগ সময় ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের ধীরগতি অব্যাহত। সূচক পতনের হারও বেশি।

সূচকের পতনের কারণে কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত কয়েকদিনে পুঁজিবাজারে যে উত্থান ছিল তাতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। সেসব কোম্পানির শেয়ার থেকে মুনাফা উত্তলনের কারণে এতদিন সূচক ও লেনদেনে মন্দাবস্থা ছিল।

তবে গত দুদিনে সূচক ও লেনদেনে যে উত্থান তাতে বলা যায়, পুঁজিবাজার মূল্য সংশোধনের পর আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

সূচকের গতিপথ

গত সাত কার্যদিবসের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে চারদিন আর বেড়েছে তিনদিন। তবে পুঁজিবাজারে লেনদেনে যে বিনিয়োগকারীরা এখন কৌশলী তা লেনদেন দেখলেই বোঝা যায়।

মঙ্গলবার হাজার কোটি টাকা লেনদেনের আগে টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ৬শ থেকে ৮শ টাকার মধ্যে ছিল লেনদেন। এ সময়ে সূচক সর্বোচ্চ ৮২ পয়েন্ট বেড়েছিল। তারপর আর এমন উত্থান দেখা যায়নি।

সূচকের উত্থান পতন থাকলেও লেনদেনে বিনিয়োগকারীরা ছিলেন কৌশলী। বরং যেসব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছিল সেগুলোর দর কমেছে। বিনিয়োগকারীরাও অপেক্ষায় ছিল কম দামে এসব কোম্পানির শেয়ার কিনতে।

ফলে প্রতিদিন যেসব কোম্পানির শেয়ার দর লেনদেনের শীর্ষে ছিল সেগুলোকে পেছনে ফেলে নতুন কোম্পানি সে স্থান দখলে নেয়। মঙ্গলবার সে অবস্থার পরিবর্তন হয়ে আবারও শীর্ষ স্থান দখলে নেয় দর কমে আসা কোম্পনিগুলো।

নভেম্বরের থেকে জানুয়ারির পর্যন্ত ছিল পুঁজিবাজারে রমরমা অবস্থা। এ সময়ে হাজার কোটি টাকা থেকে লেনদেন উঠে আসে আড়াই হাজার কোটি টাকায়। তারপর লেনদেন কমে আসার পর খুব কম সময়ের জন্য হাজার কোটি টাকা লেনদেন দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।

ফেব্রুয়ারি থেকে মূলত পুঁজিবাজারকে সংশোধনের পথে হাঁটতে দেখা যায়। বিশেষ করে মার্চের শুরু থেকে সেই সংশোধন কিছুটা কমে লেনদেনে ফিরতে দেখা গেছে।

আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল নতুন কোম্পানি

ফ্লোর প্রাইসের বা যে দামের নিচে কোম্পানির শেয়ার দর লেনদেন হবে না প্রতিদিন এমন ১০০ ওপরে কোম্পানি থাকে দর না পাল্টানোর তালিকায়।

ভালো কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগের শেয়ারের দর হাজার টাকার ওপরে হওয়ায় বিনিয়োগাকরীরা নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানি দিকে ঝুঁকছে।

নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রথম দিনের লেনদেনে দর বাড়তে পারে ৫০ শতাংশ, দ্বিতীয় দিনেও ৫০ শতাংশ। ফলে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে যারা শেয়ার পান তারা নিশ্চিত হয়ে যান শেয়ার দর এমন উলম্ফনের। আর আইপিও প্রাপ্তরা সেই শেয়ার বিক্রিতে আগ্রহী না হওয়ায় কখনও কখনও ক্রমাগত বাড়তে থাকে শেয়ারের দর।

সদ্য তালিকাভুক্ত হওয়া লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, ইজেনারেশন লিমিটেডের ক্ষেত্রে তাই দেখা গেছে।

গত চার মাসের মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়া রবি, এনার্জিপ্যাক, ডমিনোস স্টিল ও ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের শেয়ার উচ্চমূল্যে কিনে এখন লোকসান গুনছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানুয়ারিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার ৯০০ পয়েন্ট কাছাকাছি অবস্থায় গিয়েই মূল্য সংশোধনে পড়ে। তবে সে সময় যেভাবে সূচক ও লেনদেনের পতন হয়েছে তাকে প্রশ্ন উঠেছিল এটি মূল্য সংশোধন নাকি পতন।

দর কমার পর আবার শীর্ষে পুরাতন কোম্পানি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরই মূলত এসব নতুন কোম্পানি নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়। কিন্তু কোম্পানিগুলো অতিমূল্যায়িত হওয়ার পর যখন পুঁজিবাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ে তখন বিক্রির চাপই থাকে বেশি। ফলে এসব কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যাওয়াকে মূল্য সংশোধনের তালিকায় আনাতে নারাজ বিনিয়োগাকরীরা।

পুঁজিবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে তালিকাভুক্ত এবং এক সময় দর বেড়ে পরে কমে আসাকেই মূল্য সংশোধনের তালিকায় নিতে রাজি তারা।

গত তিন মাসের বেশিরভাগ সময় ধরে দর বেড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯০ টাকা। এখন কোম্পানিটির শেয়ার দর কমে এসেছে ৮০ টাকায়।

অপরদিকে রবি আজিয়াটার শেয়ার দর ক্রমাগত বেড়ে ১০ টাকা হয়েছে ৭৭ টাকায়। তারপর শেয়ারের দর কমে হয়েছে ৩৯ টাকা। এখন আবার বাড়ছে। ফলে মূল্য সংশোধনের পর কোম্পানিটির শেয়ার দরে পরিবর্তন এসেছে। একই ভাবে মূল্য সংশোধন হয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্স, বেক্সিমকোফার্মা।

রাজধানীর একটি ব্রোকারেজ হাউসে উৎসুক বিনিয়োগকারীরা। ছবি: নিউজবাংলা

বিনিয়োগকারীদের বক্তব্য

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, বর্তমানে যেভাবে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন পরিচালিত হচ্ছে তাতে মূল্য সংশোধনের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কারণ যখন কোনো কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ে তখন একটি গ্রুপ চিন্তা করে মুনাফা উত্তলন করবে। তখন শেয়ারের দর কমতে থাকে। অপর বিনিয়োগকারীরা মনে করে দাম কমে আবার বাড়বে। ফলে যখন দর না বাড়ে তখন তারাও শেয়ার বিক্রি করতে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘মূলত তখনই বাজারে সংশোধন হয়ে থাকে। বর্তমানে নতুন কমিশন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর আবার চালু করার উদ্যোগের কারণে সেসব কোম্পানিতে যারা শেয়ার কিনে আটকে আছে তারা আশাবাদি। তারাও এখন পুঁজিবাজারে সক্রিয়।’

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কাজ করে এমন আরেকটি সংগঠন বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আনম আতাউল্লাহ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সূচকের উত্থান পতনে মূল্য সংশোধনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কারণ বেশ কয়েকদিন ধরে টানা দর বেড়েছে বেশ কয়েকটি কোম্পানির। সেগুলোর দর এখন কমে এসেছে। তবে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার সরবরাহ বাড়ার পর অন্তত এক মাসের বেশি সময় পর বলা যাবে মূল্য সংশোধন হয়েছে কি না।

তিনি বলেন, ‘নতুন করে সেসব কোম্পানিগুলোকেও লেনদেনের শীর্ষে দেখা যাচ্ছে। ফলে এসব কেম্পানির মূল্য সংশোধন হওয়ার পরই নতুন করে আবার বিনিয়োগ হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর