বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১১ ব্রোকারেজ হাউজ নিয়ে তদন্তে ডিএসই

  •    
  • ১ মার্চ, ২০২১ ০৮:১৬

৮ ফেব্রুয়ারি বেট বাংলাদেশের যত শেয়ার বিক্রি হয়েছে, তার ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশেই বিক্রি করেছে একটি হাউজ। গ্রামীণফোনের যত শেয়ার বিক্রি হয়েছে তার ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশই বিক্রি করেছে অন্য একটি। আইডিএলসির লেনদেন হওয়া শেয়ারের ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ বিক্রি করেছে আরও একটি হাউজ।

পুঁজিবাজারে কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে অস্বাভাবিক শেয়ার বিক্রির আদেশ আসার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশনায় এই তদন্ত চলছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে সূচকের পতন হয় ১৪২ পয়েন্ট। শুরু হয় হইচই। গত ডিসেম্বর থেকে চাঙা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা যখন তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পাওয়ার আশায়, তখন হঠাৎ এমন পতন ভাবিয়ে তুলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও।

বিএসইসির সার্ভিল্যান্স টিম তাৎক্ষণিকভাবে ১১ ব্রোকারেজ হাউজ থেকে অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রির আদেশ দেখতে পায়।

সেদিনই এই টিমের সদস্যদের ডেকে কথা বলেন বিএসইসির একজন কমিশনার। বিএসইসির একজন কমিশনার নিউজবাংলাকে জানান, সেদিন যে ১৪২ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়, তার ৮০ পয়েন্টই কমে ওই ১১ হাউজের অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রির কারণে।

সেদিনের পর থেকে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট তৈরি হয়। গত ডিসেম্বরের শেষ থেকে টানা এক মাস যেখানে এক হাজার কোটি টাকার বেশি আর টানা ১০ দিন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, সেখানে এখন লেনদেন নেমেছে এসেছে ৪০০ থেকে ৬০০ কোটির ঘরে।

সূচক প্রায় দিনই কমছে, সেই সঙ্গে কমছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা। কোনো কোনো এক বা দুই দিন শেয়ারমূল্য বাড়লেও পরে তা আবার পড়ছে।

৭ ফেব্রুয়ারি ওই ঘটনার দিন বিএসইসি জানায়, তারা বাজারে নজরদারি করবে। কিন্তু পরদিনও সূচকের বড় পতন হয়। বাজার পড়ে ১২৮ পয়েন্ট।

এই দুই দিনে সূচকের বড় পতনে দায়ী ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দাম কমা। ৮ ফেব্রুয়ারি এই কোম্পানির শেয়ার আগের দিনের তুলনায় ১০০ টাকারও কমে বিক্রি হয়েছে। ওই দিন কোম্পানিটির যে পরিমাণ শেয়ার বিক্রি হয়েছে, তার মধ্যে একটি সিকিউরিটিজ হাউজ থেকেই বিক্রি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার। ওই প্রতিষ্ঠানটি কেন এত শেয়ার এক দিনে বিক্রি করে দিল, সেটিই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে।

সেদিন গ্রামীণফোনের যত শেয়ার বিক্রি হয়েছে, তার ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশই বিক্রি করেছে অন্য একটি হাউজ। আরেকটি হাউজ বিক্রি করেছে একই কোম্পানির ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ শেয়ার।

আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির লেনদেন হওয়া শেয়ারের ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে আরও একটি হাউজ।

কী অবস্থা তদন্তের

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ব্রোকার হাউজগুলোকে চিহ্নিত করার পর সেগুলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে, তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে।

সময় শেষ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘৭ তারিখ চিহ্নিত করার পর সেদিনই তা পাঠানো হয়নি। কিছু প্রক্রিয়া আছে, তা শেষ করে পাঠানো হয়েছে। তবে ১৫ দিন এখনও শেষ হয়নি। ডিএসই বিষয়গুলো তদন্ত করে আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।’

এই তদন্ত করছে ডিএসইর রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স ডিভিশন (আরএডি) শাখা। এসব বিষয়ে ওই শাখা কখনও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে না।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ডিএসইর মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমানও।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, পতনের পর তদন্ত করা হচ্ছে সেটি সেদিনই জানা গিয়েছিল। কিন্তু তদন্তের কী অবস্থা, সেটি এখনও জানা যায়নি।

তিনি বলেন, তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা হলেই অনেক সমস্যার সমাধান হবে।

পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আনম আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, ‘এ ধরনের তদন্ত করা হচ্ছে, তা আগেও অনেকবার শোনা গেছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলোর কোনো সমাধান হয়েছে বলে শোনা যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘বিএসইসির নতুন কমিশন এখন অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকে আইন ভঙ্গের দায়ে শাস্তির আওতায় নিয়ে এসেছে। এটা ভালো খবর। একই সঙ্গে যারা পুঁজিবাজারকে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করতে চান, তাদেরও চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিত।

বাজার এখন গতিহীন

মাসের শুরুতে টানা দুই দিনের বড় পতনের ধাক্কা গোটা ফেব্রুয়ারিজুড়েই ছিল। ওই দুই দিন পতনের আগে পুঁজিবাজারে সূচক ছিল ৫ হাজার ৬৪৭ পয়েন্ট। দুই দিনের পতনে সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ৫ হাজার ৩৭৬ পয়েন্টে।

এরপর ১৩ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এরপর পাঁচ দিন বেড়েছে সূচক, কমেছে আট দিন। বর্তমানে সূচকের অবস্থান ৫ হাজার ৪০৪ পয়েন্ট।

সূচকের দিক থেকে পুঁজিবাজারে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার প্রমাণ লেনদেনে।

মাঝে দুই দিন কেবল এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। রোববার লেনদেন ছিল ৬৬০ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর