বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উল্টো হেঁটে সাত মাস আগের চিত্র পুঁজিবাজারে

  •    
  • ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:২৭

দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ –ডিএসর প্রধান সূচক কমেছে ৯০ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। সাত মাস আগে গত ২৭ জুলাই লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি টাকা।

গত বছরের শেষ আর চলতি বছরের প্রথম মাসে পুঁজিবাজারে যে রমরমা অবস্থা দেখা দিয়েছিল, সেটি উবে গেছে আগেই। বিনিয়োগকারীরা এখন দেখছেন, কত পড়বে বাজার।

শেয়ারের দাম ক্রমাগত কমতে থাকায় কমছে সূচক। মন্দা বাজারে দাম কমে ভালো শেয়ারেরও। আরও কমতে পারে, এই আশঙ্কায় হাত গুটিয়ে বসে নতুন বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী।

এই অবস্থায় লেনদেন কমতে কমতে সাত মাস আগের অবস্থানে গিয়ে ঠেকেছে।

দুই দিনের সাপ্তাহিক আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটির কারণে তিন দিন বন্ধ থাকার পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার শুরুতেই সূচক বাড়লেও ১৫ মিনিট পর থেকেই কেবল কমেছে।

দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ –ডিএসর প্রধান সূচক কমেছে ৯০ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা।

এর আগে করোনা সংক্রমণে বন্ধ করে দেয়া বাজার খোলার পর গত ২৭ জুলাই লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি টাকা।

কেন হঠাৎ এমন পতন

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ৪০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এটি বর্তমান বাজারের পরিপ্রেক্ষিতে খুবই কম।

ব্যাংকগুলোকে পুঁজিাবজারে বিনিয়োগের জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে। তারা কতটুকু বিনিয়োগ করেছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সূচকের উত্থানপতনে এখন বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই আতঙ্কিত। এটা থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। এ জন্য নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনা করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের শেয়ার যে দামে আছে তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ লভ্যাংশ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। কিন্তু তারপরও কেন আগ্রহী নন বিনিয়োগকারীরা তা আমারও বোধগম্য নয়।’

লেনদেন কমার কারণ কী হতে পারে, এমন প্রশ্নে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘নতুন কিছু কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনেক অর্থ আটকে গেছে। রবির দর আরও কমেছে। নতুন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর কিছুটা বাড়লে হয়তো বাজার আবার চাঙা হবে।’

খাতভিত্তিক অবস্থা

ব্যাংক খাতের ৩০ ব্যাংকের মধ্যে শেয়ারের দর বেড়েছে ‍মাত্র ২টির। কমেছে ১১টির। বাকি ১৭টি ব্যাংকের শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিমা খাতের লেনদেনে ছিল একই চিত্র। ৪৯টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৩টির। কমেছে ৪টির। বাকি ৪২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২টির। কমেছে ১৮টির। অপরিবর্তিত ২২টির।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১টির, অপরিবর্তিত ৫টির। বাকি ১৫টির দর কমেছে।

কী অবস্থা ব্ল চিপ কোম্পানির

পুঁজিবাজারে প্রায় সাড়ে তিন শ কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত থাকলেও তার থেকে বাছাই করে ত্রিশটি কোম্পানি নিয়ে গঠন করা হয়েছে ব্ল চিপ সূচক।

সেখানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আর্থিক অবস্থা সবচেয়ে ভালো, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার অন্যদের জন্য উদাহরণ সেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত।

ভালো লভ্যাংশসহ এসব কোম্পানির স্থিতিশীল বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে চিহিৃত করা হয়।

সোমবার লেনদেনের পাশাপাশি তলানিতে নেমেছে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস

এই কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত এমন ব্ল চিপ ৩০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির। বাকি ২৬টির দর কমেছে।

সোমবার ব্ল চিপ সূচকে সবচেয়ে বেশি কমেছে সিটি ব্যাংকের ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এরপরেই ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড (বেট বাংলাদেশ) ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বেট বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৫৫ টাকা।

লেনদেনে এগিয়ে থাকলেও বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের দর কমেছে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।

ব্র্যাক ব্যাংকের ২ দশমিক ২২ শতাংশ, বিএসআরএম লিমিটেডের ১ দশমিক ৪০ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দর কমেছে।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সস ৯০ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে যাওয়ায় বর্তমান অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২০ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২২২ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৪৮ দশমিক ২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৭ পয়েন্ট।

লেনদেন হওয়া ৩৪৩টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ২৩টির, কমেছে ২১৯টির ও পাল্টায়নি ১০১টির।

যে ১০১টির দর কমেনি, তার মধ্যে অন্তত ৮৪টি কোম্পানির দর এর চেয়ে কমা সম্ভব নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইসেই আছে এগুলোর দাম।

লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬৯৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ২২৭ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ–সিএসই প্রধান সূচক ডিএসএসপিআই ২৫৬ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৬৪ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া ১৮৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬টির, কমেছে ১২২টির ও পাল্টায়নি ৩৮টির। লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি টাকা।

আগ্রহ-অনাগ্রহের কোম্পানি

মন্দা বাজারে সোমবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছিল বি ক্যাটাগরির কোম্পানি আলহাজ টেক্সটাইল, যার শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ।

এই কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতাই ছিল না।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওয়ালটনের শেয়ার দর ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়েছে।

ইউনিলিভারের শেয়ার দর বেড়েছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ।

গোল্ডেনসনের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

দর বৃদ্ধির তালিকায় আরও আছে আরডি ফুড, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, রেকিডবেনকিউজার, এম আই সিমেন্ট।

দর পতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, যার দর কমেছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

নতুন শেয়ার মীর আকতার হোসাইন লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

রবির শেয়ারদরও কমেছে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দাম কমে হয়েছে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সা।

সবচেয়ে বেশি দর পতনের তালিকায় আরও ছিল জুট স্পিনার্স, সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইনস্যুরেন্স, তাওফিকা ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (লাভেলো আইসক্রিম) ইত্যাদি।

লেনদেনে এগিয়ে যেসব কোম্পানি

শেয়ার দর কমলেও লেনদেনের শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছিল বেক্সিমকো লিমিটেড।

কোম্পানিটির ১ কোটি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৫ কোটি টাকায়।

রবির ৯৫ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি টাকায়।

লংকাবাংলা ফিন্যান্সের মোট ৭১ লাখ ৬৭ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি টাকায়।

এ বিভাগের আরো খবর