পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির দুই মাসের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের হতাশ করল বহুজাতিক টেলিকমিউনিকেশন খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা।
আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি আয় আট গুণ বেড়ে ৩৩ পয়সা আয় করলেও বিনিয়োগকারীদের এ থেকে কোনো লভ্যাংশ দেবে না কোম্পানিটি।
গত ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে রবি তালিকাভুক্তির পর এটি ভালো কোম্পানি হিসাবে ভবিষ্যতে ভালো লভ্যাংশ পাওয়া যাবে আশায় হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার টানা ১৪ কার্যদিবস বেড়ে হয় ৭৭ টাকা। কিন্তু এরপরই হয় মূল্যপতন।
সোমবার আগের দিনের তুলনায় সর্বোচ্চ সংখ্যা দর বেড়ে ৪৬ টাকা হলেও এই শেয়ারটি বিনিয়োগাকরীদের শত শত কোটি টাকা লোকসানে ফেলেছে। পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেন কমে যাওয়ার পেছনে যতগুলো কারণ আছে, তার মধ্যে রবির মূল্যপতনও একটি।
দাম কমে যাওয়ায় রবির শেয়ার কিনে ৮০০ কোটি টাকারও বেশি লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের একটি বড় অংশই শেয়ার বিক্রি না করে ধরে রেখেছেন।
তবে সোমবার কোম্পানি বোর্ড সভায় লভ্যাংশ আসতে পারে এমন প্রত্যাশাই করেছিলেন শেয়ারধারীরা। কিন্ত বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে রবির পরিচালনা পর্ষদ সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ বিতরণ না করে আয় কোম্পানির রিজার্ভে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৩৩ পয়সা। এ হিসেবে মুনাফা দাঁড়ায় ১৭২ কোটি ৮৫ লাখ ১৮ হাজার টাকার কাছাকাছি।
এই আয় কোম্পানিটির বর্তমান রিজার্ভ ১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকায় যোগ হবে।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে রবির আয় গত বছরের তুলনায় বেশি। গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করেছিল চার পয়সা।
পরিচালনা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য বেড়েছে। গত বছর সম্পদমূল্য ছিল ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর তা বেড়ে হয় ১৩ টাকা ৯০ পয়সা।
পরিচালনা পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেয়া হবে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই।
লভ্যাংশ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ায় মঙ্গলবার রবির শেয়ার মূল্যে কোনো সীমা থাকবে না। এটা বাড়তে পারে যে কোনেআ অংকে, কমার ক্ষেত্রেও কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না।
পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৮ মার্চ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিশোধিত মূলধন রয়েছে এই কোম্পানিটির। পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর শেয়ার সংখ্যা ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকারও বেশি।
শেয়ারের ৯০ দশমিক ০৫ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২ দশমিক ০৩ শতাংশ শেয়ার। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ধারণ করেছেন ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ শেয়ার।