বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হারালেন শাহ আলম

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২০:২২

বিদেশে পলাতক দুর্নীতি মামলার আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আসার পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়।

ঘুষ নিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য চাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-২ এর দায়িত্ব থেকেও।

বিদেশে পলাতক দুর্নীতি মামলার আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আসার পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আদালতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হকের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শাহ আলমের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগ আমলে নিয়ে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি বিভাগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শাহ আলম এখন থেকে ফাইন্যান্সিয়াল স্টাবিলিটি বিভাগ, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স বিভাগ ও স্পেশাল স্টাডিস সেলের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আদালতের কাছে দেওয়া ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাশেদুল হকের স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, শাহ আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকাকালে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং নামের দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছিলেন।

এ স্বীকারোক্তিকে সামনে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের তৈরি করা এক তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পরপরই শাহ আলমকে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিভাগ থেকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে দুদকের একটি দল ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হককে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিলে তিন দিন পর গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রাশেদুল হক দাবি করেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা অনিয়ম চাপা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে ঘুষ দিতে হতো।

এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেওয়া হতো ২ লাখ টাকা করে। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব অনিয়ম ‘ম্যানেজ’ করতেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর এস কে সুর চৌধুরী।

পি কে হালদারের নির্দেশে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ভুয়া ঋণ দিয়েছেন বলেও স্বীকারোক্তি দেন রাশেদুল হক।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশেদুল হক মালেশিয়া থেকে বিবিএ পাস করে ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং-এ প্রবেশনারী অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬-০৭ সালে আইআইডিএফসি নামের অন্য একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এভিপি হিসাবে প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের অধীনে চাকরি করেন তিনি।

২০১১-১২ সালে তিনি রিলায়েন্স ফিন্যান্সে এসভিপি হিসাবে যোগ দেন এবং প্রশান্ত কুমার হালদারের অধীনে চাকরি করেন। পি কে হালদার এক সময় রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি হন। সেখান থেকেই পি কে হালদারের অপকর্মের শুরু।

দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানিগুলোর তদারকি করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মাধ্যমে। ২০১৩ সালে ওই বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পান শাহ আলম।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পদোন্নতি পেয়ে একই বিভাগের নির্বাহী পরিচালক হন তিনি। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়। এসব দুর্নীতিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার।

এ বিভাগের আরো খবর