সপ্তাহের শুরুতে বিমা কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের যে আগ্রহ দেখিয়েছিল সোমবারও তা অব্যাহত আছে। সবচেয়ে দর বৃদ্ধি পাওয়া ২০ কোম্পানির মধ্যে আটটিই ছিল এ খাতের। আগের দিনের মতোই পতন হয়েছে ব্যাংকের শেয়ারের।
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে –ডিএসইতে সিংহভাগ শেয়ারের দর ও সূচকের পতনের দিন তালিকাভুক্ত ৪৯টি বিমা কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৬টি কোম্পানির, কমেছে ২০টির, বদলায়নি তিনটির দর।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সদ্য তালিকাভুক্ত ক্রিস্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৬.১৩ শতাংশ।
অন্যদিকে টানা দ্বিতীয়দিন দরপতন হলো ব্যাংক খাতে। তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে দাম বেড়েছে পাঁচটির, বদলায়নি তিনটির আর বাকি ২২টিই দর হারিয়েছে।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ব্যাংকের শেয়ারের দর কম হলেও এর দাম তেমন বাড়ে না। এছাড়া হঠাৎ একদিন বা দুদিন দর বাড়লেও তা স্থায়ী হয় না। আবারও তা কমে আসে।
তারা বলছেন, পুঁজিবাজারে বিমা, জ্বালানি, ওষুধ ও রাসয়ন খাতের কোম্পানিতে বিনিয়োগে মুনাফা থাকায় সবাই সেসব কোম্পানির শেয়ার কিনছেন।
বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে আবার বেক্সিমকো লিমিটেড। একদিনে কোম্পানিটির সাড়ে তিন কোটির বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩০ কোটি টাকায়। লেনদেনের ২০ শতাংশের বেশি এই একটি কোম্পানির।
কোম্পানি তাদের অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৭২ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৩ পয়সা।
এমন খবরে লেনদেনের শুরু থেকেই চাঙ্গাবস্থায় থাকে কোম্পানিটি।
বিনিয়োগকারী আবু সালেহ বলেন, ‘ইপিএস ভালো হওয়ায় বলা যায় কোম্পানির আয় ভালো হয়েছে। এতে বছর শেষে কোম্পানিটি বিনিয়োগাকরীদের ভালো লভ্যাংশ দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। মূলত এই মনস্তাত্তিক ধারণা থেকেই বিনিয়োগকারীরা এই কোম্পানির শেয়ারের প্রতি আগ্রহী।’
লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো ফার্মা, যার ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫২ কোটি টাকায়। তৃতীয় অবস্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মার ৪৩ লাখ ১৮ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০২ কোটি টাকায়। তারপরেই ছিল রবি, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, সামিট পাওয়ার ও জিবিবি পাওয়ার।
সূচক ও লেনদেন
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫.৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৯ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক দশমিক ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৯৬ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক আট দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০২ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ২০২টির ও পাল্টায়নি ৮১টির।
এদিন মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ১২৭ কোটি টাকা বেশি। রোববার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের-সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১০৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮৭৮ পয়েন্টে।
এদিন লেনদেন হওয়া ২৫৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ১৪৬টির ও পাল্টায়নি ৪৮টির। লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
দর বেড়েছে কমেছে
এদিন ৯.৯৭ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়ে শীর্ষে ছিল এ্যানার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আরএকে সিরামিকের শেয়ারের দর বেড়েছে ৯.৮৯ শতাংশ।
ক্রিস্ট্যাল ইন্স্যুরেন্সের ৬.১৩ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের ৬.০২ শতাংশ দম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দর বাড়া কোম্পানির তালিকায় আরও আছে ডমিনেস, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ারফার্মা, পদ্মা অয়েল, আমান কটন ও মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স।
দর পতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সিঅ্যান্ড এ টেক্সটাইল, জিবিবি পাওয়ার, জুট স্পিনার্স, ফ্যামিলিটেক্স, সাইফপাওয়ার ও সিটি ব্যাংক।