আট বছরের টানা-হেঁচড়ার পর অবশেষে আলোর মুখ দেখল নতুন কাস্টমস আইন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আনা ‘কাস্টমস আইন, ২০২১’- এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের -এনবিআর কর্মকর্তরা বলেছেন, মন্ত্রিসভা অনুমোদনের পর এটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সংসদে পাসের পরই বাস্তবায়ন হবে।
এনবিআর বলেছে, এ আইনের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কাস্টমস বিভাগকে পুরোপুরি অটোমেশন করা। এতে পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় কোনা ধরনের ম্যানুয়াল বা প্রচলিত প্রথা থাকবে না। আইনটি কার্যকর হলে দ্রুত পণ্য খালাস হবে। কমবে শুল্ক ফাঁকি। হয়রানি থেকে মুক্ত হবেন ব্যবসায়ীরা।
১৯৬৯ সালের বিদ্যমান কাস্টমস আইনটি বেশ জটিল ও সনাতনি। নতুন আইনটি আধুনিক ও যুগোপযোগী।
এ আইনটি তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর, বিনিয়োগবান্ধব, ঝুঁকিব্যবস্থাপনাভিত্তিক ও দ্রুত পণ্য খালাস উপযোগী।
এতে শুল্ক ফাঁকি রোধে বেশি জোর দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, অপরাধ ও শাস্তিসংক্রান্ত বিধান সহজ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে এটা নিয়ে টানাহেঁচড়া হচ্ছে। এর আগে কাস্টমস আইন, ২০২০- নামে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। যেহেতু ফেরত এসেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সংশোধন করে উত্থাপন করা হয়েছে।’
কাস্টমস মূল্য, অ্যাসেসেবল ভ্যালু এবং ইলেকট্রনিক ডাটা, মুদ্রা ও দলিলপত্র সংযোজন করা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘যা আগের আইনে ছিল না।’
বিশদ আলোচনা শেষে মন্ত্রিসভা আইনটি অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, ‘ভেটিংয়ের আগে আইন মন্ত্রণালয়কে মন্ত্রিসভার সাথে আলাপ-আলোচনা করতে বলা হয়েছে।’
১৫টি নতুন মিড ওয়াটার ট্রলার বাড়ানোর অনুমোদন বাতিল
বঙ্গোপসাগরে একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় ট্রলারের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রিসভার আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই মন্ত্রিসভা বঙ্গোপসাগরে একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় ট্রলারের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।
‘সে সময় বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু আহরণ, সংরক্ষণ এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ১৫টি নতুন মিড ওয়াটার ট্রলার বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।’
তবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও কোনো ট্রলারের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি বলে জানান সচিব। বলেন, ‘পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল তৎকালীন মৎস্য মন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেন যে বটম ওয়াটার ট্রলারকে মিড ওয়াটার ট্রলার করার জন্য আদেশ দেওয়া হোক। মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’