স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে। এ পর্যন্ত পাঁচবার সংশোধন করে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়। তারপরও শেষ হয়নি কাজ।
এখন আবার নতুন করে প্রকল্প সংশোধন করতে চায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয় মঙ্গলবার।
কিন্তু আপত্তি জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জানতে চান, এত বছরেও কেন কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের বিলম্বে প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর কারণ খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
একনেক সভা শেষে শেরে বাংলা নগরে এনইসিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এ অনুশাসনের কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়ায় মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পটি এননেক সভায় অনুমোদন পায় ২০১২ সালে। ওই বছরই কাজ শুরু হয়। আট বছর চলে গেল। কাজ শেষ হয়নি এখনও।’
মন্ত্রী আরও জানান, প্রকল্পটি আবার সংশোধনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে খুবই অসন্তোষ ও বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ নতুন করে সংশোধনের যৌক্তিকতা তুলে ধরলে তা গ্রহণ করেননি প্রধানমন্ত্রী। এতে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কিনা, তা তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিলম্বে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে এর আগেও অনেকবার বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রবণতা দূর করতে চান তিনি।’
বর্তমান সরকার মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে এ কথা জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ বিষয়ে আগ্রহী। কিন্তু কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন প্রকল্পটির বাস্তবায়নের বিষয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, এ প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক শিগগিরই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এর প্রতিবেদন গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এ প্রকল্পের কাজ একাধিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে কেন, জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ বিভাগের (আইএমইডি) সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। বাস্তবায়নকারী সংস্থাই ভালো বলতে পারবে।
সচিব আরও বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় আইএমইডি একবার মূল্যায়ণ করে। এতে কিছু ক্ষেত্রে অযৌক্তিক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আইএমইডি তা ঠিক করে দেয়। প্রকল্পের কাজ তো ফেলে রাখা যাবে না। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।’