বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধসের ১০ বছর: ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় পুঁজিবাজার

  •    
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:৩৬

পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। গঠন করে তদন্ত কমিটি। বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ভেঙে দেয়া হয় কমিশন। দায়িত্ব দেয়া হয় নতুন নেতৃত্বকে। কিন্তু তাদের কথা ও কাজের অমিলে বাড়ে আস্থাহীনতা। ফলে দশক পেরুলেও পুরোপুরি গতি ফেরেনি বাজারে।

৫ ডিসেম্বর ২০১০। এ দিন দেশের পুঁজিবাজারের সাধারণ মূল্যসূচক ওঠে সর্বোচ্চে। রেকর্ড গড়ে লেনদেনেও। কিন্তু পরদিন থেকেই শুরু পতনের, এক পর্যায়ে যা রূপ নেয় মহাধসে।

পুঁজি হারিয়ে রাজপথে নেমে আসেন বিনিয়োগকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। গঠন করে তদন্ত কমিটি। বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ভেঙে দেয়া হয় কমিশন। দায়িত্ব দেয়া হয় নতুন নেতৃত্বকে। কিন্তু তাদের কথা ও কাজের অমিলে বাড়ে আস্থাহীনতা। ফলে দশক পেরুলেও পুরোপুরি গতি ফেরেনি বাজারে।

কেমন ছিল মহাধসের শুরু

১ ডিসেম্বর ২০১০। ডিএসইর সূচক দাঁড়ায় আট হাজার ৭২৩ পয়েন্ট। লেনদেন হয় দুই হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। ২ ডিসেম্বর সূচক ১০০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে পৌঁছে আট হাজার ৮৩৮ পয়েন্টে।

শুক্র-শনি দুদিনের  সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ৫ ডিসেম্বর সূচক পৌঁছে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, আট হাজার ৯১৮ পয়েন্টে। লেনদেন হয় তিন হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ ডিসেম্বর থেকে পাল্টে যেতে থাকে চিত্র। ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে সূচক, কখনও একশ কখনও দুইশ পয়েন্ট করে কমে।

১৯ ডিসেম্বর এক দিনেই সূচক কমে ৫৫২ পয়েন্ট। আর ১০ জানুয়ারি রীতিমত সূচক পতনের রেকর্ড হয়, কমে ৬৩৬ পয়েন্ট। আর এতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে মহাধসের চিত্র।

মাঝখানে দুয়েক দিন বাড়লেও, এক মাসের ব্যবধানে সূচক কমে এক হাজার পয়েন্টের বেশি। লেনদেন নেমে আসে এক হাজার কোটি টাকার ঘরে, এক পর্যায়ে যা গিয়ে ঠেকে দুই-তিনশ কোটি টাকায়।

ওই সময়ের তদন্ত কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সে সময় যেসব সুপারিশ করেছিলাম, তা নিয়ে খুব একটা কাজ হয়নি। সেই সুপারিশ দিয়ে বর্তমান পুঁজিবাজার যাচাই করা আসলেই কঠিন। প্রেক্ষাপট পাল্টেছে, এখন দরকার নতুন সুপারিশ।‘

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে আগের কমিশনের (ড. খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন) কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। শুনেছি নতুন কমিশন খুবই কাজ করছে। এখন দেখার বিষয় তারা কতটা সফল হয়।’

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ধসের পর অনেক আইন-কানুন হলেও, এখনও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ধসের পর পুঁজিবাজারের অনেক কিছুরই উন্নতি হয়েছে। যদিও সূচক পাঁচ হাজারের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। তবে এ সময়ে ওয়ালটন, রবির মতো বড় কোম্পানি ছাড়াও, বেশ কিছু নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, এটা ভালো।‘

মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘আগের কমিশন বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পারেনি। তবে নতুন কমিশন আস্থা ফেরাতে যেভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন তাতে আমি আশাবাদী।’

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ধসের পর অনেক আইন-কানুন হলেও, এখনও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। ফলে তাদের মাঝে যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে, নানা চেষ্টার পরও তা এখনও কাটেনি।

ধসের পর নতুন যা

পুঁজিবাজারে ধসের পর ডিএসইর বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্য ও পরিচালকের নাম আসে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। অভিযোগ ওঠে, বাজারের নীতি নির্ধারণে অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটান তারা। তাই দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনাকে (ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন) আলাদা করার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

সেই সুপারিশ মেনেই ডিমিউচ্যুয়ালাইজ করা হয় স্টক এক্সচেঞ্জকে। কিন্তু সরকার মনোনিত পরিচালকদের নিষ্ক্রিয়তায় কাজের এখনও ব্যবস্থাপনার ওপর প্রভাব কমেনি ব্রোকারেজ হাউজের মালিকদের।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের এককভাবে দুই শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা জারি করা হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় উল্টো আস্থা কমেছে।

অবশ্য বর্তমান কমিশন আল্টিমেটাম দিয়েছে ৮ নভেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ারে ধারণে ব্যর্থ হলে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে।

আবারও বাজারমুখী হতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা।

ধীরে হলেও আস্থা ফিরছে

নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর আবারও বাজারমুখী হতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে শেয়ারের মূল্যসূচক ও লেনদেন। গত মে মাসের ড. শিবলী রুবাইত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর সাত মাসে ডিএসইর সূচক বেড়েছে প্রায় এক হাজার পয়েন্ট। আর লেনদেন ২০০ কোটির নিচ থেকে এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। 

এ বিভাগের আরো খবর