পেঁয়াজ ও আলুর দাম ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে কম বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আসছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, দাম এখনকার তুলনায় কিছুটা কমবে। তবে তা ৫৫ এর কমে আসবে না।
রোববার রাজধানীতে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ‘কলকাতার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৭ রুপি অর্থাৎ ৫৫ টাকা। তার মানে আলু, পেঁয়াজের দাম আমাদের দেশের চেয়েও বেশি ভারতে।’
- আরও পড়ুন: কলকাতায় আলু ৪৫, পেঁয়াজ ১১৫
গত দুই বছর ধরে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ে আলোচনা চলছে। চলতি বছর সবজির পাশাপাশি আলুর নজিরবিহীন দাম বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। সরকার দাম বেঁধে দিয়েও তা কার্যকর করতে পারছে না।
অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: নিউজবাংলা
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর সংকট এবং দাম বেড়ে যাওয়ায় রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। তারা আগে থেকে আমাদের কিছু বলল না। হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছে।’
গত বছরের ধারাবাহিকতায় ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার পর চলতি বছরও দাম বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার বৃদ্ধির হার কম।
এবার সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে দ্রুত। ব্যবসায়ীরাও বিকল্প দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানির ঘোষণা এসেছে। আবার সরকার ট্রাকের পাশাপাশি অনলাইনেও পেঁয়াজ বিক্রি করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছরের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। ওই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার আগে থেকেই আমরা প্রস্তুত ছিলাম।
‘সংকট সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সহযোগিতায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তিন দিন আগে থেকে দেশে পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে।’
এরই মধ্যে কিছু পেঁয়াজের চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। ফলে সরকার আশা করছে অচিরেই দাম কমে আসবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হিসাব করে বলেছি, আমদানি করা পেঁয়াজ ৫৫ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না। এখন আপনারা অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন আসলে সঠিক দাম কিনা। আপনাদের সঠিক তথ্যই বাজার সহনীয় হবে।’
- আরও পড়ুন: পেঁয়াজ এখন রাজনৈতিক ইস্যু: কৃষিমন্ত্রী
এই দামে নামলে সেটা ভোক্তার জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তিকর হবে। কারণ বর্তমানে বাজারভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।
বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় ৮ থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের ঘাটতি হয়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে এই ঘাটতি দেখা দেয়। এর ৯০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা হয় ভারত থেকে আমদানি করে।
কিন্তু বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় বর্তমানে ভারতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশটি এবার আমদানি করছে। আলুর জন্য ভুটানের দিকে তাকিয়ে তারা।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতবার থেকে শিক্ষা নিয়েছি আমরা। এবার সঠিক সময়ে শিক্ষা নেয়ায় (পেঁয়াজের বাজার) তেমন অস্থির হয়নি।’
সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়ায় মহামারির মধ্যেও তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘এই শিল্পের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে জড়িত। এক সময় বিজিএমইএর সভাপতি ছিলাম। এই খাত সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা রয়েছে।’