করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে গঠিত প্রণোদনা প্যাকেজের আকার আরো সাত হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা করেছে সরকার।
এই সাত হাজার কোটি টাকা থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল, রফতানি প্রকিয়াকরণ অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে স্থাপিত সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন বা যৌথমালিকানাধীন বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্যাকেজের আকার ৩৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এই ঋণ বিতরণের জন্য নতুন করে কিছু নির্দেশনা দিয়ে এক সার্কুলার জারি করেছে।
প্রণোদনা প্যাকেজে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া ও তহবিলের আকার বাড়ানোর ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বাইরের দেশগুলো দেখুক, আমরা কেবল নিজেদের দেশের শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচাতে এগিয়ে আসিনি। এ দেশে অবস্থিত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সহযোগিতা করছি। এই করোনায় কিন্তু বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
স্বল্প সুদের এই চলতি মূলধন ঋণ পেলে বিদেশি খাতের বেশ কিছু বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্বাহী পরিচালক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ওই প্যাকেজের আওতায় প্রায় ২৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
গ্রাহক পর্যায়ে এই তহবিলের ঋণের সুদ পড়ে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। বাকি ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংকগুলোকে দেবে।
এই প্যাকেজের ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোকে উৎসাহ দিতে ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিলও গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতনের জন্য গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকায় তিন মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় পরবর্তীতে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে জুলাই মাসের বেতনের জন্য ঋণ দেওয়া হয়। এ কারণে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিলে আরো ৩ হাজার কোটি টাকা যোগ করা হয়। এখন এই তহবিলের আকার বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হলো।