দেশের গো-খামারিদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে বিদেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়ে দেশীয় মাংস উৎপাদন খাত রক্ষায় ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
দেশেই এখন মানসম্মত গরু উৎপাদন হচ্ছে দাবি করে সংগঠনটির নেতারা বলেন, এ খাতে বড় বিনিয়োগ হওয়ায় মাংস উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে।
তারা বলেন, বিদেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি করায় দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের রক্ষায় অবিলম্বে বিদেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি বন্ধ করতে হবে।
ক্রেতারা দেশি গরুর মাংস কিনতে চায় না অভিযোগ করে অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রাবাড়ী থানার সভাপতি এস এম শাহনুর বলেন, ‘হিমায়িত মাংসের দাম কম। দেশি গরুর মাংসের দাম বেশি। দেশে গোখাদ্যসহ খামারে গরু পালন ও বিক্রির খরচ বেড়ে গেছে। এসব কারণে গরুর দামও আমরা কমাতে পারছি না।’
গাবতলী গরুর হাট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীসহ সারাদেশে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে এখন আমদানি করা মাংস খাওয়ানো হচ্ছে। এ কারণে দেশি গরুর বিক্রি কমে গেছে। এতে আমরা সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে আমদানি নীতি অনুযায়ী ৩৩ শতাংশ শুল্ক দিয়ে হিমায়িত মাংস আমদানি প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেন সংগঠনটির নেতারা।
সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন এই আমদানি প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে সারাদেশের খামারিদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।
এগুলো হলো-
১. টিসিবির মাধ্যমে পশুখাদ্য আমদানি করে প্রতিটি উপজেলায় খামারিদের মধ্যে দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা করা।
২. মাংস শিল্পকে রক্ষায় ভারত থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি বন্ধ করা।
৩. পশু খামারের বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক হারের পরিবর্তে কৃষি খাতের হার অনুযায়ী নির্ধারণ করা।
৪. খামার পর্যায়ে ২০ বছর আয়কর ছাড় দেয়া।
৫. গুঁড়া দুধ আমদানিতে শুল্ক হার শতভাগ করা।
৬ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে গুঁড়া দুধের প্ল্যান্ট নির্মাণ করে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দেয়া।
৭. দেশীয় দুধ ও কাঁচামাল দিয়ে কনডেনসড মিল্ক তৈরি করা।
৮. খামারিদের বিনা জামানতে কম সুধে ঋণ সুবিধা দেয়া।
৯. ডেইরি বোর্ড গঠন করা।
১০. পশুর টিকা, ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা সহজতর করে বিনামূল্যে দেয়া।