বলিউডের সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন। তাকে বলা হয় ‘বিগ বি’। পেশাগত সাফল্য ছাড়াও বচ্চন পরিবারকে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং রাজকীয় বলিউড পরিবারগুলোর মধ্যে একটি হিসাবেও বিবেচনা করা হয়। প্রায় ষাট বছর ধরে এ বলিতারকা তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন। বয়স ৮০-এর কোটা পার করেছেন আরও দুবছর আগে। অথচ এখনো কত সাবলীল পর্দায়। এগিয়ে চলছেন বেশ দৃঢ়ভাবে এবং রুপালি পর্দায় স্থায়ী ছাপ রেখেই চলেছেন। ১৯৭৩ সালে অমিতাভ জয়াকে বিয়ে করেন, যিনি একজন অসাধারণ বাঙালি নারী। তাদের দুই সন্তান শ্বেতা এবং অভিষেক বচ্চন তাদের আশীর্বাদ। অভিষেক সাবেক বিশ্বসুন্দরী বলিউডের অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাইকে বিয়ে করেন, আর শ্বেতা ব্যবসায়ী নিখিল নন্দাকে বিয়ে করেন। জয়া এবং অমিতাভ হলেন নব্য নভেলি নন্দা, অগস্ত্য নন্দা এবং আরাধ্য বচ্চনের গর্বিত দাদা-দাদি। বছরের পর বছর ধরে তাদের অনবদ্য খ্যাতি সত্ত্বেও, মাঝে মাঝে বচ্চনদের সঙ্গে জড়িত এমন কিছু ঘটনার খবর এবং প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, যা ভক্তদের কৌতূহলী করে তোলে। এ রকম একটি ঘটনা হলো, অমিতাভ বচ্চন একবার পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নামে একটি কলেজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি তার নির্মাণকাজও শুরু হয়েছিল, কিন্তু পরে তা পরিত্যক্ত বলে জানা গেছে। কিন্তু কেন?
২০০৮ সালে যখন অমিতাভ বচ্চন ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাবাঁকির দৌলতপুর গ্রামে যান, তখন তিনি তার নববিবাহিত পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নামে একটি ডিগ্রি কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ওই সময় তার সঙ্গে অভিষেক বচ্চন, জয়া বচ্চন এবং ঐশ্বরিয়া যোগ দেন। এছাড়া সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিং যাদব এবং অমর সিংও সেসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ২০১২ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘ঐশ্বরিয়া বচ্চন গার্লস ইন্টার কলেজ ফর আপার সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস’ রাখা হয়। বিগ বি তখন ভবন নির্মাণের জন্য ৫ লাখ টাকার একটি চেকও দিয়েছিলেন। জানা গেছে, অমিতাভ সেসময় জয়া বচ্চনের নেতৃত্বে পরিচালিত নিষ্ঠা ফাউন্ডেশন নামে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে কলেজটি নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ইন্টারনেটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, নিষ্ঠা ফাউন্ডেশন কলেজটি নির্মাণ করেনি এবং পরে অমিতাভ বচ্চনের সেবা সংস্থাকে এজন্য দোষারোপ করা হয়েছে। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রামবাসী ধৈর্য ধরে কলেজটি নির্মাণের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, কোনো নির্মাণ কাজ হয়নি। প্রতিবেদনগুলো ভাইরাল হলেও, কী ঘটেছিল তার কোনো লিখিত প্রমাণ বা সর্বশেষ কারও দ্বারা ঘটনার কোনো বিবরণ পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পটি শুরু হওয়ার জন্য ব্যর্থ হলেও গ্রামবাসী কিন্তু বসে থাকেননি। বিগ বির ফাউন্ডেশন কলেজের কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, দৌলতপুরের বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন। কলেজটি নির্মাণের জন্য সেখানকার গ্রামের শিক্ষকের বাবা দশ হাজারেরও বেশি বর্গমিটার জায়গা দান করেন। গ্রামবাসী অমিতাভ বচ্চন কলেজের প্লটের কাছে একটি কলেজ তৈরি করেছিলেন। একটা সময় সেটি চালুও করেন তারা। তবে বিগ বি কেন প্রকল্পটি ছেড়ে দিয়েছিলেন তা এখনো অজানা। এ নিয়ে তিনি কোনোদিন ব্যাখ্যাও দেননি, বা সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্যও করেননি।