৪৬তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদশি সিনেমা ‘নির্বাণ’। গত মঙ্গলবার উৎসবের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে সিনেমাটির অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
নির্বাণের নির্মাতা আসিফ ইসলাম। সিনেমাটির গল্প নিয়ে তিনি জানান, মানবিক আবেগের একটি কাব্যিক অন্বেষণ ‘নির্বাণ’। শান্তির খোঁজে বের হওয়া তিন ব্যক্তির একটি অসাধারণ যাত্রা। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ফাতেমা তুজ জোহরা ইভা, প্রিয়ম অর্চি, ইমরান মাহাথিসহ অনেকে।
বড় বড় একাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রধান মুখ হিসেবে কাজ করলেও নিজের অভিনীত প্রথম সিনেমা আন্তর্জাতিক উৎসবে জায়গা করে নেয়ায় ভীষণ উচ্ছ্বসিত ইভা।
সিনেমাটিতে নিজের যাত্রা নিয়ে উদীয়মান এ অভিনেত্রী বলেন, ‘নির্বাণে আমার চরিত্রের নাম মায়া। এই মায়া আর ব্যক্তি ইভা একদমই আলাদা দুই চরিত্র।’
‘“নির্বাণ’-এর মায়ার বয়স আমার চেয়েও বেশি। বয়সের ভারিক্কি আনতে বেগ পেতে হয়েছে আমাকে। কারণ মায়া আর আমি ব্যক্তি ইভা একেবারেই আলাদা”, বলেন ইভা।
‘আমরা এক মাস গাজীপুরে ট্রান্সফর্মার ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছি। আমি বেসিক্যালি ট্রান্সফর্মারের কোর জিনিসপত্র বানানো শিখছি, বানিয়েছি। টাইম মেইনটেইন করেই অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করেছি, যাতে আমাদের আলাদা না লাগে। এই দীর্ঘ সময়ে আমার কো অ্যাক্টরদের সঙ্গে ভীষণ ভালো বন্ডিং হয়েছে, যা কাজেও হেল্প করেছে’, যোগ করেন অভিনেত্রী।
সিনেমার শুটিংয়ের সময়ের কিছু ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নবীন এ অভিনেত্রী বলেন, ‘নির্বাণের একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে এ সিনেমায় আমাদের কোনো স্ক্রিপ্ট ছিল না। আমাদের সিচুয়েশচন বলে দেয়া হতো। সেই অনুযায়ী আমরা অভিনয় করতাম, তবে ক্যারেকটারের বায়োগ্রাফি ছিল প্রত্যেকেরই শক্তপোক্ত।
‘আসিফ ভাই (নির্মাতা) অধিকাংশ দৃশ্যই এক টেকে (একবারে) ওকে করেছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। কেননা আমরা যখন বারবার একই সিন করতে থাকি, একটা সময়ে গিয়ে সেটা মেকি হয়ে যায়।’
এরই মধ্যে আরও তিনটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন ইভা, তবে সেসব নিয়ে এখনই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা বারণ নির্মাতাদের। যেমনটি ছিল তার প্রথম সিনেমা নির্বাণের ক্ষেত্রেও।
সিনেমা নিয়ে আলাদা আবেগের কথা জানিয়ে ইভা বলেন, “আমার ক্যারিয়ারে ‘নির্বাণ’ একটা আলাদা জায়গায় থাকবে সবসময়। আসলে প্রত্যেকটা চরিত্রেরই আলাদা আলাদা জায়গা থেকে যায় আমাদের মধ্যে, তবে মায়া, তার মায়া আমি কাটাতে পারব না।
“মায়ার যন্ত্রণা, মায়ার কষ্ট এসবই আমার কাছে গচ্ছিত থেকে যাবে। আশা করি এই সিনেমা মস্কো অভিযানের পরও নানান দেশ জয় করবে। আমি অধীর আগ্রহে আছি কবে আমাদের দেশে সবাই মিলে সিনেমাটা দেখব।”
মস্কো উৎসবের ৪৬তম আয়োজন শুরু হবে ১৯ এপ্রিল, যা চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। উৎসবে যোগ দিতে ১৮ এপ্রিল মস্কোর উদ্দেশে রওনা দেবেন নির্মাতা আসিফ ইসলাম। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পাশাপাশি পুরো আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন তিনি।