ভারতীয় অভিনেত্রী মমতা শঙ্করের একটি বক্তব্যকে ঘিরে বেশ কদিন ধরেই উত্তাল সামাজিক যোাগাযোগমাধ্যম। আধুনিক নারীর সাজপোশাক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে যৌনকর্মীদের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
শাড়ির আঁচল নামিয়ে পরা মেয়েদের একহাত নিতে গিয়ে ‘রাস্তার মেয়ে’, ‘ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়ানো মেয়ে’ প্রভৃতি শব্দবন্ধ টেনে আনেন অভিনেত্রী, সেই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা।
টলিউডের কেউ কেউ মমতার সমর্থনে মুখ খুললেও কড়া ভাষায় অভিনেত্রীর সমালোচনায় মুখর হন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। এই ঘটনার রেশ একটু থিতু হতেই প্রকাশ্যে এলেন মমতা শঙ্কর। সদ্য বক্স অফিসে ১০০ দিন পূর্ণ করেছে ‘প্রধান’। তারই সেলিব্রেশনে সামিল হয়েছিলেন অভিনেত্রী। এদিন মিডিয়াকে এড়িয়ে গেলেন না তিনি, বরং চোখে চোখ রেখে নিজের অবস্থানে অনড় থাকলেন।
চারিদিকে এত ট্রোলিং, এত সমালোচনা, বক্তব্য নিয়ে আফসোস রয়েছে? মমতা শঙ্কর প্রধানের সেলিব্রেশন পার্টিতে টলি নিউজকে স্পষ্ট বললেন, ‘আমার কিচ্ছু গায়ে লাগছে না। এত লোক আমাকে সাপোর্ট করেছেন,তাই আমি ওসব ভাবছি না। যারা ওইরকম ভাষা দিয়ে ওইরকম ভাবে আমাকে ট্রল করেছেন। তারা নিজেদের ছোট করলেন আর কিছু নয়।’
বছরের শুরুতেই মুক্তি পেয়েছিল বিজয়ার পরে। সেই সিনেমায় মমতা শঙ্করের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা। শাড়ির আঁচল ইস্যুতে তিনিও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সিনিয়র অভিনেত্রীকে।
কাছের মানুষদের এই বিদ্রুপ কতটা কষ্ট দিয়েছে? মমতা শঙ্কর বলেন, ‘আজকে স্বস্তিকা যেরকমভাবে বলেছে, ও আমার মেয়ের মতো। ওকে আমি এত ভালোবাসি। ও এত ভালো অভিনেত্রী। ও সোজাসুজি আমার সামনে এসে কথাটা বললে আমার আপত্তি ছিল না। কিন্তু ও যেভাবে একটা ছবি দিয়ে নিজের অবস্থান জানালো, তাতে ও নিজেকে ছোট করল। আমি যেটা বলেছি আমি তাতে অনড়, আমার কথা এদিক ওদিক হবে না।’
মমতা শঙ্করের কথাকে ব্যঙ্গ ল্যাম্প পোস্টের নিচে শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারীর স্কেচ শেয়ার করেন স্বস্তিকা। উন্মুক্ত তার বক্ষবিভাজিকা। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় লেখেন, ‘আমিও এরকম একটা ছবি তুলব, ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়ানো খারাপ মেয়েগুলোকে উৎসর্গ করে। শাড়ির আঁচলেই কি না সব সম্মান লুকিয়ে আছে যদি ওরাও জানত। আমার বন্ধু ফটোগ্রাফাররা একটু হাত খালি হলে জানিও।’
সব শেষে মমতা শঙ্কর দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সবাইকে বলব, আমার কথাটা আরেকবার শুনুন। তাদেরকে (যৌন কর্মীদের) কীভাবে শ্রদ্ধা দিয়ে বলেছি শুনুন। আশা করি তাহলে আমাকে ভুল বুঝবেন না।’
আজকের প্রজন্মের মেয়েদের অকারণ শরীর দেখানোর প্রবণতাকে তুলোধনা করে আনন্দবাজার অনলাইনকে মমতা বলেছিলেন, ‘আমি শাড়ি পরব কিন্তু আঁচলটা জায়গামতো থাকবে না, এটা ভাবনাটা বুঝতে পারি না। ক্ষমা করবেন, এটা বলছি বলে- যাদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যারা ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে এমন মেয়ে বলতাম, তারা এইরকমভাবে দাঁড়াত। কিংবা গ্রামে কাজ করতে গিয়ে আঁচল সরে গেল সেটা দোষের ছিল না। এরা মানুষকে অ্য়াট্রাক্ট করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন, এটা তাদের পেশা, আমি তাদেরও শ্রদ্ধা করছি।’ সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস