ঢাকার বোটক্লাবে মারধর, হুমকি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হয়েছিলেন অভিনেত্রী পরীমনি। ঢাকাই চলচিত্রের আলোচিত এ নায়িকাকে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে উপস্থিত হতে দেখা যায়।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক শাহিনা হক সিদ্দিকার আদালতে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের হাজির হলে বেলা সোয়া ১টার দিকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সেদিনের ঘটনার কিছু বিবরণ দেন পরীমনি।
ঘটনা বিবরণের একপর্যায়ে আর কিছু বলতে না পেরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।
এ সময় ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শহীদ হোসেন বিচারকের উদ্দেশে বলেন, এই জনাকীর্ণ আদালতে পরীমনি হয়তো সেদিনকার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিতে পারছেন না। আইনে এই ধরনের মামলায় ক্যামেরার ট্রায়ালের (রুদ্ধদ্বার এজলাসে বিচার) বিধান রয়েছে।
এরপর পরীমনির উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন, ক্যামেরা ট্রায়ালে সব ঘটনা খুলে বলবেন, তাহলে অবশ্যই মামলার বিচার ক্যামেরা ট্রায়ালে হবে। আপনার সাক্ষ্যগ্রহণকালে আপনার আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবী ছাড়া আর কেউ সেখানে থাকবেন না। আপনি কি ক্যামেরা ট্রায়ালে সাক্ষ্য দিতে চান?’
তখন পরীমনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, সেদিনকার ঘটনা মনে পড়লে আমি আজও ট্রমাটাইজ (মানসিক আঘাতগ্রস্ত) হয়ে যাই...।’ এ কথা বলার পর তিনি আবার কাঁদতে থাকেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মুজিবর রহমান বলেন, ‘মাননীয় আদালত, পরীমনি ক্যামেরা ট্রায়ালে সব ঘটনা খুলে বলবেন।’ এ সময় পরীমনিও এ সিদ্ধান্ত জানান।
আদালত এসময় ক্যামেরা ট্রায়ালে বিচারের আদেশ দেন।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন বিচারক।
পরীমনি যখন আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন, তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী। মামলার আরেক আসামি শাহ শহিদুল আলমের পক্ষে তার আইনজীবী আদালতে ছিলেন। শহিদুল আদালতে আসতে না পারায় তার পক্ষে সময় চাওয়া হয়।
২০২১ সালের ১৪ জুন ঢাকার সাভার থানায় পরীমনি এ মামলাটি করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাকে ওই বছরের ৮ জুন রাতে কৌশলে সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে জোর করে মদ পান করানোর চেষ্টা করেন নাসির। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
পরে মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসির, তুহিন ও শহিদুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।