অনেকেই বোধহয় ভেবেছিলেন, নাটাইয়ে টান পড়েছে; একমাত্র সন্তান রাজ্যকে কেন্দ্র করে এক হয়েছেন শরিফুল ইসলাম রাজ ও পরীমনি। তবে ভুল। দ্বন্দ্ব মেটেনি এ তারকা দম্পতির। এক হওয়ার যে খবর ছড়িয়েছে, সেটাও ঠিকঠাক ঠিক নয়।
কেক সামনে রেখে ছেলেকে নিয়ে রাজ-পরীর পাশাপাশি বসে থাকা ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন পরীমনি। রাজ তা শেয়ার করেননি। এ নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয়ও ছিল। অবশ্য এত কিছুর পরও গণমাধ্যম লিখেছিল তাদের মিলে যাওয়ার কথা।
তবে এ খবরের এক দিনের মাথায় সোমবার ভোরে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে পরী লিখলেন, কিছুই ঠিক হয়নি। রাজ তার পাশে নেই আর।
নায়িকা লিখেছেন, আপনাদের মধ্যে অনেকের মতো আমিও খুশি হয়ে যাই খবরের এসব শিরোনাম দেখে! সব ভুলে আবার এক হলেন। কিন্তু সব কি আর সবসময় এক হয়?
পরী লিখেছেন, আমরা দশ তারিখটা (যেটি আমাদের জীবনের অনেক স্পেশাল দিন। আমাদের বাচ্চার পৃথিবীতে আসার দিন এটি) সেলিব্রেট করেছি মাত্র। আগামী দিনেও করবো। যেখানে আমরা জীবনের অন্য কোন ইস্যু টানবো না।
তিনি লিখেছেন, নয় তারিখ রাতে নানাভাই ঢাকায় আসেন। তারপর এই আয়োজন,সবাই মিলে। শুধু নানাভাই রয়ে গেলেন আমার কাছে। আর,রাজ চলে গেল রাজের মতো।
এসব ঘটনা এখানে শেষ হবে আশা প্রকাশ করে নায়িকা লিখেছেন, আশা করি এটা এখানেই শেষ হবে।
এর আগে রোববার ভোরে ফেসবুকে পরীমনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। যেখানে দেখা যায়, ছেলে রাজ্যকে নিয়ে কেক কাটছেন রাজ-পরী। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন পরীমনির নানাও।
ভিডিওটি শেয়ার করে পরীমনি লেখেন, ‘আজ রাজ্যের দশ মাস পূর্ণ হলো আলহামদুলিল্লাহ। হ্যাপি টেন মান্থস বাপজান।’ সঙ্গে জুড়ে দিলেন, ‘মাসের দশ তারিখটা আমাদের জন্যে অনেক স্পেশাল! ব্যাস এতটুকুই…। ’
নানা ঘটনার পর গত ৫ জুন স্বামী চিত্রনায়ক শরিফুল ইসলাম রাজের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ আর না বাড়তে দিয়ে বরং সংসারের হিসাব-নিকাশ মিটিয়ে ফেলার পক্ষে মত দেন পরীমনি।
ওইদিন এক জাতীয় দৈনিকের ফেসবুক পেজে একটি অনুষ্ঠানে এসে লাইভে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন পরীমনি। আগেরদিন একই অনুষ্ঠানে আসেন রাজও। সেখানে পরিবার নিয়ে কথা বলেন তিনি।
পরীমনি তখন বলেছিলেন, কাগজে-কলমে ডিভোর্স না হলেও তিনি আর রাজের স্ত্রী নন।
সুনেরাহ বিনতে কামলাসহ কয়েকজন অভিনেত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফাঁস হওয়া নিয়ে অভিনেতা রাজের সংসারে টানাপোড়েন চলছে কদিন ধরেই। সার্বিক পরিস্থিতিতে বোঝা যায়,জল ঘোলা হচ্ছে ক্রমেই। পর্দার এ নায়ক ও নায়িকার সম্পর্ক এখন দা-কুমড়া বললেই চলে।
রাজ-পরী দম্পতির সাংসারিক কলহ ফেসবুকে আসা নতুন কিছু নয়। তবে অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালকে জড়িয়ে এবারের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে ২৯ মে রাতে। ওই রাতে অভিনেত্রী সুনেরাহ, নাফিজা তুষি ও তানজিন তিশার সঙ্গে রাজের কিছু ছবি এবং ভিডিও রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা হয়।
এসব পোস্টে অসংলগ্ন ভাষায় কথা বলতে দেখা যায় সুনেরাহ ও তানজিন তিশাকে। কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে রাজ ও সুনেরাহকে ভিডিও কলে কথা বলতে। একটি ভিডিওতে লিফটের ভেতরে নাচছিলেন তানজিন তিশা। পরে অবশ্য রাজের অ্যাকাউন্টে সেসব ভিডিও বা ছবি আর পাওয়া যায়নি।
ছবি ও ভিডিও ফাঁস হওয়ার দায় রাজের স্ত্রী নায়িকা পরীমনিকে দিয়ে পরদিন রাতে একটি পোস্ট দেন সুনেরাহ। একই সঙ্গে তিনি দেন আইনি ব্যবস্থারও হুমকি।
পরীমনিকে ইঙ্গিত করে সুনেরাহ লেখেন, ‘দয়া করে এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। আমি নিশ্চিত, ওর (রাজ) আইডি হ্যাকড হয়েছে। কে হ্যাক করেছে, আমরা সেটা জানি; প্রকাশ্যে হইচই করতে যার কোনো কারণ লাগে না। এ ভিডিওগুলো যারা ছড়াবে, তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এর পর দিন সকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনি। সুনেরাহকে এর দায় দেন তিনি। পরে কথা বলেন রাজও। তার বক্তব্য, তিনি এগুলোর কিছুই জানেন না।
এরপর পরীমনি আবার গণমাধ্যমকে বলেন, রাজের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই বেশ কিছুদিন। সুনেরাহর সঙ্গেই থাকছে রাজ। তার ফোনও নাকি তার কাছেই। এসব ছবি ও ভিডিও সুনেরাহই ছড়িয়েছেন।
এর আগেও রাজ-পরীর পারিবারিক দ্বন্দ্বের ব্যাপার সামনে এসেছিল গত পহেলা জানুয়ারি। ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম প্রহরে ভোর ৫টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে রাজের সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলে ঘোষণা দেন পরীমনি। একই ঘোষণা দিয়েছিলেন রাজও।
এর দু-একদিন আগে থেকে চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমকে রাজের সঙ্গে জড়িয়ে নানা পোস্ট দিচ্ছিলেন পরীমনি। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে যায় এ দম্পতির সংসার।
২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর বিয়ে করেন শরিফুল রাজ ও পরীমনি। দীর্ঘদিন গোপনেই ছিল তাদের বিয়ের খবর। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি তাদের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে।
পরীমনির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরটিই প্রথমে জানা যায়, পরে জানা যায় তাদের বিয়ের খবর। রাজ-পরীর একমাত্র সন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য। গত বছরের ১০ আগস্ট জন্ম হয় রাজ্যের।