ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে তাকে নিয়ে কেউ বেফাঁস মন্তব্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলী।
বুবলীকে ইঙ্গিত করে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস শুক্রবার একটি গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ার পর এক ফেসবুক পোস্টে ওই হুমকি দেন তিনি।
বুবলী লিখেছেন, ‘আমি একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কারো নোংরা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে আমাকে নিয়ে বা আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কেউ কোনো বেফাঁস মন্তব্য করলে বা কোনো ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার চেষ্টা করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আমি দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, কারণ আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
তিনি লিখেছেন, ‘কিছুদিন পর পর যে ব্যক্তি এসব নোংরা খেলা শুরু করে বা যাদেরকে দিয়ে করায় তাদের সমস্ত কিছু সোশাল মিডিয়া, পত্রিকা এবং ইউটিউবে রয়েছে যা ডকুমেন্ট হিসেবে যথেষ্ট এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
বুবলী বলেন, ‘এসব নোংরামি পাত্তা দেবার রুচি থাকে না বলেই কথা বলা হয় না। কিন্তু চুপ থাকাকে যদি সে বা তারা সুযোগ পাওয়া মনে করে তাহলে তা হবে তাদের চরম ভুল...।’
শাকিব খানের সাবেক স্ত্রী ও সন্তানের মা অপু বিশ্বাস। শাকিব খানের আরেক সন্তানের মা-ও বুবলী। শাকিবের সঙ্গে তারও বিচ্ছেদ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপু-বুবলীর পরোক্ষ বাগযুদ্ধের খবর পাওয়া যায় প্রায়ই। শুক্রবার অপু বুবলীকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘উনি যা যা করছেন বা করেন, তা তো আমার সন্তান দেখছে। আমি নাম বলব না, একজন তো একটা ভিডিও ছেড়েছেন। জয়ও সেই ভিডিও দেখেছে। সুতরাং এই সব ভিডিওতে তার ওপরও তো প্রভাব পড়তে পারে।’
বুবলী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আশেপাশে হাজার কিছু হলেও দিন শেষে আমাকে নিয়েই এসব ব্যক্তির ব্যস্ততা এমনকি নাওয়া খাওয়া সব থাকে আমার চিন্তায়...এদেরকে রেসপন্স করতেও রুচিতে বাঁধে..।
‘আর হ্যা! আমার পারিবারিক শিক্ষা আমাকে কখনই দুমুখো সাপের আচরণ করতে শেখায়নি, সুবিধাবাদী হতে শেখায়নি, ধর্ম নিয়ে একেক বার একেক মিথ্যা কথা বলে সাধারন জনগণের আবেগ নিয়ে খেলা করে বোকা বানাতে শেখায়নি, গিরগিটির মত রং বদলাতে শেখায়নি, কাউকে ছুরি মেরে পরক্ষণেই নিজের কোনো সুবিধা হবে ভেবে সেই ছুরি মারা জায়গায় ব্যান্ডেজ করতে শেখায়নি, বিভিন্ন মানুষকে নিয়ে নানান টক শোতে অপমান করে কথা বলে নির্লজ্জের মত হাসতে শেখায়নি, মানুষকে অসম্মান করতে শেখায়নি, হিংসামি শেখায়নি, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিতে শেখায়নি, কাউকে নানান অপমান করে আবার নিজের স্বার্থে সময় বুঝে প্রশংসা করতে করতে মুখে ফেনা তুলতে শেখায়নি, বাস্তব জীবনেও অভিনয় করতে শেখায়নি, তাই আমি হয়তো আপনাদের অনেকের সাথে ইনিয়ে বিনিয়ে নাটক করতে পারিনা ..।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমি এসব না শিখতে পারার জন্য গর্বিত.. কারণ এসব যে পারে সে অনায়েসেই লিজেন্ড শাবানা ম্যামের মত এতো সিনিয়র ব্যক্তিত্ব নিয়ে অপমানজনক বেফাঁস মন্তব্য করে বসতে পারে, কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মত এগিয়া যাওয়া নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে অপমান করে কথা বলে মুখটাকে বিশ্রী করে ব্যঙ্গ করতে পারে, ভালো মনের মানুষ বর্ষা আপুকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলতে পারে, মাস্টারমেকার পরিচালক শ্রদ্ধেয় মালেক আফসারী স্যারকে নিয়ে অপমান করে কথা বলতে পারে যা কিনা রীতিমত তার পারিবারিক শিক্ষাকেই উপস্থাপন করে, এজন্যই বলে ব্যবহারই বংশের পরিচয়…।’
বুবলী লিখেছেন, ‘কত বাজে নিচু মানসিকতার হলে সে একজন নিষ্পাপ বাচ্চাকেও কটূক্তি করতে ছাড়েনি, কিছুদিন আগে ইঙ্গিতভাবে আমার সন্তানের গেট আপ নিয়ে ক্যামেরার সামনে বাদরের মত মুখ ভেংচি কেটে বাজে মন্তব্য করতে ছাড়েনি…
‘আমি মা হিসেবে ভালোবেসে আমার সন্তানকে নিয়ে কি করবো বা আমার সন্তানের ভালোর জন্য কি করবো সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, আপনি কে?।’
তিনি লিখেছেন, ‘সারাক্ষণ নানান মিথ্যা বানোয়াট উসকানিমূলক ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে অথচ পরে আবার বলবে সে ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে না, সারাক্ষণ মানুষকে ছোট করে কথা বলবে কিন্তু পরে বলবে সে মানুষকে ছোট করে কথা বলে না! একেক সময় একেক রং ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার নগ্ন খেলা এসব বহুরুপী সস্তা মানসিকতার ব্যক্তিই পারে...।’
শাকিব খান ২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করেন অপু বিশ্বাসকে। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্ম হয় এ জুটির ছেলে আব্রাম খান জয়ের। ২০১৭ সালের এপ্রিলে একটি টিভি চ্যানেলে সব তথ্য ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের।
পরের বছরের ২০ জুলাই শবনম বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান। ২০২০ সালের ২১ মার্চ আমেরিকায় জন্ম হয় তাদের ছেলে শেহজাদ খান বীরের। গত ৩০ সেপ্টেম্বরে এসব তথ্য জানান বুবলী। শাকিবের সঙ্গেও বুবলীর বিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।