সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) সংসদীয় আসনের মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে যদি ব্যর্থ হন তাহলে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি দুইটি আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেলে উভয় আসনেই নির্বাচন করবেন তিনি। সুষ্ঠু ভোট হলে একশভাগ জয়লাভ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ঢাকাই সিনেমায় আলোচিত এই অভিনেতা।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইন শাখায় প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন জমা দেন।
এর আগে গত রোববার ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় গরমিল থাকায় বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তারা৷
হিরো আলম বলেন, ‘কাগজ-পাতি সব সহকারে আমি এখানে জমা দিয়েছি। এখন বাদ-বাকিটা তাদের যাচাই-বাছাইয়ে বুঝতে পারবো তারা সুষ্ঠু বিচার করলো আমাদের না অবিচার করলো। এখান থেকে বাতিল করলে আমি আবার হাইকোর্টে যাব। দুই আসন থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেলে দুইটি আসন থেকেই ভোট করব।’
আমি পরিপূর্ণ করেই জমা দিয়েছি দাবি করে তিনি বলেন, ‘কারণ একই ভুলের কিন্তু ২০১৮ সালের ভোট বাতিল করেছিল। আপনারা সবাই জানেন। আমি আপিল করি। আপিল করার পর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। এবার তো এই ভুল করার কথা না। ওনারা যে কথা বলেছে একটা ভুল দেখা গেছে। একটা ভোটারের নাকি নাম্বারই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জমাই দেই নাই আমি। আমরা নাম্বার পেয়েছি ওটা জমা দিয়েছি।’
হাইকোর্ট থেকে মনোনয়ন ফিরে পেয়ে গতবারের সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘তখন প্রথমবার আমি এমপি ইলেকশন করি। তখন অভিজ্ঞতা একটু কম ছিল। বুঝিনি এত ঝামেলা হবে। আমি এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ পরিষদ নির্বাচন করছি এতকিছু তখন ছিল না।’
সেবার আমি হাল ছাড়লাম না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টে রিট করলাম মনোনয়ন ফিরে পেলাম। সেই নির্বাচনে ভোটের দিন আমার সঙ্গে মারামারি হয়। পরে দুপুর বেলা আমি ভোট বর্জন করি।’
সব পরিপূর্ণ থাকার পরও কেন এমন ঝামেলা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমার না। দুইটা আসনে সর্বমোট ১১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে। সবারই একই ভুল। আমার নামে কোনো মামলা বলেন। ঋণখেলাপি বলেন কোনো কিছু নেই। আরো আইনে অনেক সমস্যা থাকে না। কিন্তু একটা দোষ ও তারা খুঁজে৷ বের করতে পারে না।’
বগুড়া পুলিশের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে এমন দাবি সম্পর্কে জানতে ঢাকাই সিনেমায় আলোচিত এই অভিনেতা বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান আমাকে হিরো আলম বলে তো তারা বাইরে রাখবে না। আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য কিছু লোক অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
দুইটা আসনে মনোনয়ন জমা দেয়ায় পর দুইটা বাতিল হয়েছে কেন এমন প্রশ্ন তুলে হিরো আলম বলেন, ‘এর তো কোনো কারণ থাকতে পারে। সামনে নির্বাচন এই মূহুর্তে আমরা বলবো না ষড়যন্ত্র কারা করতেছে। আগে ভোটের মাঠে যাবো। ফলাফল দেখবো। তারপর আপনারাই দেখতে পারবেন কারা ষড়যন্ত্র করে।’
দুইটা আসনে মনোনয়ন কেনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুইটা কেনার কারণ হলো বগুড়া-৪ থেকে মনোনয়ন কিনেছিলাম প্রথমে। তারপরে আমি যখন দেখেছিলাম তারা (বগুড়া সদর) পছন্দের প্রার্থী পাচ্ছিল না। তখন এলাকাবাসী বলল আমাদের সবার দাবি তুমি এবার বগুড়া সদর থেকে নির্বাচন করব। আর আমার বাসা বগুড়া সদরে। সবাই চাইতেছে। আর আগে কাহালু নন্দীগ্রাম থেকে যেহেতু আমি নির্বাচন করেছি। এজন্য সবার মন রক্ষা করার জন্যে ভালোবাসা রক্ষা করার জন্যে আমি দুইটা আসন থেকে নির্বাচন করছি।’
ইউনিয়ন পরিষদে জয় না পেয়েও সংসদ নির্বাচন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি আশাবাদী। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। একশ পার্সেন্ট আমি দিতে পারি যে জয়লাভ করব।’
গত একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন আমার সঙ্গে মারামারি হয়েছিল। তারপর ভোট আমরা বর্জন করছি।’
প্রতিটা লোকের নির্বাচন করার অধিকার আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি আগেও করেছি এবারও টার্গেট আছে। কথা আছে একবার না পাড়িলে দেখ শতবার। যেহেতু জীবন যুদ্ধে নেমেছি, শেষ কতদূর লড়তে পারি।’
হিরো আলমের কোটি টাকার সম্পদ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু লোক আছে তিলরে তাল করে। লিখতে তো আর সমস্যা হয় না।’