নানাভাবে নানা গল্পে নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন নির্মাতা রায়হান রাফি। বড় পর্দায় পোড়ামন ২, দহন, পরাণ, দামাল এবং ওটিটিতে বিভিন্ন রকমের গল্পের উপস্থাপন সেই চেষ্টারই বহিঃপ্রকাশ।
এখন প্রেক্ষাগৃহে চলছে রাফি পরিচালিত সিনেমা দামাল। অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি তিনিও এখন জনপ্রিয়। পরাণ সিনেমা দেখার পর দর্শকদের প্রত্যাশা এক ধাপ হলেও বেড়ে গেছে এই নির্মাতার কাছে।
পরাণ সিনেমা নিয়ে দর্শকের উচ্ছ্বাস রাফিকে আনন্দিত করেছে ঠিকই, কিন্তু রাফির আবেগবেষ্টিত হয়ে আছে দামাল সিনেমাটি। কারণ হিসেবে রাফি নিউজবাংলাকে জানান, প্রথমত দামাল মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের একটি সিনেমা এবং দ্বিতীয়ত, সিনেমাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ফুটবল খেলার ঘটনা।
রাফি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এটা আমার প্রথম সিনেমা। এ বিষয়টি সব সময়ই আবেগপ্রবণ করে তোলে আমাকে। এর সঙ্গে বাড়তি পাওয়া ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া প্রেক্ষাপট।’
রাফি পরিচালিত পরাণ সিনেমা এখনও চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এখনও রাফির উদাহরণ দিতে চলে আসে পরাণ সিনেমার নাম। এর পর পরই দামাল সিনেমার মুক্তি। হল মালিক, দর্শকদের অনেকেই পরাণ সিনেমার সঙ্গে দামাল-এর তুলনা করছেন। বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলাকে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাফি।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেকেই এর তুলনা করছেন। কেউ তুলনা করলে আমার কিছুর বলার নাই। তবে আমি অনুরোধ করব, দামালকে তুলনা করলে অন্য মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার সঙ্গে তুলনা করুন।
‘পরাণ এক ঢংয়ের সিনেমা, দামাল আরেক ঢংয়ের। পরাণকে আমার বানানো পোড়ামন ২, বা অন্য কোনো রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি সিনেমার সঙ্গে তুলনা করেন, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু পরাণ ও দামালকে তুলনা করলে বিষয়টা অ্যাকুরেট হয় না।’
প্রথম সপ্তাহে হল মালিকদের অনেকেই জানিয়েছেন, প্রেক্ষাগৃহে দর্শক মোটামুটি বা পরাণের মতো না। এ নিয়ে রাফি বলেন, ‘এখানেও একই কথা বলব। পরাণের দর্শকের সঙ্গে দামালের দর্শক মেলাবেন না। বরং এটা যদি অন্যান্য মুক্তিযুদ্ধের সিনেমায় দর্শক উপস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন, তাহলে আশা করি হল মালিকেরা অন্য রকম তথ্য দেবেন।’
দর্শক যারাই বা যত জনই দামাল সিনেমাটি দেখছেন তারাই এর প্রশংসা করছেন বলে জানান রাফি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত দামাল সিনেমার প্রচারের ভিডিওর রেফারেন্স দিয়ে রাফি বলেন, ‘সিনেমার শেষে শিল্পীরা যখন প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করেন, দর্শকেরা যেভাবে তাদের কাছে যান, তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন বা রেসপন্স করেন, সেটা কিন্তু সিনেমা ভালো না লাগলে সম্ভব না।
‘সিনেমাটা দেখার পর ওই চরিত্রগুলোকে যদি দর্শকের পছন্দ না হয়, তাহলে কি শুধু ছবি তোলার জন্য এভাবে শিল্পীদের কাছে যায় কেউ? সিনেপ্লেক্সে যাওয়া দর্শকদের নিয়ে এমন ভাবাটা হয়তো ঠিক না। আমাকে তো তেমন কেউ চেনে না, কিন্তু আমার সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটে।
‘এসব কথা বললাম এ কারণে যে, সিনেমাটি যারা দেখছেন, তারা এনজয় করছেন। সে জন্যই দর্শকদের এত উচ্ছ্বাস।’
রাফি জানান, কম কম করে সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি প্রদর্শনের পরিকল্পনা তাদের। তিনি বলেন, ‘প্রথম সপ্তাহের চেয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে দামাল সিনেমায় দর্শক সংখ্যা বেশি। সিনেমাটা যারা দেখবেন, কারও খারাপ লাগবে না।’
দামাল সিনেমা নিয়ে রাফির সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ও ভালো লাগার জায়গা কি? জানতে চাইলে রাফি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দর্শক কম দেখতে চায়। আমার চ্যালেঞ্জ ছিল এ বিষয়টাকেই সুন্দর করে দর্শকদের সামনে হাজির করা, যেন তাদের ভালো লাগে। আর সেটা মনে হয় হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা মানুষ দেখছে, ব্যবসা করছে, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।’