বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুরুষের সৌন্দর্য নিয়ে ‘ভাল্লাগে’ গানে নেট দুনিয়ায় ঝড়

  •    
  • ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৮:৪০

‘ভাল্লাগে’ গানটি গত জুলাইয়ে ইউটিউবে প্রকাশের আড়াই মাসে ২ কোটি ৩৫ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে। দেশের দর্শকের পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দর্শকরাও মেতেছেন এর সুর-কথায়। এত বিপুল সাড়ায় উচ্ছ্বসিত শিল্পী সুমি শবনম।  

‘ছেলে তোর কোঁকড়া কোঁকড়া চুলে যেন সমুদ্র ঢেউ খেলে/ সেই ঢেউ খেলা দেখিতে আমার ভাল্লাগে’- এই গানে উন্মাতাল ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

সংগীতশিল্পী সুমি শবনমের ‘ভাল্লাগে’ শিরোনামের গানটি গত জুলাইয়ে ইউটিউবে প্রকাশের আড়াই মাসে ২ কোটি ৩৫ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে। টিকটক, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামেও ভাইরাল গানটির নানান রিল। ফেসবুকে #ভাল্লাগে হ্যাশট্যাগ রীতিমতো ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।

দেশের দর্শকের পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দর্শকরাও মেতেছেন গানটিতে। তৈরি করছেন রিল। পশ্চিমবঙ্গের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী অঙ্কিতা বর্মণ ফেসবুকে গানটির একটি রিল পোস্ট করে লিখেছেন, ‘অষ্টমীর দিন পাঞ্জাবিতে ছেলেদের দেখার পর আমরা।’

ফেসবুকে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জে এক অনুষ্ঠানে মঞ্চে গানটির সঙ্গে নাচছেন এক তরুণী।

#vallage দিয়ে গানটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সংগীতশিল্পী আরজীন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ভাল্লাগে। ‘ছেলে তোর কোঁকড়া কোঁকড়া চুলে যেন সমুদ্র ঢেউ খেলে’ এই গান বাংলাদেশ ইন্ডিয়া কাঁপায় ফেলছে। টিকটকে তো ঝড়, সাথে ইন্সটাগ্রাম ফেইসবুক তো আছেই। ১৯৮৯ সালে শিল্পী ডলি সায়ন্তনি এর ‘হে যুবক/ রঙ চটা জিন্সের প্যান্ট পরা’ গানের পর ছেলেদেকে ভালো লাগা নিয়ে নারী কণ্ঠে এরকম গান বাংলাতে হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।’

অভাবনীয় এই সাড়া নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন গানটির শিল্পী সুমি শবনম। জানিয়েছেন, গানটি সৃষ্টির পেছনের গল্প।

ভাল্লাগে গানের শিল্পী সুমি শবনম। ছবি: সংগৃহীত

সুমি শবনম বলেন, ‘গানের সিলেকশন ওইভাবে হয়নি। গানটি আমার স্বামী আকরাম হোসেনের লেখা। উনি ব্যাংকে চাকরি করেন। মাঝে মধ্যে গান লেখেন। পাঁচ বছর আগে গানটি লিখেছিল।

‘আমি তো তখন ওভাবে গানে সময় দিতে পারিনি, আমার জমজ সন্তান। তাদেরকে দেখেশুনে রেখে গান গাওয়া অনেক ঝামেলা হয়ে গিয়েছিল। এখন তারা বড় হয়েছে।

‘এরই মধ্যে আমার স্বামী বলল এখন তো বাচ্চাদের চাপ নেই, তুমি এখন ফেসবুক পেজ করো, ইউটিউব চ্যানেল করো। আমি তখন বললাম তুমি এ রকম একটা গান লিখেছিলে এবং খুবই হেসেছিলাম গানটা শোনার পরে। তখন আমার হ্যাজবেন্ড বলল, গানটা তাহলে তোমার চ্যানেলে করে ফেল।’

এর পরের ঘটনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গানটা নিয়ে গেলাম সজীবের কাছে (সংগীত পরিচালক)। তার অফিসে গিয়ে অনেকগুলো গান দেখালাম, সব শেষে এই গান দেখালাম।

‘গানটি দেখেই সজীব বলল, আপা এইরকম গানই তো দরকার। তখন এই গানটি আমাকে রেকর্ড করতে বলল। রেকর্ড শেষে তাকে বললাম, গানটার ভিডিও করব তোমার স্টুডিওতে, অত খরচ করতে পারব না, আমার চ্যানেলে দেব।

‘তখন সজীব বলল, আপা গানটা আপনার চ্যানেলে দেয়া যাবে না। এটা ভালো একটা গান, প্রমিনেন্ট কোনো একটা চ্যানেলে দিলে ভালো হবে।’

এরপর গানের মিউজিক ভিডিও তৈরি ও প্রচারের গল্প শোনান সুমি। বলেন, ‘গানটি আমি হানিফ ভাইকে (হানিফ সংকেত) পাঠালাম। উনি সঙ্গে সঙ্গে লিখে পাঠিয়েছেন এটা অসাধারণ একটা গান। উনি বললেন, কিছু কথা চেঞ্জ করতে, হানিফ ভাইয়ের ওখানে দিতে হলে কিছু কথা চেঞ্জ করে দিতে হবে, আমি বললাম দেব।

‘পরে উনাকে আর কানেক্ট করতে পারছিলাম না, উনি হয়ত দেশের বাইরে ছিলেন। উনাকে আর পেলাম না।

‘পরে আরেকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, তাকেও আর পরে পেলাম না। এরপর সজীব একদিন নয়ন ভাইকে (সৃষ্টি মাল্টিমিডিয়ার মালিক ও গানের মডেল) গানটি পাঠায়। সজীব জানাল গানটি নয়ন ভাই নেবে। ভিডিওর যত খরচ তিনি দেবেন, আপনি গানটা নয়ন ভাইকে দিয়ে দেন। এরপর চার-পাঁচদিনের মধ্যে ভিডিও সেরে ফেললাম। কোরবানি ঈদের পরদিন গানটি রিলিজ হয়েছে।’

ভাল্লাগে গানের মডেল নয়ন ও মম। ছবি: সংগৃহীত

একদম ছোটবেলা থেকে গান করেন বলেন জানালেন সুমি। তিনি বলেন, ‘আমি তো গান করি একদম ছোটবেলা থেকে। আমার পরিবার থেকেই গান গাওয়া শেখা। আমার ভাই-বোন, আমার বাবা-দাদা পুরো পরিবার গানের পরিবার। আমার গানের হাতেখড়িই হয়েছে বড় তিন ভাইয়ের কাছ থেকে।’

মেহেরপুরের গাংনীতে বাড়ি সুমির। স্বামীর চাকরির সুবাদে ঢাকাতেই থাকেন। তিনিও দুই বছর একটা চাকরি করেছেন। তবে গান-বাজনা আর সংসার সামলানোর জন্য সেই চাকরি ছেড়েছেন বলে জানান সুমি।

এ পর্যন্ত তার ৬-৭ টি অ্যালবাম বেড়িয়েছে সুমির। এর মধ্যে দুটি লালনগীতি ও বাকিগুলো মৌলিক গানের। এই অ্যালবামগুলো ২০০০ সাল থেকে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের দিকে করা। এ ছাড়া সেসময় ইত্যাদিতেও গান করেছেন তিনি।

‘ভাল্লাগে’ গানের মতো সাড়া আর কোনো গানে সাড়া পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সুমি বলেন, “২০০১ সালে আমার একটা গান এসেছিল ‘আমার মাকে একটা চশমা কিনে দে/ আমার বাপকে একটা চশমা কিনে দে।’ সে সময় প্রচুর সাড়া ফেলেছিল গানটি। যদি সে সময় ইউটিউবের যুগ হতো তাইলে ওটাও ভাইরাল হতো।’’

দীর্ঘদিন ধরে গান করলেও জোরালোভাবে সংগীত জগতে খুব একটা শোনা যায়নি সুমির নাম। তবে ‘ভাল্লাগে’ গানে বিপুল সাড়া তাকে উজ্জীবিত করেছে। ভীষণ খুশি সুমি জানালেন, আগামীতে নিয়মিত হবেন গানের জগতে।

এ বিভাগের আরো খবর