সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত আলোচিত সিনেমা হাওয়ার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করা হয়। এতে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
শুরুতে বিষয়টি নিয়ে কথা না বললেও মামলার এক দিন পর ১৮ আগস্ট রাত ১০টার দিকে এ নিয়ে কথা বলেন সুমন। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে খাঁচায় পাখি বন্দি করে রাখা, ছেড়ে দেয়া ও পাখি খাওয়ার ব্যাখ্যা দেন নির্মাতা।
সুমন লেখেন, ‘নির্মাতা হিসেবে আমি এটুকুই বলতে চাই, হাওয়ার পাখিটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে আর এই নির্মাণের জন্য যে সিনেমাটিক রিয়্যালিটি তৈরি করতে হয়েছে, সেটা সত্য নয়। ছবির শুরুতে ডিসক্লেইমারে আমরা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি। পাখির দৃশ্য ধারণের পর আমরা তাকে প্রকৃতিতে মুক্ত করে দিয়েছিলাম।
‘আর নৌকায় যে উড়িয়ে দেয়ার দৃশ্য দেখিয়েছি সেটা কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে নির্মাণ করা। চানমাঝি যে তার প্রিয় পাখিটিকে খেয়ে ফেলে সেটা কি শুধু ভোগ!!? নাকি সমাজের ভেতর জমতে থাকা হিংস্রতা? আমি শুধু ওই বোধটাকেই ইঙ্গিত করেছি আর সেটা নির্মাণ করেছি সিনেমার ভাষার ভেতর দিয়ে।’
আদালত মামলাটি আমলে নিলেও তদন্তের জন্য কোনো আদেশ দেয়নি। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আদেশ আসতে পারে বলে জানা গেছে।
মামলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লঙ্ঘন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে তিনজনকে। তারা হলেন তদন্ত কমিটিতে থাকা আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
হাওয়া সিনেমাটি মুক্তি পায় গত ২৯ জুলাই। মুক্তির পর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিভিউতে জানা যায়, সিনেমায় একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
রিভিউ প্রকাশের পর বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। তারপর দেশে পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’ গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়।
পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান বন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
হাওয়া সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, রিজভী রিজুসহ অনেকে।