পাঁচ বছর পর সিনেমা প্রদর্শন ব্যবসায় নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাগৃহ যশোরের মণিহার। শুক্রবার থেকে সেখানে প্রদর্শন শুরু হয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত সিনেমা হাওয়া। সিনেমাটি দেখতে যেন ঢল নেমেছে দর্শকদের।
মণিহার কর্তৃপক্ষ নিউজবাংলাকে জানান, তিন দিনে ১০টি শোতে প্রায় ১১ হাজার দর্শক সিনেমাটি দেখেছেন। এর মধ্যে গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) প্রেক্ষাগৃহে টিকিট বিক্রির পরিমাণ ৩ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা। এক দিনে এমন সেল হয়নি গত ৫ বছরে।
এর আগে মনপুরা, আয়নাবাজি, বস-২ সিনেমায় ব্যবসা ভালো হয়েছিল। তবে সেই রেকর্ডও ভেঙেছে হাওয়া। দিনের মধ্যে বিকেল ও সন্ধ্যার শো-তে দর্শকদের ভিড় বেশি। শনি ও রোববারও দর্শকদের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙা।
মণিহার সিনেমা হল প্রাঙ্গণে সিনেমা দেখতে আসা দর্শক। ছবি: নিউজবাংলা
মণিহারের টিকিট বিক্রেতা শামীম হোসেন বলেন, ‘তিন দিনে ১০টি শো প্রায় হাউসফুল হয়েছে। দর্শকদের এই উন্মাদনা দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে।’
মণিহার সিনেমা হলের টিকিট পরিদর্শক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘হলে দর্শক ফিরে আসায় খুবই ভালো লাগছে। এমন ভালো সিনেমা নির্মিত হলে দর্শকও ফিরবে।’
শহরের বেজপাড়া এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাদা সাদা কালা কালা গান শুনে সিনেমা দেখার মনস্থির করলাম। যে কারণে অনেক কষ্ট করে টিকিট সংগ্রহ করে সিনেমাটি দেখেছি। ভালো লেগেছে।
উপশহর এলাকার সোহেল রানা বলেন, ‘পরিবার নিয়ে দেখার মতো সিনেমা। এ ধরনের সিনেমা নির্মাণ হলে বাংলা চলচ্চিত্র আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।’
যশোর মণিহার সিনেমা হলের ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘গত ৪-৫ বছর পর এমন দর্শকদের সাড়া পাওয়া গেল।’
মণিহারে ব্ল্যাকেও টিকিট বিক্রি হয়েছে। ‘এই টিকিন নেন টিকিট। ওপরে দ্বিতীয় তলায় (এসি) ১৫০। নিচে ১২০। এই টিকিট নেন টিকিট।’
যশোর মণিহারে দর্শককে উদ্দেশ্য করে টিকিট ব্ল্যাকারদের এমন হাঁকডাক দেয়ার দৃশ্য বহু বছর দেখেননি মণিহার সিনেমার হল চত্বরে চা-পান বিক্রেতা নজরুল। তার ভাষ্যমতে, ‘এখন তো আর ভালো সিনেমা হয় না, তাই দর্শকও আসে না। দর্শক ফিরেছে, সঙ্গে ব্ল্যাকারও বেড়েছে।’
মণিহার সিনেমা হলের ভেতরে সিনেমা দেখতে আসা দর্শকদের লাইন। ছবি: নিউজবাংলা
পরাণ সিনেমাতেও ভালো দর্শকের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। তার চেয়ে দর্শক দ্বিগুণ হাওয়া সিনেমাতে, জানান মণিহার কর্তৃপক্ষ।
মণিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মিঠু জানান, ১৯৮৩ সালে সোহেল রানা-সুচরিতা অভিনীত ও দেওয়ান নজরুল পরিচালিত জনি সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশের সবচেয়ে বড় সিনেমা হল মণিহার।
যাত্রার শুরু থেকেই ৯০ দশক পর্যন্ত ১৪৩০ সিটের মণিহারে দিনে চারটি শোতেই নামত দর্শকের ঢল। কিন্তু নব্বই দশকের পর দর্শক খরা শুরু হয়।