অনন্ত জলিল-বর্ষা অভিনীত দিন দ্য ডে সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী ছিল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমাসে। প্রদর্শনীতে প্রথমে ৭৪ জন গুণী ও নামকরা অভিনয় শিল্পীদের আমন্ত্রণের কথা জানান অনন্ত। পরে ভিডিও বার্তায় সিনেমাটি দেখতে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানান অভিনেতা।
তবে প্রদর্শনীতে শিল্পীদের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যত গুণী ও নামকরা অভিনয়শিল্পীদের নাম বলা হয়েছিল, তাদের কেউই আসেননি সিনেমাটি দেখতে।
দিন দ্য ডে সিনেমাটি প্রদর্শনী শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অনন্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা মুখে বলি চলচ্চিত্র ফ্যামিলি, কিন্তু আমরা যখন কাজে দেখি না, তখন খুব কষ্ট লাগে।’
অনন্ত আরও বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, যখনই যে শিল্পী বক্তব্য দেবে, তখনই বলবে আমরা একটা ফ্যামিলি। তো আমি চলচ্চিত্র পরিবারকে দাওয়াত দিয়েছি, একসঙ্গে দেখা করব, সিনেমা দেখব, আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলব। তাহলে সবাই মনে করবে যে, আমাদের মধ্যে একটা ইউনিটি আছে, আমরা সবাই এক। আমরা চলচ্চিত্র ফ্যামিলি, আমরা একে অপরের পাশে থাকব, হাসিখুশি থাকব, একজন আরেকজনের সিনেমা নিয়ে আলোচনা করব। কিন্তু আমি একা চেষ্টা করলে হবে না। এই মনমানসিকতা সবার মধ্যে থাকতে হবে।’
অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও অধিকাংশ শিল্পীই অজুহাত বা কারণ দেখিয়েছেন দাবি করে অনন্ত বলেন, ‘আমি ববিতা আপাকে ফোন করেছিলাম, তিনি ফোন ধরেন নাই। রতন ফোন করেছিল। চম্পা আপার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমরা মনে করেছি, যেহেতু তারা তিন বোন, এক বোন আরেক বোনকে বলে দেবে। অন্যরা আমাদের মাথার মুকুট।
‘আলমগীর ভাইকে আমি অনেক এসএমএস পাঠিয়েছি, কোনো উত্তর নাই। পরে আমি জানতে পারলাম তিনি কলকাতা। তার পরও আমি আমার বডিগার্ডকে দিয়ে রুনা লায়লা আপা, আলমগীর ভাইয়ের নাম লিখে উনার বাসায় চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।
‘রুবেল ভাইকে আমি পাচ্ছিলাম না। আমি তার ভক্ত। রতন আমাকে আরেকটা নম্বর দিল। সেটাতেও পেলাম না। পরে ইনভাইটেশন কার্ড ও ভয়েস মেসেজ দিয়েছি।
‘আসতে আসতে আমি অপু বিশ্বাসকে কয়েকবার ফোন করেছি। পরে ধরেছে, বলে যে শুটে আছে, শুটটা শেষ করে আমি বের হয়ে যাব।
‘ইমনকে বললাম। ইমন বলল, ভাইয়া আমি কিছুতেই মিস করব না। আজকে (সোমবার) যখন ফোন করলাম, সে বলে, আমি তো রিহার্সেল করছি, এক্ষুনি বের হয়ে যাব।
‘ববিতা আপা, সুচন্দা আপার সঙ্গে আমার কথা হয়নি। আমার কথা হয়েছে চম্পা আপার সঙ্গে। আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি বললেন, তোমাকে আমরা অনেক ভালো জানি, তুমি কিছু করার চেষ্টা করছ।’
অনন্ত কষ্ট নিয়ে বলেন, ‘আমি যতই সততা দেখাই, ততই দেখি পেছন থেকে কেউ যেন আমার পা টা টেনে ধরে রাখে। আমি যতই চাই এই সিঁড়ি দিয়ে উঠে চলচ্চিত্রকে একটা ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে, দেখি যে পেছন থেকে টেনে ধরে রাখে। এগুলো খুব কষ্ট লাগে আমার।’
অনন্তর দাবি, তার চেষ্টার কমতি ছিল না। কিন্তু যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তারা যদি না আসেন, সে ক্ষেত্রে কী করার আছে এই অভিনেতার।
গুণী ও নামি শিল্পীদের আমন্ত্রণ এবং অধিকাংশের না আসা প্রসঙ্গে বর্ষা জানান, অনেকেই আসলে কাজে ব্যস্ত হয়ে গেছেন। যার কারণে হয়তো আসতে পারেননি।
অভিনয় শিল্পীরা আসতে না পারলেও শিক্ষার্থীরা অনেক এসেছিলেন বলে জানান অনন্ত। তিনি বলেন, ‘এত ভিড় যে লিফট থেকে নেমে ব্লকবাস্টার পর্যন্ত আসতে পারছিলাম না। আমি ভেবেছিলাম সোমবারে মানুষ একটু কম হবে। কিন্তু আজকেই যেন ভিড় বেশি।’
বিশেষ এ শোতে দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন অনন্ত-বর্ষা। এত ভিড় দেখে ছেলেরা কান্না করেছে বলে সাংবাদিকদের বলেন বর্ষা।