বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামসহ ৩৩টি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনের আয়োজনে ৪ জুলাই বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে চলচ্চিত্র অনুদান প্রক্রিয়ায় অসংগতির প্রতিবাদে সমাবেশ করেন চলচ্চিত্রকর্মীরা।
চলচ্চিত্র অনুদান ২০২১-২২ এর সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিক অসংগতির প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান দেয়া, প্রামাণ্যচিত্রকে অনুদান না দেয়া এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অনুদানের সংখ্যা কমিয়ে দেয়াসহ অনুদান প্রাপ্তিতে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক তদবির বা অন্যান্য অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অবসানে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় সমাবেশে।
সমাবেশের একদিন পর বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান বন্ধের যে দাবি, সেই দাবির প্রতিবাদ জানিয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী, পরিচালক, প্রদর্শক, চলচ্চিত্রগ্রাহক সমিতি ও ফিল্ম এডিটরস গিল্ড। সমিতিগুলো বুধবার মন্ত্রণালয়ে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে।
চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের জন্য কিছু নির্মাতার দাবিকে চলচ্চিত্র শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন সমিতিগুলোর নেতারা।
সবার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গত ৪ জুলাই সোমবার রাজধানীর শাহবাগে কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য, দেশের জন্য এবং সর্বোপরি মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য ক্ষতিকর এই দাবি আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না এবং এটিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলচ্চিত্র শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র বলে মনে করি।
‘একথা আমরা সবাই জানি যে, দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের পুণরুত্থান এবং দর্শকদের আবার প্রেক্ষাগৃহমুখী করতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুদান ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদান প্রদান যেমন চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলী এবং হল মালিকদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছে তেমনি মানুষকেও সুস্থ বিনোদনের চর্চায় সিনেমা হলে ফিরিয়ে এনেছে। এসব কারণে পুরো চলচ্চিত্র সমাজের পক্ষ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অকুণ্ঠ ধন্যবাদ প্রাপ্য।
‘অথচ আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা দেশের মূলধারার চলচ্চিত্রের বাইরের কিছু সংগঠনের ব্যানারে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তাদের মধ্যে কয়েকজন এবছর অনুদান না পেয়ে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এই অবস্থান নিয়েছেন। এমন কি সরকারি অনুদান গ্রহণ করে সেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেননি এমন অভিযুক্তরাও এই দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন। অথচ চলচ্চিত্রে অনুদান সরকারি নীতিমালা পুরোপুরি অনুসরণ করেই দেয়া হয়। গত তিন বছরে ৯টি প্রামাণ্যচিত্রসহ মোট ২৫টি স্বলদৈর্ঘ্য ও ৫৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে অনুদান দেয়া হয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় সংখ্যা ও অনুদানের অর্থ দুই মাপকাঠিতেই বেশি। দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা-বোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত কমিটিই অনুদান প্রদান করে। এ সকল সত্য তাদের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং স্বার্থসিদ্ধিমূলক বলে প্রমাণ করেছে।’