বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাজের চাপে মাঝে মাঝে মনেই থাকে না আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে: মিথিলা

  •    
  • ১৭ জুন, ২০২২ ২২:০৪

বড় পর্দায় অভিষেক, অমানুষ সিনেমার যাত্রা এবং বিশেষ দিনের অনুভূতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপ করেছেন মিথিলা। হঠাৎ করে সিনেমায় কেন, দিয়েছেন সেই প্রশ্নেরও উত্তর।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী, মডেল ও উন্নয়নকর্মী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার জন্য ১৭ জুন দিনটি বিশেষ। এই দিনে বড় পর্দায় অভিষিক্ত হলেন তিনি। তাও আবার একসঙ্গে দুটি সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু হলো তার।

শুক্রবার ঢাকায় মুক্তি পেল তার অভিনীত প্রথম সিনেমা অমানুষ। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন চিত্রনায়ক নিরব। একই দিনে কলকাতাতেও তার অভিনীত আরেকটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।

বড় পর্দায় অভিষেক, অমানুষ সিনেমার যাত্রা এবং বিশেষ দিনের অনুভূতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপ করেছেন মিথিলা। হঠাৎ করে সিনেমায় কেন, দিয়েছেন সেই প্রশ্নেরও উত্তর।

দেশের সিনেমায় প্রথমবার অভিনয়, দেশের মানুষ আপনাকে বড় পর্দায় দেখবেন। কেমন লাগছে?

প্রথমবার বড় পর্দায় সবাই আমার অভিনয় দেখবেন, সেটা তো অবশ্যই একটা এক্সসাইটমেন্টের বিষয়। অবশ্যই এক্সসাইটেড, আমিও চেয়েছিলাম সবার সঙ্গে হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখতে, কিন্তু যেহেতু আমি অফিসের কাজে দেশের বাইরে আছি, আমার পক্ষে দেখা সম্ভব হবে না এখন। ফিরে গিয়ে দেখব হয়তো। তারপর দর্শকদের কাছে একটা অনুরোধ থাকবে, আপনারা হলে গিয়ে ‘অমানুষ’ সিনেমাটি দেখুন।

এটা আসলে সবার ছবি, একদম যেকোনো শ্রেণির যেকোনো মানুষের ইন্টারটেইনমেন্টের জন্য বানানো ছবি। এটা বাণিজ্যিক ঘরানার একটা ছবি। বাণিজ্যিক ঘরানার হলেও গল্পটা একটু আলাদা। হয়তো ভালো লাগবে, আপনারা হলে গিয়ে দেখুন, তারপর বিচার করুন, কেমন লাগল আমাদের জানান।

দর্শক প্রতিক্রিয়া, সিনেমা হলে যাওয়া বা আপনাকে নিয়ে অনেক অনেক ফিচার, সাক্ষাৎকার হতো। এখনও হচ্ছে, তবে কম। মিস করছেন বিষয়গুলো?

কিছুটা তো মিস করছি, কারণ এ সময় হয়তো অনেক প্রমোশন করতে হতো ছবিটার। অমানুষের প্রমোশনে হয়তো অনেক ইন্টারভিউ থাকত। প্রচুর কাজ থাকত আসলে। অনেক জায়গায় যেতে হতো, অনেক লোকের সঙ্গে কথা বলতে হতো।

ছবি প্রমোশনে আমি সক্রিয় যদি অংশগ্রহণ করতে পারতাম আমার ভালো লাগত, কারণ ছবিটা তো আমাদের সবার। সেটা পারছি না, সে জন্য কিছু করার নেই, এখন যেহেতু আমার প্রথম ও প্রধান প্রফেশন হচ্ছে আমি এখন যে কাজটা করছি সেটা। সেখানেই আমাকে বেশি সময়টা দিতে হচ্ছে।

যেহেতু আমি দেশের বাইরে, সে জন্যই পারছি না। তবে আমি দূর থেকে যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। ভিডিও বাইটস দিচ্ছি, সবাইকে ইন্টারভিউ দিচ্ছি। একটাই দুঃখ যে সিনেমাটা সবার সঙ্গে, আমার কো-আর্টিস্টদের সঙ্গে হলে বসে দেখা হবে না।

আপনি যেখানে (তানজানিয়া) কাজ করছেন, তারা কি জানেন আপনি বাংলাদেশ ও কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং আপনার সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে?

আমি যেখানে কাজ করছি, সেখানে অল্প কিছু লোক জানে হয়তো আমি অভিনয়টাও করে থাকি আমার ব্র্যাকের এই কাজটার পাশাপাশি। কিন্তু সেইভাবে আমার আরেকটা প্রফেশন নিয়ে বা আমার অভিনয়ের জায়গাটা নিয়ে ওইভাবে আমি অতটা আলোচনা করি না হয়তো। এখানে বেশির ভাগ সময় এখানকার কাজেই ডুবে থাকি, কারণ আমার এই কাজটা একেবারেই ওই জগৎ থেকে আলাদা এবং অনেক দায়িত্বের একটা কাজ।

এখানে আমি সারা দিন মাইলের পর মাইল কয়েক শ কিলোমিটার ট্র্যাভেল করছি, ফিল্ডে যাচ্ছি, বাচ্চাদের সঙ্গে ইন্টারাপ্ট করছি, প্যারেন্টসদের সঙ্গে, টিচারদের সঙ্গে কথা বলছি, তার মধ্যে আমার মাঝে মাঝে মনেই থাকে না আমার ছবি রিলিজ হচ্ছে হলে। এখানে সে রকমভাবে কেউ জানে না আসলে। আপাতত যেখানে আছি আমি, সেই কাজটা নিয়েই একেবারে মগ্ন আছি।

সিনেমায় অভিনয় করলেন, দেশে অভিষেক হচ্ছে আবার কলকাতাতেও আপনার সিনেমার মুক্তি পাচ্ছে। মানে, দুই বাংলায় এক দিনে আপনার সিনেমা। এ তো অনন্য অভিজ্ঞতা যেকোনো শিল্পীর জন্য। কেমন লাগছে?

দুই দেশে দুটি ছবি একইদিনে মুক্তি পাচ্ছে সেটা একটা কাকতালীয় ব্যাপার। দুটো ছবিই খুব ভালো ছবি। আমি দুটো ছবির সঙ্গেই থাকতে চেয়েছি। কিন্তু সেটা হলো না, তবে খুবই ভালো লাগছে একইদিনে দুটি ছবি রিলিজ হচ্ছে। আমার আরও অনেকগুলো ছবি পাইপ লাইনে আছে, সেগুলোও রিলিজের অপেক্ষায় আছি।

অমানুষ-এ আপনার চরিত্রটি সম্পর্কে যতটুকু জানানো যায়। চরিত্রের স্পেশালিটি কি ও কেমন?

আমার চরিত্রের স্পেশালিটি বলতে যে আমি আরবান একটা ক্যারেক্টার করেছি। যে মেয়েটা বিদেশে থাকে, বিদেশেই বড় হয়েছে বাংলাদেশে বহু বছর পর এসেছে তার আত্মীর সঙ্গে দেখা করতে এবং বাংলদেশটাকে ঘুড়ে দেখতে। সেখানে এসে সে একটা বিপদের সম্মুখীন হয়। দেখা গেছে আমার যে ক্যারেক্টারটা নুদরাত, আমার ক্যারেক্টারের নাম।

নুদরাত মেয়েটা একটু ভাঙা ভাঙা বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে কথা বলে। বাংলা বলতে পারে কিন্তু ইংরেজিটাই হয়ত মুখে বেশি আসে, কারণ মেয়েটা আসলে বড় হয়েছে বিদেশে। তো বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে কথা বলে। আর অনেকটাই সরল টাইপের একটা মেয়ে এবং খুব প্রাণোচ্ছল।

কিন্তু সে যখন আবার ডাকাত দলের হাতে ধরা পড়ল, সে যে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে তা না, একই সঙ্গে সে ভীষণ সাহসী একটা মেয়ে। সেই চরিত্র অনুযায়ী আমাকে যতটুকু ধারণ করতে হয়েছে চরিত্রটাকে- সেইটুকু হয়ত করার চেষ্টা করেছি। আর এই ধরণের চরিত্র আমার আগে ওভাবে করা হয়নি।

সিনেমার একটি গানে আপনাকে একটু অন্যরকম লেগেছে। লেখ্য ভাষায় বলতে গেলে ‘আবেদনময়ী’ লুকে দেখা গেছে। বিষয়টা এনজয় করেছেন কি বা, আরও করতে চাইবেন কিনা?

হা হা হা... কিছুটা আবেদনময়ীও হয়ত হয়েছে, আমি ঠিক শিওর না কেমন হয়েছে। তবে আমি খুন এনজয় করছি কারণ গানটা যতজন দেখেছে সবাই বলেছে ভালো লেগেছে, সেটাই দর্শকের ভালো লাগলেই আমার ভালো লাগবে। আর হ্যাঁ সময় সুযোগ-গল্প সব কিছু যদি মিলে যায় অবশ্যই হয়ত করব।

অনেকদিন জঙ্গলে থেকে কাজ করেছেন। কিছু অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করেন।

জঙ্গলের অভিজ্ঞতা কি বলব। আমরা যখন শুট করি তখন ভীষণ গরম ছিল, অসম্ভব গরম। জঙ্গলে দেখা যাচ্ছে কোনো বাতাস নেই, একটা গাছের পাতাও নড়ছে না সেইরকম অবস্থাতেও শুটিং করেছি আবার জঙ্গলের ভেতরে বৃষ্টি পড়ছে সেরকম অবস্থাতেও শুটিং করেছি, পোড়া মাকড়ের কামড় খাচ্ছি আবার একই সঙ্গে পাখির গান শুনছি, সব মিলিয়ে অদ্ভুত একটা অভিজ্ঞতা। আর প্রকৃতি কাছাকাছি দীর্ঘসময় থেকে কাজ করতে পেরেছি সেটাও একটা ভাগ্যের ব্যাপার। সব মিলিয়ে সবাই খুব আনন্দ করে জঙ্গলের ভেতরে কাজ করেছি।

অনেকেই যে বিষয়টা বিস্তারিতভাবে জানতে চায়, সেটি হলো, হঠাৎ করেই মিথিলার সিনেমায় যুক্ত হওয়ার কারণ কি? মিথিলা তো চাইলে আরও আগেই সিনেমা করতে পারতেন?

অনেকটা হঠাৎ করে মনে হতে পারে। কারণ আগে আসলে সিনেমা করতে ওতটা সময় দিতে পারব ভাবতে পারিনি। কারণ দেখতেই পাচ্ছেন ছবিটা করেছি কিন্তু ছবিটার প্রিমিয়ারে থাকতে পারছি না প্রমোশনে থাকতে পারছি না। কারণ আমার যে প্রধান প্রফেশনটা আমি ব্র্যাকে কাজ করি।

আমার কাজটাই এমন যে আমাকে প্রচুর ট্রাভেল করতে হয়। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আমার প্রজেক্টগুলো জন্য যেতে হয়, কাজ করতে হয়। তো সে কারণে আমার সময় বের করাটাই কখনও সম্ভব ছিল না। সিনেমার প্রিপারেশনের জন্য শুটের জন্য।

যেটা হয়েছে যে, প্যান্ডামিক যখন শুরু হলো তখন সব মিলিয়ে অনেকটা সময় গৃহবন্দি ছিলাম। তারপরে ফিজিক্যালি অফিস যেতে হয়নি প্রায় দুটো বছর। সেইসময় কিছুটা ফাকা সময় হাতে পেয়েছিলাম তখন এই অফারটা আসে। ভাবলাম কাজটা করি। তখন সেইভাবে শুটিংও হচ্ছিলনা আমি নাটকও করছিলাম না।

তার আগে অনেকটা সময় বাড়িতে বসেছিলাম প্যান্ডামিকের জন্য। তখন মনে হলো- নাহ খুব ইন্টারেস্টিং গল্প, জঙ্গলের ভেতরে শুট হবে-মজাই হবে সবাই মিলে। করে নেই সিনেমাটা। এরকমভাবে হুট করে ডিসিশন আসলে। সেভাবে পরিকল্পনা করে শুরু করা হয়নি।

যে চরিত্র আপনাকে মুগ্ধ করবে, আপনি সেই চরিত্রে অভিনয় করবেন। কিন্তু অমানুষ সিনেমার মাধ্যমে আপনার ‘নরম বা স্নিগ্ধ স্বভাব’ এর যে একটি ইমেজ রয়েছে (আপনি নরম বলেছিলেন), সেটি ভাঙার কোনো নিরীক্ষা কি করতে চেয়েছেন?

আসলে অমানুষের যে চরিত্রটা, নুদরাতের যে চরিত্রটা আমি বলব যে সেটাও আমার নরম স্নিগ্ধ স্বভাবের বাইরে না। নুদরাত তো খুবই নরম একটা মানুষ, স্নিগ্ধ স্বভাবের একটা মানুষ, খুব প্রাণোচ্ছল একটা মানুষ। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে পরিস্থিতির কারণে সে আবার ভীষণ শক্ত এবং ভীষণ সাহসীও। তো আমি সেভাবে আলাদা করে ভাঙার নিরীক্ষা করতে চাইনি।

কারণ চরিত্রটা যেমন আমি সেভাবেই চেষ্টা করেছি প্রস্তুতি নিতে। তবে আমি বলব যে, ভাঙার বিষয়টা যদি বলি, আমি তো কখনও এই ধরণের বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে কাজ করব সেটা তো কখনো ভাবিনি, বা আমি হয়ত আগে কাজ করিওনি। আমি বলব যে, টেলিভিশনে যে ধরণের কাজ হয়, নাটক বা ওয়েব সিরিজগুলো হয় সে ধরণের কাজ করেছি।

কিন্তু এ রকম একটা এই জনরার ছবিতে একটু গ্ল্যামারাস, আমার গানটা যেরকম সবাই দেখেছে অলরেডি; সেইরকম গ্ল্যামারাস চরিত্রে, হয়ত চরিত্রটা সব সময় গ্ল্যামারাস নয়- গানটিতে, কিন্তু সেরকমও আগে কখনও করিনি। তো আমার মনে হয় এটাই আমার নতুন করে নিজেকে আবিস্কার করা।

ভাঙার যদি কোনো নীরিক্ষার কথা বলেন তাহলে এটাই আমি ভেঙেছি নিজেকে। যেটা আমি কখনও করিনি, আমি ভীষণভাবে একটা গ্ল্যামারাস গান শুট করেছি। আমি ব্যাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে কাজ করেছি সেটাই তো আমার নিজেকে ভাঙা। আমি তো গতানুগতিক এরকম কোনো কাজ করিনি।

অমানুষ সিনেমায় আপনার চরিত্রের গঠনে কিছু ফ্যান্টাসির যোগ আছে বলে মনে হয়। কিন্তু কলকাতায় আপনার অভিনীত যে সিনেমা, সেগুলোর ট্রেইলারে আপনার চরিত্রগুলো আরও কিছুটা বিশ্বাসযোগ্য বা ওই ঘটনায় সামঞ্জস্য মনে হয়। এটা কি দর্শক হিসেবে আমার বা আমার মতো যারা আছেন তাদের সমস্যা? নাকি চরিত্র মেকিং ও ডিজাইন একটা ফ্যাক্টর?

অমানুষ সিনেমায় আমার চরিত্রে ফ্যান্টাসি যোগ আছে বলে আমার মনে হয়না আসলে। বরং অমানুষের চরিত্রটাই একটু ফ্যান্টাসির মতো। জঙ্গলের ভেতর ডাকাত দল, ডাকাত দল কিডনাপ করে নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে অদ্ভুত সব সিচুয়েশন হচ্ছে-আমার মনে হয় পুরো গল্পটাই ফ্যান্টাসি। আমার চরিত্রে সেভাবে আলাদা করে ফ্যান্টাসির কিছু নেই।

আর কলকাতায় যে সিনেমা বা ট্রেইলারগুলোতে আমার চরিত্র দেখা গেছে সেগুলো বিশ্বাসযোগ্য, সেটা দর্শকদের কাছে যদি বিশ্বাসযোগ্য বা সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয় তাহলে খুবই ভালো কথা।

আসলে আমি তো আর ডিরেক্টর না, আমি তো ওই ভাবে... আমার কাছে মনে হয়েছে যখন যেই গল্পের জন্য যে চরিত্র ধারণ করতে হয়, আমি ঠিক সেরকম চরিত্রই ধারণা করার চেষ্টা করি।

এ বিভাগের আরো খবর