ভারতীয় চ্যানেল জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘দাদাগিরি’তে সম্প্রতি অংশ নিয়েছেন আলোচিত সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলির উপস্থাপনায় শোর সিজন ৯-এ হাজির হয়েছিলেন তিনি।
দস্যুমুক্ত সুন্দরবন গড়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় মোহসীনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শোতে। সেখানে সৌরভ গাঙ্গুলির বিনয়ী আচরণে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন এ সাংবাদিক।
শোর অভিজ্ঞতা নিয়ে মোহসীন-উল হাকিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি নিজে চিন্তা করি যে, মানুষের অনেকগুলো গুণের মধ্যে একটা গুণ হতে হয় বিনয়। আমি বিনয়ী হওয়ার চেষ্টা করি। যেমন- সৌরভ গাঙ্গুলির সামনে গিয়ে নিজেকে তুচ্ছ মনে হলো। কারণ উনি এত বড় একজন তারকা খেলোয়াড়। এ রকম একটা মানুষের সঙ্গে যখন সামনাসামনি কথা হয়… আমাদের প্রফেশনাল কারণে নানাভাবে এই মাপের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়; কিন্তু এবারের বিষয়টা একটু ভিন্ন।
‘কারণ তাদের নিমন্ত্রণে সেখানে অতিথি হয়ে আমি গিয়েছি এবং সেখানে তাদের আতিথেয়তা এবং সৌরভ গাঙ্গুলি এত বড় মানুষ এবং এত বিনয়ী। আমি এটাই শিখে এসেছি যে আমাদের আরও বিনয়ী হতে হবে।’
তিনি জানান, গত ২৯ এপ্রিল কলকাতার নিউটাউনের রাজারহাটে ডিআরআর স্টুডিওতে এই অনুষ্ঠানের শুটিং হয়েছে। পর্বটি প্রচার হবে ৮ মে, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। এটি একটি বিশেষ পর্ব। রবীন্দ্রজয়ন্তীর বিশেষ এপিসোড।
এই পর্বে বিদেশি অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন মোহসীন-উল হাকিম।
তিনি বলেন, ‘আমাকে তারা এই পর্বে যুক্ত করেছে বিদেশি অতিথি হিসেবে। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অনেক আগেই, সেটা সাত থেকে আট মাস হবে, কিন্তু কোভিডের কারণে সময় মেলেনি। তাই এই দফায় তারা আবারও আমাকে ডাকে। এই শোর সিজন নাইন শেষের দিকে।
‘তারা খুব করে চাচ্ছিলেন যে এই সিজন নাইনের একটা পর্বে যেন আমি অবশ্যই থাকি। আমি যদিও সেখানে অতিথি, তবুও তাদের যে খেলাটা বা প্রতিযোগিতাটা হয়, সেখানে অংশ নিয়েছিলাম।’
অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে এ সাংবাদিক বলেন, ‘এমন জনপ্রিয় একটা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো নিঃসন্দেহ সম্মানের ব্যাপার। আমি সেখানে বাংলাদেশকেই প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমাদের গণমাধ্যমকে প্রতিনিধিত্ব করেছি এবং আমাদের সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্ব করেছি। এক কথায় অসাধারণ অনুভূতি।’
দাদাগিরি টিম কীভাবে তাকে খুঁজে পেয়েছে, সে বিষয়েও জানিয়েছেন মোহসীন-উল হাকিম।
তিনি বলেন, ‘আমাকে তারা খুঁজে পেয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, ফেসবুক এবং ইউটিউবে। তাদের যে রিসার্চ টিম, তাদের আমি জিজ্ঞেস করেছি, আমাকে কীভাবে খুঁজে পেলেন আপনারা। তারা আমাকে জানালেন, তাদের টিমের সিনিয়র রিসার্চার, তাদের আলোচনায় আমার প্রসঙ্গটা তুলেছিলেন যে, এ রকম বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক যিনি সুন্দরবন নিয়ে এ রকম কাজ করছেন।
‘যখন উনি বলেছেন, তখন টিমের বাকিরাও নাকি বলেছেন যে আমরাও তার কাজ দেখি, ভিডিও দেখি। এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আমাকে পেয়েছে।’
মোহসীন-উল হাকিম দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত করতে কাজ করেছেন। তার মধ্যস্থতায় আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে সুন্দরবনের দুই শতাধিক জলদস্যু স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছেন।
এমন কাজের জন্য তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম; পুরস্কৃত করেছে সরকার।‘সুন্দরবনের জলদস্যুদের জীবনে ফেরার গল্প’ নামে একটি বইও লিখেছেন মোহসীন।