আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার, বাংলা চলচ্চিত্রের ধ্রুবতারা, ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। একাধারে তিনি আলোকচিত্রী, চিত্রকর, শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ হিসেবেও খ্যাত।
সেলুলয়েডে ভারতীয় অবস্থানকে তুলে ধরার পাশাপাশি উপমহাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছে তিনি হয়ে আছেন অনুপ্রেরণা।
২ মে এপ্রিল কীর্তিমান এ নির্মাতার জন্মদিন। ১৯২১ সালের এই দিনে কলকাতায় তার জন্ম। তিনি প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় ও সুপ্রভা রায়ের সন্তান।
মহান এই ব্যক্তির জন্মদিন উপলক্ষে মে মাসজুড়ে তার কালজয়ী ৮টি সিনেমা নিয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি সাজিয়েছে তাদের বিশেষ আয়োজন ‘সত্যজিৎ স্পেশাল’। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২ মে মুক্তি পাবে হীরক রাজার দেশে। এরপর ৯ মে অশনিসংকেত ও সোনার কেল্লা। ১৬ মে পথের পাঁচালী, অপরাজিত, ২৩ মে অভিজান, চিড়িয়াখানা, ৩০ মে জলসাঘর। সেই সঙ্গে অল্প কথায় জেনে নেয়া যাক এইসব চলচ্চিত্রের কথা।
হীরক রাজার দেশে
রূপক আশ্রয়ে চলচ্চিত্রটিতে কিছু ধ্রুব সত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এটি গুপী গাইন বাঘা বাইন সিরিজের একটি চলচ্চিত্র। এর একটি বিশেষ দিক হচ্ছে একজন ছাড়া সব চরিত্রের সংলাপ ছড়ার আকারে করা হয়েছে।
অশনিসংকেত
চলচ্চিত্রটির পটভূমি ১৯৪৩-৪৪ সালের দুর্ভিক্ষপীড়িত বৃহত্তর বাংলা। এই দুর্ভিক্ষ কীভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছিল তা-ই এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য।
সোনার কেল্লা
স্কুলপড়ুয়া মুকুল ধর দাবি করে, তার পূর্বজন্মের সব কথা মনে আছে। সোনার কেল্লায় রত্নের কথা উল্লেখ করার পর মুকুলকে অপহরণ করেন ড. হাজরা। ফেলুদা এই কেস নিজ হাতে নেন।
পথের পাঁচালী
অপু এবং দুর্গার বাবা নিশ্চিন্তপুরের পুরোহিত হরিহর রায় পরিবার রেখে শহরে যান উন্নত জীবনের আশায়। আর গ্রামে অপু-দুর্গার দুরন্ত শৈশব কাটে অভাব–অনটনে। একপর্যায়ে দুর্গা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে, কিন্তু তার মায়ের ওষুধ কেনার মতো সামর্থ্য নেই। দুর্গা-অপুর দুরন্ত শৈশব ও সামাজিক পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে নির্মিত পথের পাঁচালী।
অপরাজিত
বাবা হরিহর মারা যাওয়ার পর অপু ও তার মা সর্বজয়ার নতুন জীবন শুরু হয় বেনারসে। একসময় বৃত্তি পেয়ে পড়াশোনার জন্য কিশোর অপু বেনারসের মামার বাড়ি থেকে কলকাতায় পাড়ি জমায়। একা হয়ে পড়ে সর্বজয়া। ছেলের জন্য অপেক্ষায় দিন কাটে তার। ছেলের জন্য পথ ধরে বসে থাকে সে। অপু কি ফিরে আসে তার মায়ের ডাকে?
অভিযান
রাজপুত হওয়া সত্ত্বেও নরসিংহ নিজেকে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করেন। ব্যবসায়ী সুখারাম একদিন তাকে বিরাট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আফিম পাচারের প্রস্তাব করেন। নরসিংহ কি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবেন?
চিড়িয়াখানা
ব্যোমকেশ বক্সীর হাতে আসে এক নতুন কেস। সুনয়না নামের এক অভিনেত্রীর নিখোঁজ যাওয়ার ঘটনা তদন্তের জন্য নিশানাথ বাবু অনুরোধ করেন ব্যোমকেশকে। কিন্তু নিশানাথ বাবু নিজে খুন হওয়ার পর ঘটনা আরও জটিল হয়ে ওঠে। এখন কী করে ব্যোমকেশ বক্সী এই কেস সলভ করবেন সেটাই দেখতে হবে।
জলসাঘর
জমিদার বিশ্বম্ভর রায়ের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা তার জলসাঘর। সেখানে কদিন পরপর বাইজি ডেকে গানে আর সুরায় মশগুল হয়ে থাকতেন তিনি। হঠাৎ একদিন এক দুর্ঘটনায় বিশ্বম্ভর বাবুর স্ত্রী ও ছেলে খোকা মারা যায়। এরপর থেকে জমিদার বিশ্বম্ভর গানের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। হারিয়ে ফেলেন তার সহায়–সম্পত্তিও। বিশ্বম্ভর বাবু কি আবার তার জলসাঘরে আলো ফেরাতে পারবেন? ফিরে পাবেন হারানো প্রভাব–প্রতিপত্তি?