বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিজেকে প্রমাণ নয়, প্রকাশ করতে চাই: বিপাশা

  •    
  • ২২ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৫৬

বিপাশা যা-ই করেন না কেন, সেটাকে অর্থবহ করার চেষ্টা করেন। জীবন, সময় বা কাজটা যেন মিনিংফুল হয়, সেই চেষ্টাই করেন সব সময়। এ চর্চার মাধ্যমেই হয়তো তিনি হয়ে উঠবেন প্রকৃত শিল্পী।

মানুষ নানা কাজের মধ্য নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করে এগিয়ে যায়। বিপাশা হায়াতও এগিয়ে যেতে চান, তবে নিজেকে আর প্রমাণ করে নয়। তার ইচ্ছা নিজেকে প্রকাশ করা। নানা রকম কাজের মাধ্যমে সে প্রকাশ হতে পারে।

সম্প্রতি দেশে এসেছেন অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। আড়াই বছর ধরে তিনি থাকছেন আমেরিকায়। সেখানেই করছেন শিল্পের চর্চা। ২৪ এপ্রিল তিনি ফিরে যাবেন আমোরিকায়। প্রদর্শনীস্থলেই তার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।

বাংলাদেশে এসে ‘প্রস্তরকাল’ নামের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন বিপাশা। বিপাশা জানান, মাত্র চার দিনের সিদ্ধান্তে এ প্রদর্শনীর আয়োজন।

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া যে চিত্রকর্ম সেগুলোর মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন এ শিল্পী।

অভিনেত্রী, চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

বিপাশা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে যে চিত্রকর্মগুলো আছে, সেগুলো যদি বিক্রি নাও হয়, আমার কোনো কষ্ট হবে না। আমি এ কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইনি। আমি এখন আমাকে দেখতে চাই আমার কাজের মাধ্যমে। আমি আমার নিজেকে প্রকাশ করতে চাই বা চিহ্ন রেখে যেতে চাই।’

প্রদর্শনীস্থলে একটি ভিডিওতে বিপাশার চিত্রকর্মের প্রস্তুতি দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, একটি পাথরের গায়ে তিনি খোদাই করছেন। তিনি সেই ভিডিওতে বলেছেন, ‘আমি যে পাথরটিকে খোদাই করলাম, বলতে পারেন এর মাধ্যমে আমি আমার চিহ্ন রেখে গেলাম।’

শুধু চিত্রকর্মেই নয়, নানান কাজে নিজের মাধ্যমে চিহ্ন রেখে যেতে চান বিপাশা। বিপাশা লিখতে চান। চলচ্চিত্র নির্মাণেও সংশ্লিষ্ট হতে চান। একটি ওয়েব সিরিজের জন্য গল্প লিখেছেন সম্প্রতি, করছেন চিত্রনাট্য।

অভিনেত্রী, চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

বরারবই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন বিপাশা। অভিনয়জীবনের একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আগে থেকেই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। আগে যখন অভিনয় করতাম, তখন আমার বাসায় ফিরতে রাত ১টা, ২টা ৩টাও বেজে যেত। রাতে বাড়ি ফেরা নিয়ে অনেকের (পরিবার ছাড়া) নানা কথা আমার কানেও এসেছে। সেখানে দমে গেলে কি আর আগাতে পারতাম। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।’

বিপাশা যা-ই করেন না কেন, সেটাকে অর্থবহ করার চেষ্টা করেন। জীবন, সময় বা কাজটা যেন মিনিংফুল হয়, সেই চেষ্টাই করেন সব সময়। এ চর্চার মাধ্যমেই হয়তো তিনি হয়ে উঠবেন প্রকৃত শিল্পী।

বিপাশার কাছে শিল্পী কী? ‘আমার কাছে শিল্পী একজন সাধক। জীবন, শিল্পী ও সাধনা একখানে হলেই শিল্পী হওয়া যায় বলে আমার বিশ্বাস।’ বলেন বিপাশা।

দেশের শিল্পচর্চা নিয়ে তেমন কোনো কথা বলেননি বিপাশা। জানিয়েছেন, পড়াশোনার ওপর জোর দিতে হবে।

অভিনেত্রী, চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

বিপাশা বলেন, ‘দর্শন শিক্ষা খুব জরুরি। এটা সব বয়সীই পড়তে পারেন। আমি নিজে এনসিয়েন্ট গ্রিক লিটারেচার পড়ি। আমাদের যেটা মনে রাখা উচিত, মতামত অনেক রকম থাকবে কিন্তু আমাদের জাজমেন্টাল হওয়া যাবে না।’

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতেও শিল্পের বিকাশ হতে পারে বা হবে বলেই মনে করেন বিপাশা। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন যেমন জীবন-যাপন, অন্যখানে তার চেয়েও খারাপ থাকে মানুষ। এ দেশে তো মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে। অনেক জায়গায় খুবই বাজে অবস্থা। ম্যাক্সিম গোর্কির সাহিত্য পড়লেও দেখবেন, কত সমস্যার মধ্যে থেকেও এগিয়ে যাওয়া যায়।’

বিপাশাও এগিয়ে যাচ্ছেন। এই এগিয়ে যাওয়ায় বিপাশাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও সিম্পল চিন্তাভাবনা করেছি, এখনও করি।

‘তবে আমি আমার নাটক সিনেমা দেখি না, বিরক্ত লাগে। আগুনের পরশমণি সিনেমাটি কয়েকবার দেখেছি। এখন দেখলে মনে হয় এত বাজে অভিনয় করেছি। একই রকম লাগে নিজের অভিনীত নাটক দেখলেও।’

সব সময় নিজেকে মূল্যায়ন করার মধ্যে রাখা দরকার। নিজেদের একটা নিউট্রাল জায়গা থেকে দেখা দরকার বলে মনে করেন বিপাশা। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে ধারণা তার।

নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্যালারি চিত্রকে বিপাশা হায়াত। ছবি: নিউজবাংলা

‘প্রস্তরকাল’ শিরোনামে যে প্রদর্শনী চলছে গ্যালারি চিত্রকে, সেখানেও বিপাশাকে পাওয়া যায় কিছুটা। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘পাথর এবং সময় দুটোই আমাকে খুব ছোটবেলা থেকে ভাবাত। সময় হলো চতুর্থ মাত্রা, যাকে দেখা যায় না, স্পর্শ করা যায় না এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যা অজানা তা-ই আমার কাছে আকর্ষণীয়। আমার কাজের মাধ্যমে, নিজস্ব ধারায় আমি সময়কে সংরক্ষণ করেছি বিভিন্ন পর্যায়ে। সেটি আমার কাছে নিয়ন্ত্রণও।

‘কিন্তু এই পাথর যেমন একটি বিশাল সময়কালকে নিজের গহিনে ধারণ করে তার পুনঃআকার নেয়, তেমনি মানুষের ভেতরেও লুকিয়ে আছে মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করে এই মুহূর্ত অবধি পুরো জীবন। আমি পাথরের ভেতরে সময়কে দেখতে পাই। আবার কখনো কখনো সময় প্রস্তররূপে আবির্ভূত হয়।’ প্রদর্শনী চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।

এ বিভাগের আরো খবর