প্রবাসী বাংলাদেশি গায়ক, গীতিকার ও সুরকার আরজীন। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ হয়েছে তার গানের প্রথম অ্যালবাম ‘আরজীন’।
এই অ্যালবাম প্রকাশ উপলক্ষে ১৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের টপেঙ্গা ক্যানিয়নে ‘কোরাজন পারফরমিং আর্টস সেন্টার’ একটি লাইভ কনসার্টের আয়োজন করে ৷
নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন আরজীন।
তিনি জানান, তার এ কনসার্ট দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশটি অ্যালবামের গানগুলোর পরিবেশনা দিয়ে শুরু হবে। এরপর তিনি বাংলা লোকগান পরিবেশন করবেন।
এই অ্যালবামে 'বন্ধু বাজাও সুর’, ‘শান্তি’, ‘আহারে জীবন’, ‘গান হবে’, ‘এখনই কি যাবার বেলা’, ‘আমি তোমার জলে’, ‘তুই আর আমি’, এবং ‘বেরিয়ে এসো’সহ আটটি গান রয়েছে।
গানগুলোর সুর নিজেই করেছেন আরজীন। ছয়টি গানের কথা এবং দুটির আংশিক কথা তার নিজের লেখা।এগুলোর সংগীত আয়োজনে ছিলেন আরজীনের বন্ধু ব্রাইস লামার। অ্যালবামটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘আর্টিস্ট আখড়া রেকর্ড লেবেল’ থেকে প্রকাশিত হয়।
অ্যালবামের গানগুলো শোনা যাবে ‘আরজীন’ নামের ইউটিউব চ্যানেল, স্পটিফাই, ইউটিউব মিউজিক, অ্যাপল মিউজিক, আই টিউন্স, ব্যান্ড ক্যাম্প এবং আমাজন মিউজিকে।
ওই অ্যালবামের প্রথম গান ‘বন্ধু বাজাও সুর’-এর মিউজিক ভিডিওটি প্রকাশ হয়েছে ১৪ এপ্রিল।
আরজীনের গানের যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১১ বছর ধরে সেটি ধরে রেখেছেন তিনি।
বাংলাদেশের আলতাফ মাহমুদ মিউজিক অ্যাকাডেমি এবং বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে গানের তালিম নেন আরজীন।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসকারী ভারতীয় পণ্ডিত গিরিশ চ্যাটার্জির কাছ থেকে সে দেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের পাঠ নিচ্ছেন আরজীন।দেশে থাকাকালীন আরজীন বিটিভিসহ কিছু বেসরকারি টেলিভিশনে নিজের লেখা গান করেছেন।
‘মুসাফির’, ‘অস্তিত্ব’ ও ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামের বাংলাদেশের তিনটি চলচ্চিত্রের জন্যেও গান লিখেছিলেন আরজীন। সে গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসান, পড়শি, তাহসিন ও নন্দিতার মতো শিল্পীরা।
গান নিয়ে স্মরণীয় ঘটনার কথা উল্লেখ করে আরজীন বলেন, ‘২০১৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলসের ডিপার্টমেন্ট অফ কালচারাল অ্যান্ড প্রমিস জোনের আমন্ত্রণে বাংলা ফোক গানের পরিবেশনা ছিল আমার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা।
‘এরপর আমার বিভিন্ন গানের পরিবেশনা নিয়ে একটি স্টোরি করে ডিপার্টমেন্ট অফ কালচারাল অ্যান্ড প্রমিস জোন তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্য স্কিরবল কালচারাল সেন্টার থেকে আমার ডাক আসে, যেখানে দুটি বাংলা গানের শো করেছি।’
এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘‘লস অ্যাঞ্জেলসের রেকর্ড লেভেল ‘পিঙ্ক টারবান’ থেকে ‘প্রেম দে’ শিরোনামে আমার একটি গান প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি পরবর্তী সময়ে সাউথ আফ্রিকার প্রখ্যাত ডিজে এবং মিউজিক প্রডিউসার ‘দাস কাপিতাল’ রিমিক্স করে, যা বিবিসি রেডিওতেও প্রিমিয়ার হয়েছে।’’
তিনি জানান, লস অ্যাঞ্জেলসের সাইকেডেলিক পপ ব্যান্ড মিস্টিক্যাল জয়রাইড তাদের ‘কনডাক্টো’ অ্যালবামে তাকে ফিচার করেছে, যেখানে ইংরেজি গানে তার বাংলা গান মেশানো হয়েছে।
ব্যক্তিজীবন নিয়ে আরজীন জানান, তার জন্ম যশোরে; বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞানে। সেখানে ৩১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। এখন প্রবাসী হলেও বাংলা গান যেন তার ধ্যানজ্ঞান।
গান নিয়ে ব্যস্ততা ও স্বপ্নের বিষয়ে আরজীন বলেন, ‘‘আমার নিজস্ব পরিবেশনা ছাড়াও বর্তমানে ‘পপ ব্যান্ড মিস্টিক্যাল জয়রাইড’ ব্যান্ডের সঙ্গে আরও কিছু গানের কাজ করছি। বর্তমান ভাবনা শুধু বাংলা গান নিয়ে। আমার নিজের লেখা ও সুর করা গান এবং বাংলা ফোক গানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।’’