বাংলাদেশে পপসংগীত নিয়ে কাজ করা প্রথম ব্যক্তি ও তারকা আজম খান। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এ শিল্পী। এর বাইরে ক্রিকেটার, সাঁতারু, অভিনেতা পরিচয়ও ছিল তার।
এতসব গুণে গুণান্বিত প্রয়াত শিল্পীর ৭২তম জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯৫০ সালে ঢাকার আজিমপুরে জন্ম আজম খানের। তার বাবা আফতাবউদ্দিন খান ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। মায়ের নাম জোবেদা খাতুন।
১৯৭২ সালে আজম খান বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ‘উচ্চারণ’ নামে ব্যান্ড দল। সেই বছরই বিটিভিতে তার ব্যান্ড প্রথম কনসার্ট করে। সে অনুষ্ঠানে গাওয়া দুটি গান ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ পায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
তার পপ গানের বিশেষত্ব হলো পশ্চিমা ধারাকে বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র রীতি তৈরি। আর তা বোঝা যায় গানের কথা ও সুরে।
আজম খান তার গানের কথা তুলে আনতেন আশপাশের দেখা ঘটনা থেকে। তাই তো তার গানে উঠে এসেছে স্বাধীনতার পর রেল লাইনের বস্তিতে ছেলের জন্য অপেক্ষা করা এক মায়ের গল্প।
আজম খানের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘বাংলাদেশ’, ‘জীবনে কিছু পাব না’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানী’ ও ‘আসি আসি বলে’ উল্লেখযোগ্য।
১৯৮২ সালে প্রকাশ হয় আজম খানের প্রথম অ্যালবাম ‘এক যুগ’। একক, দ্বৈত ও মিশ্রসহ তার অ্যালবামের সংখ্যা ২৫টি। মৃত্যুর পর ২০১১ সালে আজম খানের শেষ অ্যালবাম প্রকাশ হয়। অ্যালবামটির নাম ‘গুরু তোমায় সালাম’।
প্রয়াত ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু এক বিজ্ঞাপনে আজম খান সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে তার হাতে রাইফেল বেজেছে গিটারের মতো। স্বাধীন বাংলাদেশে তার হাতে গিটার বেজেছে রাইফেলের মতো। গুরু তোমায় সালাম।’
সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আজম খানকে মরণোত্তর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক দেয়।
দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু হয় আজম খানের।