করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার সময় ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সচিবালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের কারণে বইমেলা নিয়ে আমরা একটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম যে, আদৌও বইমেলা আমরা শুরু করতে পারব কি না। একসময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, বইমেলা স্থগতি করা হবে। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত নির্দেশনা দিলেন ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু করতে।
‘উদ্বোধনের পর জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বিক্রেতারা এবং বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্তরা সময়টি বৃদ্ধি করা যায় কি না, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেটি আবেদন করেন। আমরা তখনই বলেছিলাম যে, সংক্রমণ যদি কমতে থাকে, তাহলে বইমেলার সময় বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেছিলেন ১৭ মার্চ পর্যন্ত মেলা বৃদ্ধি করা যেতে পারে, তবে সেটি নির্ভর করছে আমাদের কোভিড পরিস্থিতির ওপর। আজকে সুসংবাদ হলো সকালে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন এবং ১৭ মার্চ পর্যন্ত বইমেলা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ। এ পর্যন্তই মেলাটির সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত বছর যারা বইমেলায় অংশ নিয়েছিলেন, তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। কারণ মেলা শুরু হয়েছিল ১৮ মার্চে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল পয়লা বৈশাখ, কিন্তু সংক্রমন হার বৃদ্ধির কারণে ১২ তারিখে মেলা শেষ করতে হয়।
‘বিক্রেতা বা সম্পৃক্ত যারা সবাই চাইছিলেন সময়টা বৃদ্ধি করলে ক্ষতিটা পুষিয়ে নেয়া যাবে। এবার কিন্তু বইমেলায় মানুষের ঢল নেমেছে।’
মেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে লেখক, প্রকাশক, বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরাও চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা পরিচালনা করতে। মাস্ক পরার বিষয়ে আমরা কড়াকড়ি আরোপ করেছি।
‘অনেকে মাস্ক পরতে চায় না। ঢোকার সময় হয়তো পরে, কিন্তু ভেতরে গিয়ে খুলে ফেলে। বইমেলায় যারা যায়, তারা কিন্তু সজ্জন ব্যক্তি। তাই অনুরোধ করব, তারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি।’
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই এ বছরের গ্রন্থমেলা আয়োজন নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা অনিশ্চয়তা। এর মধ্যেই ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় গ্রন্থমেলা।
সাধারণত মাসব্যাপী আয়োজন হয়ে এলেও এ বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে সময়ই দাবি ছিল মেলার সময় বৃদ্ধির।
প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে বইমেলা। অবশ্য ছুটির দিনে বেলা ১১টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশ মিলিয়ে মেলার মোট আয়তন প্রায় সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট। মেলায় রয়েছে ৩৫টি প্যাভিলিয়ন। এ ছাড়া একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে ১৪২টি স্টল।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৬৩৪টি স্টল। সব মিলিয়ে এবার মেলায় অংশ নেয়া সংস্থার সংখ্যা ৫৩৪টি।