আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল সুলতানা’স ড্রিম। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখান থেকে নারী নির্মাতাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হবে। প্ল্যাটফর্মটি থেকে প্রথমবারের মতো ১৬ জন নারী নির্মাতাকে নিয়ে শুরু হলো চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা।
এ কর্মশালা থেকে সেরা দুজন নির্মাণ করতে পারবেন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স শিরোনামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার রাজধানীর ফার্মগেটে সুলতানা’স ড্রিম কার্যালয়ে মাসব্যাপী কর্মশালার শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রকার রুবাইয়াত হোসেন, গ্যেটে ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের পরিচালক ক্রিস্টান হ্যাকেনব্রোক, চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিক সাদিয়া খালেদ ঋতি, মনস্তাত্ত্বিক সৈয়দা ইফফাত হোসেন, চলচ্চিত্র প্রযোজক আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা তাসমিয়াহ্ আফরিন মৌ, মেহেদি হাসান, চৈতালী সমাদ্দার, শব্দ প্রকৌশলী নাহিদ মাসুদসহ আরও অনেকে।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া ১৬ প্রতিযোগী হলেন লাবনী আশরাফ, আতশী কর্মকার, ফাতিহা তাইরা, জাহারা নাজিফা নোভা, নুসরাত জাহান ইশাত, ফারাহ জলিল, আফ্রিদা মেহজাবীন, ফারিয়া বেগম রাইয়া, ফাজানা নূর, নেহা শামীম, ফারিয়া মানার, মনন মুনতাকা, মাহমুদা আক্তার মনিশা, প্রাচিতা অহনা আলম, তিজাইয়া থমাস এবং শিহাব।
কর্মশালায় প্রশিক্ষকদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
আয়োজন প্রসঙ্গে রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় এক যুগ। আমি দেখেছি দেশে নারী নির্মাতা একেবারে হাতে গোনা। চলচ্চিত্র নির্মাণে তারা বৈষম্যের শিকার। আমার মনে হয়েছে বৈষম্যের এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে এবং দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বেশি করে নারী নির্মাতাদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে আমরা যারা আছি, তাদের সঙ্গে আরও মেয়েদের চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসা উচিত। কিন্তু তার আগে দরকার মেয়েদের চলচ্চিত্র নির্মাণ শেখানো। সেই ভাবনা থেকেই আমাদের এই আয়োজন।’
১৬ জন নির্মাতাকে আগামী এক মাস কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেবেন চিত্রনাট্যকার ফিলিপ বাহরিয়ে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা তাসমিয়াহ্ আফরিন মৌ, মেহেদি হাসান, চৈতালী সমাদ্দার, চলচ্চিত্র প্রযোজক আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ, পাকিস্তানের অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সিমাব গুল, পাকিস্তানের চলচ্চিত্র নির্মাতা সিয়াম সাদিক, ভারতের চলচ্চিত্র প্রযোজক ও প্রডাকশন ডিজাইনার জোনাকী ভট্টচার্য্য, ভারতের ফিল্ম কিউরেটর মিনাক্ষি শেড্ডি, বাংলাদেশের শব্দ প্রকৌশলী নাহিদ মাসুদ, চিত্রগ্রাহক বরকত হোসেন পলাশ এবং মনস্তাত্ত্বিক সৈয়দা ইফফাত হোসেন।
এই সুলতানা’স ড্রিমের আয়োজনের সহ-আয়োজক হিসেবে থাকছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খনা টকিজ। পরিবেশকের দায়িত্বে থাকছে গ্যেটে ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ। এ ছাড়া নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো দেশব্যাপী প্রদর্শিত হবে।
সুলতানা’স ড্রিম বা সুলতানার স্বপ্ন, দক্ষিণ এশিয়ায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের একটি গল্প। এটি ১৯০২ সালে লেখাটি প্রকাশিত হয় দি ইন্ডিয়ান লেডিস ম্যাগাজিনে। যেখানে বেগম রোকেয়া তার কল্পনার জগৎকে দেখেছেন সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে। তার কল্পনার জগতে ছেলেরা অন্দর মহলে অবস্থান করে, মেয়েরা কোনো ভয় এবং সংকোচ ছাড়াই বাইরের জগতে বিচরণ করতে পারে।
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এমন একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়, যেখানে মেয়েরা নিজেদের সঙ্গে বা আশপাশে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনাগুলো কোনো রকম সংকোচ ছাড়াই জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারবে।