কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের। এর কয়েক ঘণ্টা পর মধ্যরাতের একটু আগে মৃত্যু হয় ভারতের আরেক বিখ্যাত শিল্পী ও সুরকার বাপ্পী লাহিড়ীর।
মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৬৯ বছর বয়সী শিল্পীর।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ভারতের কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতে আশি ও নব্বইয়ের দশকে ডিস্কো গানকে জনপ্রিয় করা বাপ্পীর মৃত্যু হয় মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. দীপক নামযোশী বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন লাহিড়ী, যাকে সোমবার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছিল, তবে মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাসায় ডাক্তার ডাকা হয়। পরে তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
‘তার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল। মধ্যরাতের কিছু আগে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় (ওএসএ) তার মৃত্যু হয়।’
ভারতের চলচ্চিত্র সংগীতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বাপ্পী লাহিড়ী ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘ড্যান্স ড্যান্স’, ‘নামাক হালাল’-এর মতো চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় গানের সুরস্রষ্টা। বাংলা অনেক সিনেমায়ও সুরকার ছিলেন তিনি।
নিজের সুর করা বেশ কিছু গান গেয়েছেন তিনি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘কোয়ি ইয়াহা নাচে নাচে’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘পেয়ার বিনা চ্যান কাহা’।
বাপ্পীর সর্বশেষ বলিউড গান ছিল ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ‘বাঘি-৩’-এর জন্য গাওয়া ‘ভাঙ্কাস’।
বাপ্পী দা হিসেবে পরিচিত এ শিল্পীর ট্রেডমার্ক ছিল সোনার চেইন ও বর্ণিল সানগ্লাস।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জন্ম বাপ্পী লাহিড়ীর। তার আসল নাম অলোকেশ লাহিড়ী।
ধ্রুপদী সংগীতচর্চার সমৃদ্ধ ইতিহাস ছিল বাপ্পীর পরিবারের। মাত্র ১৯ বছর বয়সে সংগীত পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি।
বাপ্পীর বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন বাংলা গানের বিখ্যাত শিল্পী। তার মা বাঁশরী লাহিড়ীও শিল্পী ছিলেন, যিনি বিশেষভাবে পরিচিত ধ্রুপদী ও শ্যামা সংগীতের জন্য।
সংগীতে জীবন গড়া মা-বাবার কাছ থেকে গানের প্রতিটি দিক শেখার সুযোগ হয়েছিল এ শিল্পীর।
ভারতের ৬৩তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড জিতেন বাপ্পী লাহিড়ী।
সংগীতের বাইরে রাজনীতিতেও যুক্ত হয়েছিলেন বাপ্পী। ২০১৪ সালে ভারতের কেন্দ্রে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি, তবে ওই বছর অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হেরে যান তিনি।