বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমার গানের অসম্ভব প্রশংসা করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর: সাবিনা

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:৪৮

সাবিনা ইয়াসমিন বলতে থাকেন, ‌‘তারপর আরেকটা গান করতে যখন বসলাম। কিছুই ছিল না; শুধু হারমোনিয়ামে গান হচ্ছিল। হঠাৎ দেখি, দূর থেকে লতা মঙ্গেশকর ঢুকছেন, আমি তো সঙ্গে সঙ্গে হারমোনিয়াম ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে পালিয়ে গেছি। মানে আমি গান গাইতেই পারব না উনার সামনে, কোনো প্রশ্নই উঠে না।’

ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের। তার এ মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা লতার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোও শেয়ার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সাংবাদিকদের সঙ্গে। তেমনই একজন বাংলাদেশের সুরের পাখি সাবিনা ইয়াসমিন।

লতার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর সেই অনুভূতির কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।

লতার সঙ্গে কীভাবে পরিচয় হলো তা জানিয়ে সাবিনা নিউজবাংলাকে বলেন, ‌‌‌‘আমার সঙ্গে ১৯৭৮ সালে (লতার) দেখা হয়েছিল বোম্বেতে। এরপর আর কখনও দেখা হয়নি। সে সময় বাংলাদেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়েছিল ইন্ডিয়াতে। আমি, ববিতা, রাজ্জাক ভাই, রোজি ভাবি, কাজী জহির ভাই আমরা এ কয়জন গিয়েছিলাম।

‘আমরা ইন্ডিয়াতে ৪টি শহরে গিয়েছি সেই সময়। বাংলাদেশের ছবি দেখানো হয়েছে, দিল্লি, বোম্বে, কলকাতা আর মাদ্রাজে। প্রত্যেকটা জায়গাতেই অনুষ্ঠান হতো। গানের শিল্পী তো আমি একাই ছিলাম; গান গাইতাম।’

তিনি বলেন, ‌‘তো বোম্বেতে এসে যখন গান গাইলাম অনুষ্ঠানে, অনুঠান ঠিক না, একটা পার্টি ছিল পার্টিতে। সেখানে ফিল্মের লোকজন ছিল, বড় বড় প্রডিউসার, ডিরেক্টর ছিলেন বোম্বের। অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে বড় বড় অনেক ফিল্ম আর্টিস্টরা ছিলেন। সেখানে শচীন দেব বর্মন ছিলেন। উনি আমাকে বললেন যে, তুই আমাকে একটা দেশের গান শোনা না। আমি বললাম, দেশের গান মানে কী রকম। বলল যে, আমার দেশের বাংলা গান, বাংলা গান, পল্লী গীতি কতদিন শুনি না।

‘আমি বললাম, ঠিক আছে। তখন আমি নাইয়া রে নাইয়া বাদাম তুইলা এই গান গাইলাম। তারপর উনি মাথা নিচু করে গান শুনছিলেন। উনি যখন মাথা উঁচু করলেন, দেখলাম যে উনার দু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। ঝরঝর করে উনি কেঁদে ফেলেছেন। তারপর উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক অনেক আশীর্বাদ করলেন।’

সাবিনা ইয়াসমিন বলতে থাকেন, ‌‘তারপর আরেকটা গান করতে যখন বসলাম। কিছুই ছিল না; শুধু হারমোনিয়ামে গান হচ্ছিল। হঠাৎ দেখি কী, দূরে থেকে লতা মঙ্গেশকর ঢুকছেন, আমি তো সঙ্গে সঙ্গে হারমোনিয়াম ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে পালিয়ে গেছি। মানে আমি গান গাইতেই পারব না উনার সামনে, কোনো প্রশ্নই উঠে না। আমাকে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না, আমি চুপ করে এক পাশে চলে গেছি। তারপর সবাই যখন এ রকম করছে, তখন আর কী করব, গান তো আমাকে গাইতেই হবে; উপায় নাই। তখন আসলাম আর কী।

‌‘ওখানে এসে উনার সঙ্গে (লতা মঙ্গেশকর) পরিচয় হলাম। কারা যেন পরিচয় করিয়ে দিলেন। তারপর আমি তাকে বললাম আমি আপনার সামনে গান গাইব না। উনি বললেন আরে গাও তুমি, আমার সামনে গাইবে না কেন। তারপর যাই হোক উনার সামনে ভয়ে ভয়ে গান গাইলাম। জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো গানটা শুনালাম। উনি এত প্রশংসা করলেন আমার গলার, এত প্রশংসা করলেন এবং আমার গায়কী। উনি বললেন, তুমি এত সুন্দর করে গাও, তোমার গায়কী তো অদ্ভুত সুন্দর। উনি অসম্ভব প্রশংসা করেছিলেন। তখন আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না। খুবই লজ্জা লাগছিল উনার সামনে আমি গাইছি, আমি ভাবতেই পারছিলাম না। এত সৌভাগ্য যে।’

সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‌‘উনি (লতা মঙ্গেশকর) নিজে থেকেই বললেন, বাংলা গান আমার খুব ভালো, আমার গাইতে খুব ভালো লাগে। বাংলা ভাষা আমার কাছে ভীষণ মিষ্টি লাগে। এসব বলেছিলেন আর কী। তারপরও অনেক গল্প হলো। জানালেন, উনারা বাংলাদেশে একবার এসেছিলেন, ১৯৭১ সালের পর। আমি বললাম হ্যাঁ আমি জানি, তখন তো আপনাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এটুকু তার সঙ্গে আমার মধুর স্মৃতি।

এর মধ্যে শচীন দেব বর্মন আবার উঠে এসে দুজনকে দুই দিকে ধরে বললেন যে, আমি দুই দেশের দুই লতার সঙ্গে এখন ছবি তুলব। এরপর আমাদের সঙ্গে ছবি তুললেন।’

এ বিভাগের আরো খবর