অনন্ত জলিলের সিনেমা মানেই বড় আয়োজন, বড় ধামাকা। সম্প্রতি শুরু হয়েছে তার নতুন সিনেমা নেত্রী: দ্য লিডার-এর কাজ। শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন অনন্ত-বর্ষা ছাড়াও ভারতের গজনি খ্যাত ভিলেন প্রদীপ রাওয়াত। সাভারের ধল্লাতে এর শুটিং চলবে আরও কিছুদিন। কেমন হচ্ছে শুটিং? স্পটে সরেজমিনে ছিল নিউজবাংলা।
সাভারের ধল্লার যে জায়গাটিতে সিনেমার শুটিং হচ্ছে, সেটি ইটের দেয়াল তোলা একটি খালি জায়গা। ওখানেই অনন্ত জলিল বৃদ্ধাশ্রম করবেন বলে জানা গেল শুটিং দেখতে আশা মানুষজনের কাছ থেকে।
সেই স্পটে ঢুকেই দেখা গেল, অনেক মানুষ এবং সবার মধ্যমণি অনন্ত জলিল। সবার দৃষ্টি তার দিকে, এমনকি ক্যামেরাও। আর অনন্ত কী করছেন? অনন্ত একটি উল্টে থাকা গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়িটির সামনের অংশে আগুন জ্বলছে।
অনন্তকে দেখে বোঝা যাচ্ছে সেই আগুনের তাপ এসে লাগছে তার গালে। কিন্তু কিছু করার নেই। আঁচটা সহ্য করেই ক্যামেরায় তাকালেন তিনি।
দৃশ্যটি এমন- কিছু বদ লোক এসে অনন্তকে আক্রমণ করবে। যারা আক্রমণ করবে তাদের অনেকবার করে বোঝানো হলো কেমন হবে মার খাওয়ার পর তার এক্সপ্রেশন।
অন্যদিকে অনন্তকে বোঝানো হলো, তিনি কীভাবে ঘুসিটা মারবেন বদ লোকটার পেটে।
এসব বোঝাতে বোঝাতে গাড়িতে লাগিয়ে দেয়া আগুন নিভে গেছে। আবারও লাগানো হলো আগুন। সবাই রেডি, বদ লোকটা অনন্তকে মারতে এলেন কিন্তু অনন্তর ঘুসিতে তিনি পরাস্ত হলেন এবং তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এলো… দৃশ্য নেয়া শেষ।
দৃশ্যের শেষে অনন্ত জড়িয়ে ধরলেন যাকে তিনি ঘুসি মেরেছেন। কারণ শুটিংয়ের সময় ঘুসিটা হয়তো একটু জোরেই দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেটা ভেবেই সহশিল্পীকে সেই ভালোবাসা দেখালেন অনন্ত।
অন্যদিকে যারা শুটিং দেখছিলেন, তারা সবাই হাততালি দিয়ে শিল্পীদের সাধুবাদ জানালেন।
যারা শুটিং দেখতে এসেছেন তাদের মধ্যে কিছু স্থানীয় এবং কিছু অনন্ত জলিলের কারখানার কর্মী। স্থানীয়রা জানালেন, এবারই তারা প্রথম শুটিং দেখছেন। আর কর্মীরা জানালেন, তারা এর আগেও তাদের চেয়ারম্যান স্যারের শুটিং দেখেছেন। সবাই অনন্ত জলিলের প্রশংসাই করলেন।
অ্যাকশন দৃশ্যটি শেষ হলেই অনন্ত সবাইকে দুপুরের খাবারের জন্য বিরতি দেন। শিল্পী-কলাকুশলীদের পাশাপাশি যারা শুটিং দেখতে এসেছেন বা শুটিংয়ের অংশ হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের জন্যও ছিল দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা।
যারা সাধারণ জনগণ হিসেবে শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন তাদের দেয়া হয়েছিল টোকেন। সেই টোকেন দেখিয়ে দুপুরের খাবার সংগ্রহ করেন তারা।
প্রদীপ রাওয়াত ও সহশিল্পীদের শুটিং। ছবি: নিউজবাংলাদুপুরের খাবার পর্ব শেষে আবার শুরু হয় শুটিং। এবার অংশ নেন প্রদীপ রাওয়াত। তিনি বরাবরই মন্দ লোকের চরিত্রে অভিনয় করেন। দৃশ্যের জন্য তার মেকআপটা ছিল রক্তমাখা।
না, শুটিংয়ে তার মুখ কেটে যায়নি, মেকআপের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে তিনি মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন। দৃশ্যের জন্য পরে ছিলেন অনেক ভালো পোশাক কিন্তু শুটিং করতে হলো ধুলোবালি মাখিয়ে।
দৃশ্যটিতে দেখান হচ্ছিল যে, তিনি মার খেয়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন, আবার উঠছেন, আবার মার খাচ্ছেন।
অনন্ত-প্রদীপকে দেখা গেলেও শুটিংয়ে বর্ষাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অথচ এই সিনেমায় বর্ষার চরিত্রটাই মুখ্য। সিনেমায় বর্ষা একজন নেত্রী এবং তার দেহরক্ষী হলেন অনন্ত।
শুটিংয়ে কাজী হায়াত, বর্ষা, লাবিবা ও অনন্ত। ছবি: নিউজবাংলাএকেবারে হতাশ করেননি বর্ষা। অল্প সময়ের শুটিংয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ক্যামেরার সমানে। সে সময় আরও ছিলেন কাজী হায়াত এবং শিশুশিল্পী লাবিবা। অল্প সময়েই শেষ হয় সেই দৃশ্য।
এরপর আবার অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং শুরু হয় এবং চলে অন্ধকার না হওয়া পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে নেত্রী দ্য লিডার সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। ছবি: নিউজবাংলাসিনেমাটিতে ক্যামেরার পেছনে প্রায় সবাই কাজ করছেন ভারতের কলাকুশলীরা। সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিনেমাটির সংশ্লিষ্ট অনেকেই।